• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    পরিবারের ২৭ জনকে নিয়ে বিশ্বকাপে!

    পরিবারের ২৭ জনকে নিয়ে বিশ্বকাপে!    

    ছবি-ডেইলি মেইল

     

    বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে খেলবেন, আর সেখানে সমর্থন জানাতে থাকবেন না আপনার পরিবার, সেটা কি হয়? তা পরিবারের কতজনকেই বা নিজের সাথে নেবেন? মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান; খুব বেশি হলে ভাইবোন। খরচেরও একটা ব্যাপার আছে তাইনা? অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক ম্যাথু রায়ান অবশ্য এত হিসাবের ধার ধারেননি। রাশিয়াতে নিজের সাথে নিয়ে এসেছে পরিবারের ২৭ জন সদস্যকেই!

    ২৭ জন! যেখানে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দল খেলতে এসেছে ২৩ জনের স্কোয়াড নিয়ে, রায়ানের পরিবারের ২৭ জনকে নিয়ে আসার ব্যাপারটা তো রীতিমত চোখ কপালের তোলার মতোই। তার পরিবারই দখল করে রেখেছে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাম্পের পাশের হোটেলের প্রায় অর্ধেকটা। যেখানেই যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াড, দল বেধে তারাও যাচ্ছেন সেখানে। কিন্তু এতজনকে নিজের সাথে নিয়ে আসার পেছনে কারণটা কী?

     

     

    রায়ান জানিয়েছেন, ২০০৬ বিশ্বকাপের কিছু স্মৃতিই তাকে এই কাজ করতে উৎসাহিত করেছে। সেবার জাপানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ও ক্রোয়েশিয়ার সাথে ড্র করে শেষ ১৬তে পৌঁছে যায় সকারুরা। মাত্র ১৪ বছর বয়সে রায়ান দেশের সেই সাফল্য দেখেছিলেন মাঠে বসেই। দলের জয়ে পরিবারের সদস্যদের বাঁধভাঙ্গা উল্লাসেই মনস্থির করেছিলেন, একদিন নিজেও বিশ্বকাপে খেলবেন, সমর্থন জানাতে নিয়ে আসবেন পরিবারের সবাইকেও।

     

    বিশ্বকাপ খেলেছেন ৪ বছর আগেও। কিন্তু অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে সেই স্বপ্নটা পূরণ করতে পারেননি। দ্বিতীয়বারের মতো যখন অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াডে ডাক পেলেন, এবার আর হাতছাড়া করেননি সুযোগটা। তিন বছরের ভাগ্নি থেকে ৭০ বছরের দাদি, রায়ানকে সমর্থন জানাতে রাশিয়া এসেছেন পরিবারের মোট ২৭ জন। ফ্রান্স ও ডেনমার্কের বিপক্ষে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন সবাই। বুড়ো দাদিও সবার সাথে তাল মিলিয়ে স্লোগান দিয়েছেন রায়ানের পক্ষে।

    গতবার শুধু মা ও বোনকে নিয়ে গিয়েছিলেন ব্রাজিলে। রাশিয়াতে ২৭ জনের খরচটা বহন করতে হচ্ছে তাঁকেই। এখন পর্যন্ত জনপ্রতি খরচ পড়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকারও বেশি! রায়ানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জমানো সব টাকাই প্রায় ফুরিয়ে গেছে। তবে টাকা ফুরালেও কোনো আফসোস নেই তার, ‘বিশ্বকাপ তো আর প্রতিদিন আসে না! জীবনে অনেক টাকা কামাতে পারবো। কিন্তু পরিবারের সবাই গ্যালারিতে বসে আমার খেলা দেখবে, এই অনুভূতিটা আসলে টাকার কাছে কিছুই না। আমি ভাগ্যবান, আমার পরিবার আমাকে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেখতে পারছে।’

    অস্ট্রেলিয়া দল যতদিন রাশিয়াতে থাকবে, রায়ানের পরিবারও ততদিন থাকবে। আজ পেরুর বিপক্ষে জিতলেই হয়ত দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে অস্ট্রেলিয়া। সকারুদের গোলপোস্ট সামলানোর দায়িত্ব থাকবে রায়ানের কাঁধেই। যদি তারা পরের রাউন্ডে উঠেই যায়, রায়ানের খরচের পরিমাণটা বাড়বে আরও কয়েকগুণ।

    রায়ান মনে মনে নিশ্চিতভাবেই ভাবছেন, পরিবারের জন্য টাকা খরচের সুযোগটা যেন আরও বেশ কিছুদিন পাওয়া যায়!

    সূত্র- দ্যা টেলিগ্রাফ