রেকর্ড গড়েই ইংল্যান্ডকে হারাল স্কটল্যান্ড
স্কটল্যান্ড ৩৭১/৫, ৫০ ওভার (কোয়েটজার ১৪০*)
ইংল্যান্ড ৪৮.৫ ওভারে ৩৬৫ (বেইরস্টো ১০৫)
ফল: স্কটল্যান্ড ৬ রানে জয়ী
শেষ দুই ওভারে দরকার ১১ রান, ইংল্যান্ডের হাতে আছে ২ উইকেট। তবে ক্রিজে আছেন লিয়াম প্লাঙ্কেট, শেষ বলে ছয় মেরে ম্যাচ বাঁচানোর কীর্তি আছে যার। আদিল রশিদও জানেন ব্যাট করতে। কিন্তু খেলাটা যে ক্রিকেট! শরিফের ওই ওভারের প্রথম বলেই রান আউট হয়ে গেলেন রশিদ, ক্রিজে শেষ ব্যাটসম্যান উড। পরের তিন বলে হলো তিন রান, পঞ্চম বলে আবার স্ট্রাইকে উড। শরিফের বলে হলেন এলবিডব্লু, ইতিহাস গড়ল স্কটল্যান্ড। ইংল্যান্ডকে ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো হারাল স্কটল্যান্ড।
আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শেষ মুহূর্তের স্বপ্নভঙ্গে বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল স্কটিশদের। তবে আজ ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দলকে এভাবে হারিয়ে দেবে, সেটা বোধ হয় কারও কল্পনাতেও ছিল না। ৩৭১ রান তাড়া করে জেতাটা অসম্ভব না হোক, ভীষণ কঠিন তো বটেই। কিন্তু জনি বেইরস্টো যেভাবে শুরু করেছিলেন, সেই কঠিন কাজটাও তারা সহজে করে ফেলবে মনে হচ্ছিল। ১১ ওভারের মধ্যেই ১২০ রান পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড, বেইরস্টো পেয়ে যান ইংল্যান্ডের হয়ে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। কিন্তু তাঁর ১০৫ রানের পরেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। তবে প্লাঙ্কেট জয়টা এনে দেবেন বলেই মনে হচ্ছিল। তবে ৪৭ রানে অপরাজিত থেকেই দেখতে হয়েছে দলের পরাজয়।
তার আগে এডিনবরায় প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩৭১ রান করেছে স্কটল্যান্ড, পূর্ণ সদস্যের বিপক্ষে যা কোনও সহযোগী দেশের সর্বোচ্চ স্কোর। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে কোনও জুটিতে সর্বোচ্চ রান হয়েছে এ ম্যাচে, যে রেকর্ড আবার এই ম্যাচেই ভেঙেছে দুইবার। যে কোনও পূর্ণ সদস্যের বিপক্ষে স্কটল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্কোরও এটি। ইংল্যান্ড বোলাররা যেন ছিলেন এদিন রান-প্রসবা।
ম্যাথু ক্রস ও কাইল কোয়েটজার মিলে শুরুটা করেছিলেন টর্নেডো-স্টাইলে। ১৩.৪ ওভারে ১০৩ রান তুলে ভেঙেছে সে জুটি, যা ভেঙেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্কটল্যান্ডের আগের সর্বোচ্চ ৮৬ রানের জুটি, ২০১০ সালে যা গড়েছিলেন গেভিন হ্যামিল্টন ও কাইল কোয়েটজার। জর্জ মানসি ও ক্যালাম ম্যাকলয়েড চতুর্থ উইকেটে ১০৭ রান তুলে ভেঙেছেন সেই রেকর্ডই।
ম্যাকলিয়ড ইনিংস শেষ করেছেন ৯৪ বলে ১৪০ রানে অপরাজিত থেকে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্কটল্যান্ডের এর আগের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ছিল কোয়েটজারের ৭১, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে।
এত এত রানের পেছনে অবশ্য একটা কারণও আছে। স্কাইয়ের টিভি ক্যামেরা বসাতে ছোট করতে হয়েছে বাউন্ডারি, স্কটিশ ব্যাটসম্যানরা সে সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন ভালোভাবেই। কাজে লাগাচ্ছিলেন বেইরস্টোও, কিন্তু দিনটা যে ছিল স্কটল্যান্ডের। সীমানা যখন আকাশছোঁয়া, দড়ি কমিয়ে কি তা আটকে রাখা যায়?