ভ্যালেন্সিয়াকে হারিয়ে বার্সার নতুন রেকর্ড
স্প্যানিশ লিগে একটানা অপরাজিত থাকার রেকর্ড এতোদিন ছিল রিয়াল সোসিয়েদাদের দখলে। ৩৮ বছর পুরোনো সেই রেকর্ড আজ ভেঙেছে বার্সেলোনা। ন্যু ক্যাম্পে ভ্যালেন্সিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা ৩৯ এ নিয়ে গেছে তারা। গত বছর এপ্রিলে সবশেষ বার্সা হেরেছিল মালাগার কাছে।
ন্যু ক্যাম্পে খেলার ১৫ মিনিটেই বার্সাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ। প্রথমার্ধে ওই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বার্সা। কিন্তু ঘরের মাঠে এগিয়ে থেকেও স্বস্তি ছিল না ন্যু ক্যাম্পে। প্রথমার্ধে বার্সার চেয়ে আক্রমণে বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল ভ্যালেন্সিয়াই। গন্সালো গুইদেস একাই পেয়েছিলেন গোল করার বেশ কয়েকটি সুযোগ। প্রথম দুইবার গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানের কাছে হেরেছিলেন, পরেরবার তার শট জর্দি আলবার গায়ে লেগে একটুর জন্য চলে যায় বাইরে দিয়ে। বেশ কয়েকটি সেভ করলেও টের স্টেগান একটা বড়সড় ভুলও করে বসেছিলেন। নিজেদের অর্ধে ভ্যালন্সিয়ার পায়ে বল দিয়ে বিপদ ডেকে এনেছিলেন। তবে রদ্রিগোর শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়ে নিজের ভুল নিজেই শুধরে নেন।
টের স্টেগানের মতো ভুল শুধরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন রদ্রিগোও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে এবার এগিয়ে আসা টের স্টেগানকে ঠিকই ফাঁকি দিতে পেরেছিলেন, কিন্তু গোললাইন থেকে জেরার্ড পিকে বল ক্লিয়ার করে আর গোল পেতে দেননি রদ্রিগোকে। এর কিছুক্ষণ পরই কর্নার থেকে হেডে গোল করে স্যামুয়েল উমতিতি স্বস্তির দুই গোলের লিড এনে দেন দলকে। প্রথম গোলটা সুয়ারেজ করেছিলেন ফিলিপ কুতিনিয়োর পাসে, পরের গোলেও কর্নারটা নিয়েছিলেন তিনিই। দুই গোলেই অবদান করে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার শেষ পর্যন্ত হয়েছেন ম্যান অফ দা ম্যাচও।
পুরো ম্যাচে লিওনেল মেসি ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই। প্রথমার্ধে দুইবার হেড করেছিলেন, পরের অর্ধেও কয়েকবার শট নিয়েছিলেন ভালো জায়গা থেকে। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেননি ভ্যালেন্সিয়ার জন্য। দুই গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় নিজে একটা ভলি করেছিলেন ডিবক্সের বাইরে থেকে, সেটা চলে গেছে বাইরে দিয়ে। পরে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে বল বানিয়ে দিয়েছিলেন, ইনিয়েস্তাও বাঁ পায়ে ভলি করেছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষকের দারুণ সেভে আর বারবার দেখার মতো একটা গোলে পরিণত হয়নি ইনিয়েস্তার ভলি। ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক নেটো অবশ্য এটা বাদেও আরও একবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বার্সা আর গোলের মাঝে। শেষদিকে ডেনিস সুয়ারেজের শট পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ঠেকিয়ে দিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন দলকে।
নেটোর ওই সেভের আগেই অবশ্য তার দল এক গোল শোধ দিয়ে বার্সাকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। বদলি খেলোয়াড় উসমান ডেম্বেলে নিজেদের ডিবক্সের ভেতর ফাউল করে বসেছিলেন গায়াকে। ৮৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ড্যানিয়েল পারেহো গোল করে দলকে ফিরিয়ে এনেছিলেন ম্যাচে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য হাফ ছেড়েই বেঁচেছে বার্সা, গত সপ্তাহে রোমার মাঠের মতো দুর্যোগ আর আজ পোহাতে হয়নি তাদের।
দুইয়ে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে এক ম্যাচে বেশি খেলে ১৪ পয়েন্ট এগিয়ে আছে এর্নেস্তো ভালভার্দের দল।