• বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
  • " />

     

    আলো ছড়িয়েও আঁধারে তাইজুল

    আলো ছড়িয়েও আঁধারে তাইজুল    

    সেন্ট ভিনসেন্টে ২০১৪ সালে তাইজুল ইসলামের অভিষেকের সময় নিষিদ্ধ ছিলেন সাকিব আল হাসান। ৬ষ্ঠ বাংলাদেশী বোলার হিসেবে অভিষেকেই তাইজুল পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। প্রথম চার টেস্টে তাইজুল সঙ্গী হিসেবে পাননি সাকিবকে। এরপর সাকিব ছিলেন সঙ্গেই, শেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বিশ্রাম নেওয়ার আগে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাকিব নেই চোটের কারণে, তাইজুল আবারও একা। মেহেদি মিরাজ আলো ছড়িয়েছেন অভিষেকের পর, তবে মূল দায়িত্বটা ছিল ওই তাইজুলেরই। 

    অভিষেকের পর থেকে সিলেট টেস্টের আগে বাংলাদেশের হয়ে ৬৯টি উইকেট ছিল তাইজুলের, এ সময়ে এর বেশি ছিল শুধু সাকিবের। প্রথম ইনিংসে তাইজুল নিলেন ছয় উইকেট, ছাড়িয়ে গেলেন সাকিবকে। ক্যারিয়ারে চতুর্থবার নিলেন ৫ উইকেট। এ সময়ে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি বোলিং করেছেন তাইজুল, সাকিবের চেয়ে প্রায় ৯০ ওভারেরও বেশি।

    দ্বিতীয় দিন সকালটা বেশ স্নিগ্ধ ছিল বাংলাদেশের, মূলত ওই তাইজুলের কারণেই। আগেরদিন ২ উইকেট নিয়েছিলেন, বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রুও দিয়েছিলেন তিনিই। জিম্বাবুয়ে আগের দিনই ইঙ্গিত দিয়েছিল আরও কিছু রান যোগ করার। সেটা হতে দিলেন না তাইজুল। ১৩.৩ ওভারে এদিন ২২ রানে তিনি নিয়েছেন ৪ উইকেট। তবুও, দিনশেষে তাইজুলের শ্রমটা ঠিক সামনে আসছে না ব্যাটিং বিপর্যয়ে। 

    ঠিক খুশি হতে পারছেন না তাইজুল নিজেও, “অনুভূতিটা ভালোই। আসলে পাঁচ উইকেট-ছয় উইকেট সবসময় আসে না। অবশ্যই ভাল লাগছে। কিন্তু আমি আসলে দলের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চাইব। দল ভাল করলে ভাল লাগবে।”

    ১৩৯ রানের ভারী লিডের বোঝা মাথায় নিয়ে ২য় ইনিংসে বোলিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ, প্রথম ইনিংসের মতো এবারও নতুন বল তাইজুলের হাতে তুলে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তাইজুল নিজেও আশাও ছাড়ছেন না, সেটা রেকর্ড গড়তে হলেও, “আসলে ক্রিকেটে কখনো ভাল হবে আবার কখনো খারাপ হবে, এমন সময় কিন্তু আসে। সকালে হয়তো আমাদের সময়টা ভাল কেটেছে। লাঞ্চের পর দুই সেশন আমাদের পক্ষে আসেনি। আমাদের হাতে আরও তিন দিন সময় আছে, আমরা চেষ্টা করব ওদের দ্রুত অল-আউট করার।”

    সাম্প্রতিক সময়ে স্পিন-সহায়ক উইকেট বেশ কয়েকবারই বানিয়েছে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষেও সে রেসিপিতে এসেছে সাফল্য। সিলেটের উইকেট তেমন নয়, প্রায় সবারই মতে- এটি আদতে ফ্ল্যাট উইকেট। তবে লাইন-লেংথের ধারাবাহিকতায় এখানেও মিলবে পুরস্কার। তাইজুলও বললেন সেটাই, “উইকেট খুব কঠিন ছিল না। কিছুটা মন্থর ছিল, আপনি এই উইকেটে ফ্ল্যাট উইকেট বলতে পারেন। আসলে উইকেট ফ্ল্যাট হলে ডিসিপ্লিন (রেখে) বোলিং করতে হয়। অফস্টাম্পের বাইরে বেশি জায়গা না দিয়ে বল করতে হয়। আমি ওইটাই করার চেষ্টা করেছি।”

    তাইজুল সে চেষ্টায় সফলও হলেন, শুধু ব্যাটসম্যানরাই তাদের পারফরম্যান্সে অনূদিত করতে পারলেন না তেমন কিছু। সিলেট টেস্টে এখান থেকেও ঘুরে দাঁড়াতে হলে আগেভাগে লড়াইয়ে নামতে হবে তাইজুলের মতো কাউকেই।অভিষেকের পর থেকে তাইজুল জিতেছেন ৬টি টেস্ট, ক্যারিয়ার গড় জেতা ম্যাচে সাধারণ গড় ৩৪.৩৮ থেকে নেমে আসে ২৩.৫০-এ। সিলেট কোন তালিকায় যুক্ত হবে তাইজুলের?