থাইল্যান্ডের জন্য প্রার্থনা: উদ্ধার হলেন চার কিশোর ফুটবলার
পৃথিবীর সমস্ত প্রার্থনা, সব শুভকামনা আজ তাদের প্রয়োজন হবে। ১২ কিশোর ও তাদের ফুটবল কোচের জন্য আজ শুধু থাইল্যান্ড নয়, পৃথিবীজুড়ে সব মানুষ প্রার্থনা করবেন। ১৫ দিন ধরে থাইল্যান্ডের এক গুহায় আটকে পড়ে আছে কিশোর ফুটবলাররা। একটা সময় যখন ধরেই নেওয়া হয়েছিল তাদের কেউ আর জীবিত নেই, তখনই খোঁজ পাওয়া গেছে তাদের। কিন্তু থাম লুয়াং গুহার ঢোকার সেই পথ এতোটাই কঠিন, কাল পর্যন্ত অভিযান শুরু করা যায়নি। বিসিবি, গার্ডিয়ান বলছে আজ সেই অভিযান শুরু হয়েছে। আজ চার জন কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স, এর মধ্যে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়েও যাওয়া হয়েছে।
গত মাসের ২৩ জুন ফুটবল অনুশীলনের পরে পিকনিক করতে গিয়েছিল ওই গুহায়। স্থানীয় বলে এলাকাটা সবাই ভালোমতোই চিনত, কিন্তু আবহাওয়াটা বাঁধ সেঁধে বসল। বানের পানি ঢুকে গুহা থেকে বেরিয়ে আসার পথ রুদ্ধ হয়ে গেল, আটকে পড়ল সেখানে। প্রথম দুই সপ্তাহ কোনো খোঁজই পাওয়া যায়নি তাদের, কিন্তু উদ্ধারকারীরা আশা ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে পাওয়া যায় তাদের, জানা যায় সব কিশোররা সুস্থই আছে।
ছবি: বিবিসি
এরপরেই দেখা দেয় নতুন জটিলতা। গুহাটা এতোটাই দুর্গম, তার ওপর বৃষ্টিতে অনেক জায়গাই তলিয়ে গেছে। ডুবুরি দেওয়া বের করে দেওয়া যাবে সেটাও সম্ভব না। কারণ কিছু কিছু জায়গা এমনই সরু, সেখানে ডুবুরিদের এয়ার ট্যাঙ্ক খুলে ফেলতে হয়। আবার ডুব সাঁতার দিয়েও বের করা সম্ভব নয়, কারণ কিশোরদের কেউই সাঁতার জানে না।
এদিকে সময়টাও পক্ষে নেই। বর্ষা মৌসুম চলছে, এর মধ্যে আছে অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস। সেটা শুরু হয়ে গেলে পানি ঢুকে পুরো জায়গাটা পুরোপুরি তলিয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সবার সলিল সমাধি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যা করার করতে হতো তাড়াতাড়ি। দুই দিন আগে থেকেই তাই অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নেয়। এর মধ্যে ঘটে যায় আরেকটা ট্র্যাজেডি। কিশোরদের অক্সিজেন দিয়ে ফেরার পথে মারা যান থাই নেভির সাবেক এক ডুবুরি। কাজটা কতটা কঠিন, সেটা বোঝা হয়ে যায় আরও একবার।
দুই দিন ধরেই তাই গুহার আশেপাশে বেশ অনেকগুলো গর্ত খনন করা হয়েছে। আজ সকাল থেকেই অভিযান শুরুর হয়েছে, যেটিকে বলা হচ্ছে ‘ডি-ডে’। পরিকল্পনা হচ্ছে, ১৮ জুন ডুবুরি মিলে কিশোরদের উদ্ধার করে আনবে।
আশার কথা, এখন পর্যন্ত সব কিশোর সুস্থ আছে। অবিশ্বাস্যভাবে কেউ মনোবল হারিয়ে ফেলেনি, সবাই আছে হাসিমুখে। সবাই সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে, আবার ফুটবলে মেতে উঠবে- এই প্রার্থনাতেই এখন বুক বাঁধছে পুরো বিশ্ব।