৩২ বছর পর অস্ট্রিয়ার কাছে হারলো জার্মানি
প্রীতি ম্যাচ, জার্মান কোচ জোয়াকিম লোয়ের জন্য ম্যাচটা ছিল পরীক্ষামূলকও। বিশ্বকাপের জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দল ঘোষণার আগে শেষবারের মতো বাজিয়ে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন লো। সেই ম্যাচেই শুরুতে এগিয়ে গিয়েও হেরে গেছে জার্মানি। বিশ্বকাপে বরাবরই জার্মানি পাওয়ারহাউজ, প্রীতি ম্যাচের ফলে হয়ত যায় আসে না তেমন কিছুই। কিন্তু অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে হারটা এসেছে ৩২ বছর পর! জার্মানির মতো বিশ্বকাপে খেলা হচ্ছে না অস্ট্রিয়ার। ২-১ গোলের হারটা বিশ্বকাপের আগে তাই খানিকটা চিন্তায়ই ফেলে দিল জার্মানদের।
প্রীতি ম্যাচ হলেও প্রতিবেশির বিপক্ষে জয়টা অস্ট্রিয়ার জন্য বিশাল কিছুই। ঘরের ভোর্থসিস্টাডিওনের খেলোয়াড়দের সঙ্গে দর্শকদের শরীরী ভাষাও সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছিল শুরু থেকেই। শুরুতেই গোল হজম করেও তাই দমে যায়নি অস্ট্রিয়ার প্রতিরোধ। ১১ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলে অবশ্য গোলরক্ষকের দায়টাই ছিল বেশি। মাত্র দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা জর্জ সিয়েবেনহান্দি নিজের ডিবক্সের ভেতরই বল পজেশন দিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষকে। পরে সেখান থেকে দারুণ এক ফিনিশে গোল করেন মেসুত ওজিল।
প্রথমার্ধে এরপর অবশ্য লিড বাড়িয়ে নেওয়ার একাধিক সুযোগ পেয়েছিল লোয়ের দল। জুলিয়ান ব্রান্দত অবশ্য হতাশই করেছেন, দুইবার ভালো সুযোগ পেয়েও অস্ট্রিয়া গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারেননি। আর প্রথমার্ধে লড়াই চালিয়ে গেলেও অস্ট্রিয়াও ব্যর্থ ছিল নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরিতে। কিন্তু এই গল্পটাই দ্বিতীয়ার্ধে গেল বদলে। কর্নার থেকে মার্টিন হিনট্রেগারের ভলি জালে জড়ালে ৫৩ মিনিটে সমতায় ফেরে অস্ট্রিয়া।
সেপ্টেম্বরের পর আজই প্রথম মাঠে নেমেছিলেন ম্যানুয়েল নয়্যার। জার্মান গোলরক্ষককে প্রথমার্ধ করতে হয়েছিল কিছু নিয়মমাফিক সেভ। দ্বিতীয়ার্ধে তিনি বাধা হয়ে না দাঁড়ালে জার্মানদের হারের ব্যবধানটা বাড়তে পারত আরও। ম্যাচ থেকে জার্মানির পাওনাই ওই একটাই, নয়্যারের দলের ফেরা। ৫৬ মিনিটে মার্কো আর্নাতুভিচকে ওয়ান অন ওয়ানে ঠেকিয়ে দিয়ে তিনিও জানান দিয়েছেন প্রস্তুত হয়েই আছেন বিশ্বকাপের জন্য। নিশ্চিত গোল ফিরিয়েও অবশ্য দলের হার এড়াতে পারেননি জার্মান গোলরক্ষক।
সমতায় ফেরার পর অস্ট্রিয়ার আক্রমণের ঢেউ বারবার আছড়ে পড়েছে জার্মান রক্ষণে। জার্মানদের চাপে রেখেই ম্যাচে লিড নেয় অস্ট্রিয়ায়। সম্ভবত গোলটা প্রাপ্যও ছিল তাদের। পুরো ম্যাচে ডেভিড আলাবা, আর্নাতুভিচদের সঙ্গে আলেসান্দ্রো শয়েফ। ৬৯ মিনিটে অস্ট্রিয়াকে এগিয়ে দেওয়ার গোলটা করেছেন শয়েফ, অ্যাসিস্ট স্টেফান লাইনারের কিন্তু সাজানো আক্রমণে কৃতিত্ব ছিল পুরো আক্রমণভাগেরই।
দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রিয়ার আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত জার্মানি আক্রমণেই যেতে পারেনি তেমন। দ্বিতীয় গোল হজম করার পর লো বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন দলে। দুই বদলি মিলে দলকে ম্যাচেও ফিরিয়ে আনছিলেন প্রায়। কিন্তু মার্কো রয়েসের বাড়ানো বলে হেডটা ভালোমতো করতে পারেননি টিমো ভার্নার। এই একটি ছাড়া দ্বিতীয়ার্ধে সাদামাটাই ছিল জার্মানদের আক্রমণভাগ।
জার্মানরা হেরে গেলেও এর আগে আরেক প্রীতি ম্যাচে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। গ্যারেথ সাউথগেটের দলের প্রতিপক্ষ ছিল নাইজেরিয়া। দুই দলই খেলছে বিশ্বকাপে। প্রীতি ম্যাচ থেকে দুই দলই পেয়েছে আশার সঞ্চার। হ্যারি কেইনের গোল আর প্রথমার্ধে ইংলিশদের পারফরম্যান্স ইংলিশদের জন্য আশাজাগানিয়াই ছিল। আর ২-১ গোলে হারলেও নাইজেরিয়াও দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরেছিল ভালোভাবেই, চাইলে এই ম্যাচ থেকে স্বস্তি খুঁজতে পারে তারাও।