• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল: যে তিন প্রশ্নের উত্তর চাই

    ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল: যে তিন প্রশ্নের উত্তর চাই    

    কাগজে কলমে ফ্রান্স ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে অনেক দিক দিয়েই এগিয়ে। সম্ভবত ফ্রান্সকে বেশি কঠিন পথও পাড়ি দিতে হয়েছে। তবে খেলাটা তো কাগজে কলমে হয় না, হয় মাঠে। কৌশলগত কিছু প্রশ্নই ঠিক করে দিতে পারে, বিশ্বকাপ শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠবে।
     

     

    এমবাপ্পেকে আটকাবে কীভাবে?

    ১৯ বছর বয়সেই এই বিশ্বকাপে এমবাপ্পে যেন এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন। ট্রফি নেওয়াটা বাকি থাকলেও শেষের কথাটা আসলে বলেই দেওয়া যায়। ডান প্রান্ত দিয়ে এমবাপ্পে যেভাবে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলছেন, তাতে কাল ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারেন। এখন পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার লেফট ব্যাক ইভান স্ট্রিনিচকে এত দ্রুতগতির কাউকে সামলাতে হয়নি। আর্জেন্টিনা যেমন এমবাপ্পেকে জায়গা দিয়েছিল, পরের দুই ম্যাচে সেভাবে ভেতরে ঢোকার সুযোগ পাননি ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড।

     

     

    তবে ক্রোয়েশিয়ার কোচের জন্য উভয় সংকট, স্ট্রিনিচকে এমবাপ্পেকে আটকাতে গিয়ে আবার পেরিসিচের সঙ্গে বাঁ প্রান্তে আক্রমণের যুগলবন্দি ভেস্তে না যায়। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার ৪৫ শতাংশ আক্রমণ হয়েছে বাঁ প্রান্ত দিয়ে, আর ডান প্রান্ত দিয়ে হয়েছে ৩৩ শতাংশ। পেরিসিচ আর স্ট্রিনিচ  যদি এবারও তা করতে চান, তাহলে এমবাপ্পের অরক্ষিত থেকে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে তুলনামূলক রক্ষণকাজে মনযোগী রেবিচ আর ভারসালকোর ওপর বেশি ভরসা করতে পারে ক্রোয়েশিয়া। আবার ফ্রান্সের আক্রমণ ডান প্রান্ত দিয়েই বেশি হয়। হার্নান্দেজ আর মাতুইদিদের দিক থেকে আক্রমণ হয়েছে ৩৭ শতাংশ, অন্যদিকে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ হয়েছে ৪২ শতাংশ। সেক্ষেত্রে পার্ভাড আগের দুই ম্যাচে যেমন ওপরে ওঠার স্বাধীনতা পেয়েছিলেন, পেরিসিচদের বিপক্ষে কতটা পাবেন সেটাও একটা প্রশ্ন।

     

     

    মধ্যমাঠ কার দখলে?

    এই ম্যাচটা সম্ভবত হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের মধ্যমাঠের সবচেয়ে তীব্র লড়াই। রাকিটিচ-মদ্রিচরা প্রায় সব ম্যাচেই মধ্যমাঠে ছড়ি ঘুরিয়েছেন। কিন্তু ফ্রান্সের কান্তে-পগবারা ডি ব্রুইনদের যেভাবে সামাল দিয়েছেন, তাতে মদ্রিচদের কাজটা অনেক কঠিন হওয়ার কথা। রাশিয়া ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে মধ্যমাঠে প্রচুর জায়গা পেয়েছিলেন মদ্রিচ, ব্রোজোভিচ-রাকিটিচদের ওপর রক্ষণের দায়িত্বটা ছেড়ে দিয়ে আক্রমণে বেশ মনযোগ দিতে পেরেছিলেন। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি পাস, সবচেয়ে বেশি গোল সবই তাঁর। কিন্তু কান্তে আর পগবা এতোটাই সুশৃঙ্খল, মধ্যমাঠে এক বিন্দু জায়গাও সম্ভবত ছেড়ে দেবেন না তারা।

    বেলজিয়ামের ম্যাচেও হ্যাজার্ড-ডি ব্রুইনদের আক্রমণের সামলে বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন দুজন। আর দরকার মতো বাঁ প্রান্ত থেকে নিচে নেমে এসে তাদের সাহায্য করেছেন মাতুইদিও। মদ্রিচকে যদি তারা জায়গা না দেন, তাহলে ক্রোয়েশিয়ার জন্য সুযোগ খুঁজে বের করা বেশ কঠিনই হয়ে যাবে।

     

    বাতাসে রাজত্ব কাদের?

    প্রশ্ন এখানে আসলে দুইটি। এক, লভরেনরা ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডারদের সেট পিস থেকে গোল করা ঠেকাতে পারবেন কি না? দুই, মানজুকিচ বাতাসে উমতিতিদের হারাতে পারবেন কি না। প্রথম প্রশ্নটাই ক্রোয়েশিয়ার জন্য বড় মাথাব্যথা, এই টুর্নামেন্টে যে ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডার ভারান,উমতিতিতা হেড থেকে মহামূল্যবান গোল করে চলছেন। আবার রাশিয়ার সাথে ক্রোয়েশিয়া বাতাসে হজম করেছিল গোল। লভরেন, ভিদাদের কাজটা খুব খুব কঠিন।

    আবার মানজুকিচ বাতাসে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন অনেক বার। ভারসালকো, স্ট্রিনিচের ক্রসগুলো জায়গামতো পড়লে তিনি তক্কে তক্কেই থাকবেন।