• প্রমীলা এশিয়া কাপ
  • " />

     

    সালমাদের জন্য সাকিবদের অন্যরকম অভ্যর্থনা

    সালমাদের জন্য সাকিবদের অন্যরকম অভ্যর্থনা    

    সাকিবদের জন্য আজকের সন্ধ্যাটা ছিল অন্যরকম। এতোদিন তারা দেখেছেন জয় নিয়ে দেশে ফেরার পর সম্ভাষণ জানাতে তৈরি ছিলেন বড় কর্তারা। বাস থেকে নেমে তাদের পরিয়ে দেওয়া হয়েছে ফুলের মালা। আজ তারা নিজেরাই সম্ভাষণ জানাতে তৈরি হয়ে গেলেন। বাংলাদেশের এশিয়াজয়ী মেয়েদের সম্মানে সাকিবরাও আজ হয়ে গেলেন আন্তরিক গৃহকর্তা।

    সন্ধ্যার ঠিক পরে যখন বাস হোটেল সোনারগাঁতে এসে পৌঁছায়, মুশফিক তখন হোটেলের লবির সামনে ছিলেন। মেয়েরা নামার পর সেই কাঙ্খিত ট্রফিটা হাতে ধরে একপাক নেচেও নিলেন। এর মধ্যে চারদিকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ আর উল্লাসধ্বনি, তার মধ্যেই সালমারা চলে গেলেন এলিভেটরের সামনে। সেখানে সাকিব হাসিমুখে তৈরি সম্ভাষণ জানানোর জন্য। পরে সালমা তো বললেন, ‘ভাইয়ারা যে আমাদের জন্য এতোটা রোমাঞ্চিত হয়ে যাবেন ভাবতেই পারিনি।’

    তবে আসল যে অনুষ্ঠান, সেটি শুরু হয়েছে আরও খানিক পর। তার আগেই অবশ্য বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ঘোষণা দিয়েছেন, মেয়েরা সবশুদ্ধ পাবেন ২ কোটি টাকা। প্রতিজন খেলোয়াড় পাবেন ১০ লাখ টাকা, বাকিটা কোচিং স্টাফ ও অন্যান্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার ঘোষণা দিলেন, মেয়েদের জন্য তৈরি করা হবে আলাদা একাডেমি। তবে যে বেতন ভাতা বাড়ানো নিয়ে এতোটা গুঞ্জন ছিল, সেটি নিয়ে চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা দেননি নাজমুল হাসান। শুধু বললেন, বিসিবি পরিচালক এনায়েতুর রহমানের নেতৃত্বে ওয়ার্কিং কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। জানা গেছে, খুব শিগগিরই বেতন বাড়ানোর ঘোষণা আসবে।

     

    তবে সালমারা এসব নিয়ে ভাবতে চাইছেন না। শুধু বললেন, এসব ভাবা এখন তাদের কাজ নয়। অভিভাবকদের ওপরেই সেই দায়িত্ব তারা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এতসবের মধ্যে কালকের সেই স্নায়ুক্ষয়ী মুহুর্তও মনে করিয়ে দিলেন অনেকে। জাহানারা যেন এখন টের পাচ্ছেন শেষ বলে দুই রান নেওয়ার সেই চাপ, ‘এশিয়ান গেমসে ৪২ বলে ৪৫ রান দরকার ছিল। কিন্তু তখন অনেকগুলো উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম আমরা। শেষ বলে ব্যাট করতে নামার সময় মনে পড়ল, এই বলে কিছু করতে হবে। এর চেয়ে বড় সুযোগ আমি আর পাব না। আমাদের দ্বাদশ খেলোয়াড় এসে বলল বলটা ব্যাটে লাগাতে হবে। আমি জোর করে ওকে পাঠিয়ে দিলাম। আমার প্ল্যান ছিল, বল লুপ করে দিলে আমি স্ট্রেইট খেলব। সালমা আপুকে আমি শুধু বললাম, আপনি শুধু দৌড়াবেন। আর কিছু ভাবতে হবে না। এরপর যা হওয়ার তো তো সবাই দেখেছেন।’

    সবাই যা দেখেছে, সেটা আরও অনেকদিন মনে রাখবে বাংলাদেশ। প্রসংক্রমে উঠে এল সাকিব-তামিমদের এক সাথে শেষ বল দেখে অমন হইচই করার সেই মুহূর্ত। সালমাও যেন দারুণ আপ্লুত, ‘তামিম ভাইয়াদের ভিডিও আমরা দেখার আগে সবাই দেখে ফেলেছে। ভাইয়ারা আমাদের জন্য এক্সাইটেড ছিল, এটা অনেক বড় পাওয়া।’

    বিসিবি সভাপতিও যেমন বললেন, মেয়েরাই পথ দেখিয়ে দিয়েছে। এখন ছেলেদের সে পথে হাঁটার পালা। তবে সালমারা নিশ্চয় জানেন, পথে এগুতে হলে কাঁটা থাকবেই, রক্তমাখা চরণতলেই এগিয়ে যেতে হবে সামনে। তাঁরা যে সেটা পারবেন, কালকের পর এ নিয়ে কারও সংশয় থাকার কথা নয়!