• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    লভরেন যখন সবচেয়ে দুর্ভাগা!

    লভরেন যখন সবচেয়ে দুর্ভাগা!    

    এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান যদি রাফায়েল ভারান হন সবচেয়ে দুর্ভাগা ফুটবলার কে?

    মাত্রই একই বছরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর বিশ্বকাপ জেতা একাদশ খেলোয়াড় হলেন ভারান। আর লভরেন? টানা চারটি ফাইনাল হেরে যাওয়ার অনুভূতি কেমন, তা ক্রোয়েশিয়া ডিফেন্ডারের কাছে জানতে চাইতে পারেন। একের পর এক ফাইনালে হার যেন শেলের মতো বিঁধছে তাঁর বুকে। কদিন আগে বলা কথাও কি বিঁধছে না?

    সেমিফাইনালের পর লভরেন একটু অভিমানের সুরেই বলেছিলেন, বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডারের তকমাটা এখন তাঁর পাওনা। একই বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগ আর বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছেন, দাবিটা তিনি করতেই পারেন। কিন্তু লভরেন ভুলে গিয়েছিলেন, ইতিহাস কেবল বিজয়ীদেরই মনে রাখে।

    অবশ্য লভরেনের দুর্ভাগ্যই বটে। লিভারপুলের হয়ে গত বছরের লিগ কাপ থেকে শুরু। এরপর ইউরোপা লিগেও হারতে হলো। লভরেনকে নিয়ে অবশ্য তখনো প্রশ্ন ছিল অনেক। গত বছরেই টটেনহামের সঙ্গে লিগের ম্যাচে এমনই ভুগিয়েছিলেন হ্যারি কেইন, বাধ্য হয়ে তাঁকে ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষের আগেই তুলে নিয়েছিলেন ক্লপ। সেই লভরেন এরপর নিজেকে অনেকটাই ফিরে পেয়েছেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য কাটেনি। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে লিভারপুল রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হারল, লভরেন এবারও পরাজিতের দলে।

     

     

    তবে এই বিশ্বকাপে নিজের পক্ষে যা করা সম্ভব, সবই করেছেন। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভিদার সঙ্গে জুটিতে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ আগলে রেখেছেন। দ্বিতীয় রাউন্ড ও কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে পার হওয়ার পর লভরেনের বড় পরীক্ষা এলো সেমিফাইনালে। প্রতিপক্ষ? সেই কেইন। এবার আর লভরেন ভুল করলেন না। কেইন একরম বোতলবন্দিই হয়ে রইলেন। লভরেন আগের বারের সেই লজ্জা ভুলে যাননি। এবার তাই দাবি করলেন, তাঁকে বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডার বলা উচিত।

     

    কিন্তু দুই ফাইনালে যা করেছেন, এরপর তাঁকে আর সেটা বলা কঠিন। দুই ফাইনাল মিলে মাত্র দুইটি ট্যাকল ঠিকঠাক করতে পেরেছেন, একবার মাত্র বল কেড়ে নিতে পেরেছেন। কে জানে, হয়তো ফাইনালের স্নায়ুচাপ সইতে পারেননি। কে জানে, পরের ফাইনালে হয়তো পারবেন। আপাতত তাঁকে অঁরির কাছে সান্ত্বনা খুঁজতে হবে। কোনো ইংলিশ লিগের হয়ে একই বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগ আর বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের বেদনা যে সর্বশেষ অঁরির ছিল। সেটাও সেই ২০০৬ সালে।

    তবে কোনো সান্ত্বনাই এখন লভরেনের কাছে যথেষ্ট হওয়ার কথা নয়!