• লা লিগা
  • " />

     

    মেসির হ্যাটট্রিকের রাতে বার্সার রেকর্ড

    মেসির হ্যাটট্রিকের রাতে বার্সার রেকর্ড    

    গত মৌসুমে ক্যাম্প ন্যুতে এই লেগানেসকে হারাতে রীতিমত গলদঘর্ম হয়েছিল বার্সেলোনার। অন্তিম মুহূর্তে লিওনেল মেসির পেনাল্টিতে জয় ছিনিয়ে এনেছিল কাতালানরা। এবার অবশ্য মাদ্রিদের দলটিকে হারাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি বার্সার। গতবারের মত এবারও লেগানেসের মূল হন্তারক 'এলএম১০'। মেসির হ্যাটট্রিকে লেগানেসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বার্সা। সেই সাথে ১৯৮০ সালে রিয়াল সোসিয়াদাদের লা লিগায় টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ডেও (৩৮) ভাগ বসাল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল।

     

     

    লা লিগায় এক মৌসুমে বার্সার অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছিলেন আগেই। আজ সোসিয়াদাদের সেই রেকর্ডে ভাগ বসানোর কথা মাথায় থাকলেও এই সপ্তাহে রোমার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় লেগের কথা চিন্তা করে দলে বেশ কয়েকটা পরিবর্তন এনেছিলেন ভালভার্দে। স্যামুয়েল উমতিতি, জর্দি আলবা এবং আন্দ্রেস ইনিয়েস্তারা ছিলেন বেঞ্চে। মূল একাদশে দীর্ঘদিন পর জায়গা পেয়েছিলেন আন্দ্রে গোমেজ। উসমান ডেম্বেলে, ফিলিপ কুতিনিয়ো, লুইস সুয়ারেজ এবং মেসি- শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক বার্সাকে সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছিল লেগানেসকে। তবে প্রথমার্ধেই লেগানেসের বড় ব্যবধানে পিছিয়ে না পড়ার মূল কৃতিত্ব অবশ্যই গোলরক্ষক পিচু কুইয়ারের। ১৬ মিনিটে কুতিনিয়োর দূরপাল্লার আগুনে শট এবং ২০ মিনিটে গোলের গজ তিনেক দূর থেকে সুয়ারেজের শট অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়ে দেন তিনি। সুয়ারেজ, কুতিনিয়োকে খালি হাতে ফেরালেও মেসিকে আর দমিয়ে রাখতে পারেননি কুইয়ার। ২৭ মিনিটে ডিবক্সের ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক ফ্রিকিকে দলকে লিড এনে দেন মেসি। লিগে এই মৌসুমে ফ্রিকিক থেকে এটি ছিল মেসির ছয় নম্বর গোল, যা এক মৌসুমে লা লিগার ইতিহাসে যৌথ সর্বোচ্চ (রোনালদিনহো, ২০০৬-০৭)। দলকে লিড এনে দেওয়ার মিনিট পাঁচেক পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসিই। কুতিনিয়োর সুযোগসন্ধানী থ্রু পাস থেকে বাঁপায়ের প্লেসিং শটে কুইয়ারকে পরাস্ত করেন 'লা পুলগা'।

     

     

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছিল বার্সা। বল দখল, গোলের একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও ব্যবধানটা আর বাড়ান হয়নি তাদের। ৫৯ মিনিটে গোলের মাত্র গজ পাঁচেক দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে। গোলমুখে বার্সার মিসের মহড়ার সুযোগে ৬৮ মিনিটে ম্যাচে ফেরে লেগানেস। উইঙ্গার ডার্কো ব্রাসানাচের পাস থেকে ডিবক্সে বল পান নাবিল এল-ঝার। ডানপায়ের জোরাল শটে মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাস্ত করেন এল ঝার। গোলশোধের পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে লেগানেস। ওদিকে বার্সার রক্ষণভাগকেও কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছিল। মাত্র এক গোলের লিডে থাকায় এবং আক্রমণাত্মক লেগানেসের কথা চিন্তা করে রক্ষণে সার্জি রবার্তোকে উঠিয়ে আলবাকে নামিয়ে দেন ভালভার্দে। কিন্তু দুশ্চিন্তা যেন কিছুতেই কমছিল না তার। বারবার ঘড়ির দিকে তাকানো ভালভার্দেকে দেখে মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হলেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন তিনি। ৮০ মিনিটে প্রতি আক্রমণে বার্সার জয় নিশ্চিত করা এবং ভালভার্দেকে চিন্তামুক্ত করার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু প্রথমার্ধের মত এবারও লক্ষ্যভচেদে ব্যর্থ হন 'এল পিস্তোলেরো'। ভালভার্দেকে নির্ভার করার দায়িত্বটাও যেন শেষদিকে নিজ কাঁধেই তুলে নেন মেসি। ৮৭ মিনিফে ডেম্বেলের পাস থেকে বাঁপায়ের আলতো চিপে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এই আর্জেন্টাইন। শেষ পর্যন্ত মেসির হ্যাটট্রিকেই পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা।