স্পিনই যখন ভরসা সালমাদের
সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের সঙ্গে অবিশ্বাস্য জয়, এরপর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ জয় আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরে বিশ্বকাপের টিকিট কাটা। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে দেশের মাটিতে সিরিজটাই যেন ধুপ করে মাটিতে নিয়ে এলো সালমাদের। একটি টি-টোয়েন্টিতেও জেতা হয়নি, ওয়ানডে জয়টা সেই হতাশা কমই ভোলাতে পেরেছে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে কোচ, অধিনায়ক, ম্যানেজার সবার মুখে অভিন্ন সুর-স্পিনই হবে বাংলাদেশের মূল শক্তি।
তা গত এক বছরে সেই সামর্থ্যের প্রমাণ ভালোভাবেই দিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। রুমানা আহমেদ সামনে থেকে যে পথ দেখিয়েছেন, তাতে সঙ্গী হয়েছেন নাহিদা, ফাহিমা ও সালমারা। গত এক বছরে স্পিনেই বাংলাদেশ উইকেট নিয়েছে ৮৪টি, তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু ভারতের (৮৫টি)। আর ব্যক্তিগত অর্জন হিসেব করলে গত এক বছরে শীর্ষ ১০ স্পিনারের মধ্যে চার জনই বাংলাদেশের। ২৬ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে আছেন রুমানা আহমেদ, এই সময়ে শুধু ভারতের পুনম যাদবই স্পিনে তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন।
কিন্তু প্রশ্ন চলে আসে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে সেই স্পিন কতটা কার্যকর হবে? বাংলাদেশের মেয়েদের দলের ম্যানেজার নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে করিয়ে দিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা দেখেছি স্পিনারদের ভূমিকা। এরপরে আয়ারল্যান্ডেও দেখেছি। ওইসব কন্ডিশন আমাদের মত না, কিন্তু মেয়েরা সেখানে অনেক ভাল করেছে। তাই আমার মনে হয়না যে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওরা এটা করতে পারবেনা। সবসময় উইকেটের বিষয়টি তো আসে না আসলে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বেশ কিছু ক্রিকেটারের স্পিন খেলার দুর্বলতা আছে। আর আমাদের দলে বেশ কয়েকজন জেনুইন স্পিন উইকেট টেকার আছে। এটা আমরা ভারত বা পাকিস্তানের বিপক্ষেও দেখেছি এশিয়া কাপে। ’
রুমানা, নাহিদারা তো আছেন, ওয়ানডেতে খাদিজা তুল কুবরাও স্পিনে দেখিয়েছেন ভেলকি। নাজমুল আবেদীন আলাদা করে বললেন তাঁদের কথাও, ‘কুবরা আছে, রুমানা আছে, আমাদের নাহিদা আছে, এশিয়া কাপে সে আমাদের মূল প্লেয়ার ছিল। ফাহিমা এই মুহূর্তে দুর্দান্ত লেগস্পিন করছে। গত ম্যাচে দেখলাম ছয়টি বলের মধ্যে ছয়টি বলই সে খুব দারুণভাবে করেছে। স্পিন আক্রমণ বেশ ভাল বলাই যায়। একটি পার্থক্য হচ্ছে আগে ওরা ওদের সক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত ছিল। ওরা জানত না ওরা কি করতে পারে। এখন ওরা জানে কি করতে পারে ওরা বা কি করতে পারে না। আমাদের স্পিনাররা অনেক পরিপক্ব এখন, এটা একটা ইতিবাচক দিক।’
কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে অমন হারটা কি অশনী সংকেত নয়? কোচ অঞ্জু জাইন অঘটন হিসেবেই মানছেন তা, ‘এটা আসলে চিন্তার তেমন কিছু নয়। এখানে কিছু ফ্যাক্ট আছে অবশ্যই। কেননা এটা টি-টুয়েন্টি ফরম্যাট, অনেকটা আনপ্রেডিক্টেবল। আমি এখনও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, আমার দলের ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে। তাঁরা অবশ্যই ভাল করবে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, যেখানেই ম্যাচ খেলছি তাঁরা রান করছে, আমি তাঁদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।’
অধিনায়ক সালমা খাতুন মনে করিয়ে দিলেন, টুর্নামেন্ট শুরুর ১০-১২ দিন আগেই চলে যাচ্ছে দল। খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন কন্ডিশনের সাথে। ৭ নভেম্বর থেকে শুরু বিশ্বকাপ। সালমাদের হাতে সময়ো নেই খুব বেশি!