• ইংল্যান্ডের শ্রীলঙ্কা সফর ২০১৮
  • " />

     

    রশিদ-স্টোকস আর জেনিংসে নাটকীয় ধস শ্রীলঙ্কার

    রশিদ-স্টোকস আর জেনিংসে নাটকীয় ধস শ্রীলঙ্কার    

    কলম্বো টেস্ট
    প্রথম দিন, স্টাম্পস
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৩৬ (বেইরস্টো ১১০, স্টোকস ৫৭, সান্দাকান ৫/৯৫) ও ২য় ইনিংস ৩/০* 
    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২৪০ (করুনারত্নে ৮৩, ধনঞ্জয়া ৭৩, রশিদ ৫/৪৯, স্টোকস ৩/৩০) 


    কলম্বোর দিনটা বর্ণনা করা যায় সহজেই। আদিল রশিদের ঘূর্ণি, বেন স্টোকসের শর্ট বল, কিটন জেনিংসের শর্ট লেগে চারটি দুর্দান্ত ক্যাচের সমন্বয়ে নাটকীয় ধসের কবলে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। একসময় যাদের স্কোর ৪০০ পেরিয়ে যাওয়াটা সহজ মনে হচ্ছিল, তারাই গুটিয়ে গেছে ২৪০ রানে, ইংল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে লিড দিয়েছে ৯৬ রানের। ৬৭ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা, চা-বিরতির পর ৫৩ রানে হারিয়েছে ৭ উইকেট। 

    শুরুতে দানুশকা গুনাথিলাকাকে হারানোর চাপটা সামাল দিয়ে উলটো ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলেছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিমুথ করুনারত্নে। ৭৩ রানে ধনঞ্জয়া, ৮৩ রানে করুনারত্নে আউট হয়েছেন রশিদের বলে, শর্ট লেগে জেনিংসকে ক্যাচ দিয়ে। ধনঞ্জয়া ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন ফুললেংথ থেকে, আর টার্ন সামাল দিতে না পেরে ইনসাইড-এজে ব্যাট-প্যাডে ধরা পড়েছেন করুনারত্নে। দুজন আউট হয়েছেন চা-বিরতির আগে-পরে, শ্রীলঙ্কার ধসের শুরুটাও হয়ে গেছে তাতেই। 

    এরপর এসেছেন বেন স্টোকস, দশ ওভারের টানা স্পেলে ক্রমাগত করে গেছেন শর্ট বল। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে দিয়ে শুরু, নিরোশান ডিকওয়েলা ও দিলরুয়ান পেরেরাও স্টোকসের বলে ক্যাচ দিয়েছেন বেন ফোকসের হাতে। এর আগে কুশাল মেন্ডিস রশিদের টার্নে ধোঁকা খেয়ে এজড হয়েছেন স্লিপে, ধরেছেন স্টোকসই। যে কোনও ধসেই নাকি একটা রান-আউট থাকে, সেই নিয়ম মেনে লাকশান সান্দাকান ভুলে গেলেন আরেকটা অলিখিত নিয়ম, মিসফিল্ডে রান নেওয়া ঠিক না। রশিদ মিড-অনে মিসফিল্ড করেছিলেন, সেখানে সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনলেন সান্দাকান। 

     

     

    শুরুতে আর মাঝের দুই উইকেটের বর্ণনা করতে হবে আলাদা করে, জেনিংসের দুইটি দুর্দান্ত ক্যাচের কারণে। পুরো সিরিজেই শর্ট লেগে জেনিংস দুর্দান্ত ফিল্ডিং করেছেন, তবে এরই মাঝে আলাদা করে সেরা দিনটি গেছে আজ। একদম শুরুতে গুনাথিলাকার সঙ্গে রীতিমতো খেলেছেন জেনিংস। জ্যাক লিচকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন গুনাথিলাকা, জেনিংসও সরে গেছেন তার সঙ্গে, শিকার মতো করে। শটটা প্রথমে আটকে দিয়েছেন, ধরেছেন এরপর। রোশেন সিলভার শটে অবশ্য তার সঙ্গে নড়েননি, তবে নীচু হয়ে বাঁহাতে ধরেছেন রিফ্লেক্স ক্যাচটি। যেন তার হাত জাল, আর বলটা মাছ! জেনিংসের ফিল্ডিংয়ের দারুণ দিনে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন রশিদ। মালিন্দা পুস্পকুমারাকে এলবিডব্লিউ করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেছেন, খরচ করেছেন ৪৯ রান। স্টোকস ৩ উইকেট নিয়েছেন ৩০ রানে। 

    দিনের শুরুটাও শ্রীলঙ্কার জন্য ছিল আশাজাগানিয়া। শেষ ৩ উইকেটে মাত্র ২৪ রান যোগ করতে পেরেছে ইংল্যান্ড। মইন আলি ও জ্যাক লিচ ক্যাচ দিয়েছেন পেরেরার বলে, স্টুয়ার্ট ব্রডকে বোল্ড করেছেন সান্দাকান, এই বাঁহাতি স্পিনার পেয়েছেন ৫ উইকেট। তবে ব্যাটিংয়ে মিলিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার সব সুখস্মৃতি। যে দিনটা ফিল্ডিংয়ে বেশ দীর্ঘ হতে পারতো ইংল্যান্ডের, সে দিনেরই শেষভাগে তারাই আবার নেমেছে ব্যাটিংয়ে। আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হওয়ার আগে তিন স্পিনারের চার ওভার নিরাপদেই পার করেছেন ররি বার্নস ও জেনিংস।