বিশ্বকাপের সেরা একাদশ
গোলরক্ষক
থিবো কোর্তোয়া
উগো লরিস, জর্ডান পিকফোর্ড বা ড্যানিয়েল সুবাসিচরা আসতে পারতেন। কিন্তু কোর্তোয়া পরিষ্কারভাবেই ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। গোল্ডেন গ্লাভস তো জিতেছেন, সেটা বাদ দিলেও ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচটাতেই নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ একটা সেভ করেছিলেন। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষেও গুরুত্বপুর্ণ কিছু সেভ করেছিলেন, যদিও দলের ভাগ্য আর বদলাতে পারেননি।
রক্ষণ
কিয়েরান ট্রিপিয়ের
ইংল্যান্ডের হয়ে রাইট উইংব্যাক হিসেবে খেলেছেন। নিঃসন্দেহে রাইটব্যাক হিসেবেও খেলতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়! ক্রোয়েশিয়ার সিমে ভ্রাসালকো প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন, অথবা ফ্রান্সের বেঞ্জামিন পাভার্দকেও রাখা যায়। তবে সুযোগ তৈরি ও অ্যাসিস্টের পরিসংখ্যানে তার ধারে কাছেও নেই কেউ। সেই পরিসংখ্যানে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ট্রিপিয়ের (২৪)। নিখুঁত সেটপিসেও তাকে আলাদা করেছে বাকিদের চেয়ে।
রাফায়েল ভারান
বয়স ২৫, চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, এক লা লিগা তো জিতেছিলেনই, এবার জিতলেন বিশ্বকাপও! ২৫ বছর বয়সেই ডিফেন্ডার হিসেবে যে ঝলক দেখাচ্ছেন, আরও পরিণত হলে হয়ত সবাইকে ছাড়িয়েই যাবেন। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এরিয়াল ডুয়েলেও তার জেতা। গুরুত্বপূর্ণ ট্যাকেলগুলোও করেছেন সময়মতো, ৭ ম্যাচেও তেমন কোনো ভুলই করেননি।
ডিয়েগো গডিন
কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছেন, কিন্তু রক্ষণে ছিলেন দুর্গ হয়ে। গডিন আর হিমেনেজের রক্ষণের জুটিটা বিশ্বকাপের সেরাই বলা যায়। ৫ ম্যাচ খেলেও পঞ্চম সর্বোচ্চ ইন্টারসেপশন গডিনের।
লুকাস হার্নান্দেজ
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ট্যাকেল করা ডিফেন্ডার। লেফটব্যাক হিসেবে একটু বেশিই রক্ষণাত্মক, তবে ফ্রান্সের কৌশল যা ছিল সেটা বাস্তবায়ন করতে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। প্রতি-আক্রমণে ছিলেন দুর্দান্ত।
মিডফিল্ডার
এনগোলো কান্তে
নিঃসন্দেহে বিশ্বকাপের সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি ইন্টারসেপশন তারই। বল যেখানে তিনিও ছিলেন সেখানে, সর্বময়! তবে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভেস্তে দিয়ে ক্ষান্ত দেননি, ড্রিবলিং করে আক্রমণেও বলের যোগান দিয়েছেন। বিশেষ করে বাঁ প্রান্ত দিয়েও ছিলেন দারুণ।
পল পগবা
ফ্রান্সের বাকি মিডফিল্ডারদের সঙ্গে সমঝোতা ছিল দারুণ। বিশ্বকাপে পগবার কাছ থেকে ফ্রান্সের যতটুকু প্রত্যাশা ছিল তার সবটুকুই মিটিয়েছেন। ফাইনালে গোল করে ছাড়িয়ে গেছেন বাকি সবাইকে।
লুকা মদ্রিচ
ইতিহাসের সেরা মিডফিল্ডারদের কাতারে পৌঁছে গেছেন এই বিশ্বকাপ দিয়েই। ক্রোয়েশিয়ার সাফল্যের রূপকার মদ্রিচই। গুরুত্বপূর্ণ গোলও করেছেন। সব কিছুর পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন গোল্ডেন বলটাও।
ফরোয়ার্ড
এডেন হ্যাজার্ড
৩ গোল দুই অ্যাসিস্ট, সবমিলিয়ে মোট ১৩ টি সুযোগ তৈরি করেছেন। হ্যাজার্ডের ড্রিবলিং দুশ্চিন্তার কারণ ছিল বেলজিয়ামের সব প্রতিপক্ষের জন্য।
কিলিয়ান এমবাপ্পে
ফ্রান্সের সাফল্যে বড় অবদান রেখেছেন। ১৯ বছর বয়সেই গোল করেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালেও। মেধা, গতি, ড্রিবলিং, ফিনিশ- সবকিছু মিলিয়ে দারুণ। উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন, কয়দিন পর হয়ত বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পাবেন!
আঁতোয়া গ্রিযমান
ফ্রান্সের হয়ে প্রথম ম্যাচটাই খেলেছিলেন স্ট্রাইকার হিসেবে। এরপর অবশ্য কিছুটা পেছন থেকে শুরু করেছেন প্রতিটি ম্যাচে। দ্বিতীয় রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল, ফাইনাল- সবগুলো ম্যাচেই গোল করেছেন।
কোচ
দালিচ
ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে নিয়ে গিয়েও অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। ম্যান ম্যানেজমেন্ট তো আছেই, ট্যাকটিকালিও দারুণ ছিলেন দালিচ। বিশ্বকাপের আগে তাকে সেভাবে চিনতেন না কেউই, সময় মতোই নিজেকে চিনিয়েছেন।