• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    বার্নাব্যুতে বিধ্বস্ত রিয়াল

    বার্নাব্যুতে বিধ্বস্ত রিয়াল    

    সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়নস লিগে রীতিমত অদম্য তারা। গ্রুপপর্বে শেষ কবে ঘরের মাঠে হেরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ সেটাও বিস্মৃতির খাতায় চলে যাওয়ার কথা। টানা ২৭ ম্যাচ অপরাজিত, তাতে গোলও ৪৪টি। এবারও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছিল রিয়াল মাদ্রিদ।  গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াও নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। সেজন্যই হয়ত সিএসকেএ মস্কোর বিপক্ষে আজকের ম্যাচটা খুব একটা আমলে নেননি কোচ সান্তিয়াগো সোলারি। কিন্তু নিছক নিয়মরক্ষার ম্যাচই শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়াল রিয়ালের কাল। বার্নাব্যুতে সিএসকেএর কাছে ৩-০ গোলে হেরে বসেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। নিজেদের ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ইতিহাসে অবশ্য এটা নতুন নয়, এর আগেও ১০ বার এই ব্যবধানে হেরেছে রিয়াল। তবে বার্নাব্যুতে এবারই প্রথন তিন গোলের ব্যবধানে হারল তারা। সঙ্গে রিয়াল হারাল ২০০৯ সাল থেকে ঘরের মাঠে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাও। 

    সিএসকেএর বিপক্ষে প্রায় দ্বিতীয় সারির দলই নামিয়েছিলেন সোলারি। করিম বেনজেমা, মার্সেলো বাদে দলে ছিলেন না নিয়মিত একাদশের কেউই। আলভারো ওদ্রিওজোলা, ভিনিসিয়াস জুনিয়রদের ওপর ভরসা রেখেছিলেন সোলারি। তবে ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়ালের তরুণদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল সুস্পষ্ট। প্রথম সুযোগ পেতেই লেগেছে ২৪ মিনিট। কিন্তু সে দফায়ও ভিনিসিয়াসের ক্রস থেকে মার্কো আসেন্সিওর বাঁকানো শট প্রতিহত হয় মস্কোর ক্রসবারে। ৩২ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন আসেন্সিও, কিন্তু সিএসকেএ গোলরক্ষক ইগর আকিনফেভকে একা পেয়েও পরাস্ত করতে পারেননি। মিসের মাশুলটা বেশ চড়াদামেই দিতে হয়েছে রিয়ালের ফরোয়ার্ডদের।

     

     

    ৩৭ মিনিটে প্রতি-আক্রমণে চমৎকার এক বাঁকানো শটে থিবো কর্তোয়াকে পরাস্ত করেন চালোভ। তাতেই স্তব্ধ হয়ে যায় বার্নাব্যু। কিন্তু দুর্দশা যে তখনও ঢের বাকি তা কে জানত! পুরো প্রথমার্ধ প্রতি-আক্রমণে খেলা মস্কো ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় প্রথমার্ধের শেষদিকেই। ৪৩ মিনিটে ফার্নান্দেজের শট কর্তোয়া ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি শেনিকভ। প্রথমার্ধ শেষে তাই সমর্থকদের স্তব্ধতা রূপ নেয় দুয়োতে। রিয়ালের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে বেনজেমার ইনজুরি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের আশায় গ্যারেথ বেল, টনি ক্রুসদের নামিয়ে দেন সোলারি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি খুব একটা। ৫৬ মিনিটে রিয়ালকে ম্যাচে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন ইস্কো, কিন্তু বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন তিনি।

     

     

    দ্বিতীয়ার্ধের বাকিটা সময় আকিনফেভকে একেবারেই পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি রিয়াল। মাঝমাঠের সাথে ফরোয়ার্ডদের সমন্বয়হীনতা ছিল চোখে পড়ার মতো। লুকা মদ্রিচের অভাবটাও আজ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে রিয়াল। রক্ষণেও রামোস-ভারানদের অভাব তো ছিলই। হেসুস ভায়েহো বা হাভি সানচেজরা পুরো ম্যাচই ছিলেন নড়বড়ে। সানচেজরা যত বিবর্ণ ছিলেন, ঠিক ততটাই উজ্জ্বল ছিল মস্কোর রক্ষণভাগ। বেলদের রীতিমত পকেটবন্দি করে রেখেছিলেন তারা।

    ৭৩ মিনিটে রিয়ালের ম্যাচে ফেরার সব সম্ভাবনা শেষ করে দেন সিগুর্ডসন। ভাচলিকের মাইনাস থেকে ডানপায়ের জোরাল শটে ষোলকলা পূর্ণ করেন তিনি। শেষ বাঁশির পর জোর দুয়োধ্বনি শুনেই মাঠ ছাড়তে হয় বেলদের। এই হার হয়ত রিয়ালের মৌসুমে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে দলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মত একজন প্রমাণিত গোলদাতার অভাবটা যে ঠিক কতটা প্রকট- মস্কো যেন তা-ই চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল রিয়ালকে।