• " />

     

    বিফলা সেঞ্চুরির গল্প

    বিফলা সেঞ্চুরির গল্প    

     

    ওয়ানডেতে ৪৯টি সেঞ্চুরি তাঁর। তবে ১৪ বার ব্যাট উঁচু করেও বিরস বদনে থাকতে হয়েছিল শচীন টেন্ডুলকারকে। একবার টাই ম্যাচেও করেছিলেন সেঞ্চুরি। ২০১১ বিশ্বকাপের সে ম্যাচে আবার সেঞ্চুরি করেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসও।

     


    ওয়ানডেতে মোট সেঞ্চুরি এখন পর্যন্ত ১৪৫৩ টি, কেউ সেঞ্চুরি করেছেন, কিন্তু দল হেরেছে, এমন সেঞ্চুরি ৩৬৬টি। টাই ম্যাচে সেঞ্চুরি ১১টি। ম্যাচ শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত হয়েছিল, এমন সেঞ্চুরির সংখ্যা ১৪।

     


    টি-টোয়েন্টির ইতিহাস নতুন, ৪৫৬ ম্যাচে সেঞ্চুরি ১৪টি। এর মধ্যে তিন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেও পরাজিত দলে ছিলেন! তিনবারই দল হিসেবে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা! রোহিত শর্মা এ তালিকার সর্বশেষ সংযোজন। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম আবার টাই হওয়া ম্যাচে করেছিলেন সেঞ্চুরি।

     


    ক্রিস গেইল, বিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, জোহানেসবার্গ, ২০০৭
    শুরুতেই ‘অভাগা’!

     

     


    আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি, ক্রিস্টোফার হেনরি গেইলের আগে এ স্বাদ পাননি কেউ। প্রথম ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি, প্রথম ম্যাচ। ক্রিস গেইলের সেই বিস্ফোরক ইনিংস! ৭ চার আর ১০ ছয়, ৫৭ বলে গেইল করেছিলেন ১১৭ রান। তবে তাঁর সেঞ্চুরি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০৫ রানও যে স্বাগতিকদের জন্য যথেষ্ট হবে না, কে জানতো!

     


    দক্ষিণ আফ্রিকা এ ম্যাচটাই জেতে প্রায় হেসেখেলে, আট উইকেট আর ১৪ বল হাতে রেখে! হার্শেল গিবস করেছিলেন ৫৫ বলে ৯০, জাস্টিন কেম্প ২২ বলে ৪৬। ডি ভিলিয়ার্স ১৬, গ্রায়েম স্মিথ ২৮। ২৮ রান করেছিলেন আরেকজন, ‘মিস্টার এক্সট্রা’! ২৩টি ওয়াইড দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলাররা, গেইলের সেঞ্চুরির আনন্দ নাকি গিবসের মারের চোট, কোনটা তাদেরকে এলোমেলো করে দিয়েছিল, কে জানে!
    ম্যাচসেরার ‘স্বান্তনা’ পুরস্কার অবশ্য জিতেছিলেন ক্রিস গেইলই।

     

     

    ফ্যাফ ডু প্লেসি, বিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জোহানেসবার্গ, ২০১৫
    গেইলের শাপমোচন!

     


    আবার জোহানেসবার্গের নিউ ওয়ান্ডারার্স। আবার দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার সেঞ্চুরিয়ান এক দক্ষিণ আফ্রিকান, ফ্যাফ ডু প্লেসি। ক্রিস গেইলের আট বছর আগের সেই ইনিংসের চেয়ে বল খেললেন একটি কম(৫৬), রান করলেন ২ বেশী(১১৯)। ১১ চার আর ৫ ছয় ছিল ডু প্লেসির ইনিংসে, দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২৩১। তবে ক্রিস গেইল যে আট বছর আগের ঘটনাটা ভোলেননি, তা যদি ডু প্লেসিকে আগে থেকেই বলতেন কেউ! হার্শেল গিবসের সেই ৯০ ফিরিয়ে দিলেন গেইল, ৪১ বল খেলে। সঙ্গে মারলন স্যামুয়েলসের ৩৯ বলে ৭০, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতলো ২ বল বাকী থাকতে, ৪ উইকেটে।

     


    ফ্যাফের ‘স্বান্তনা’ পুরস্কারটুকুও জুটলো না, ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে গেলেন ওই আট বছর আগের স্বান্তনা পুরস্কার পাওয়া ক্রিস্টোফার হেনরি গেইলই!

     

     

     

    রোহিত শর্মা, বিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, ধরমশালা, ২০১৫
    রোহিতের দুঃখগাঁথা!

     

     


    ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ইনিংস তাঁর। ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ইনিংসটিও হলো তাঁরই। এবার দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে করলেন সেঞ্চুরি। তবে ধরমশালার পাহাড়ে যে রোহিতের জন্য দুঃখগাঁথাই লেখা ছিল এদিন!

     


    ১২ চার, ৫ ছয়ে ৬৬ বলে করলেন ১০৬ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য ছিল ঠিক ঠিক দুইশো রানের। এবি ডি ভিলিয়ার্স আর হাশিম আমলার ঝড়ো শুরু, তারপর ভিলিয়ার্স আর ডু প্লেসির আউটে খেই হারিয়ে ফেলা ক্ষনিকের জন্য! এরপর এলেন জাঁ পল ডুমিনি, দক্ষিণ আফ্রিকার ‘ক্রাইসিস হিরো’! ৩৪ বলে ৬৮, একটি চারই মারলেন শুধু। তবে ধরমশালার আকাশ দিয়ে পাহাড়পানে বল পাঠালেন ৭ বার!

     


    ম্যাচসেরার পুরস্কারটিও নিয়ে গেলেন, রোহিতের জন্য রেখে গেলেন শুধুই একরাশ দুঃখগাঁথা!

     

     

    ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, বিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ক্রাইস্টচার্চ, ২০১০
    সাউদিতে রক্ষা!

     


    আরেকটু হলেই ওপরের তিনজনের তালিকায় পড়ে যেতেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। বৃথা যেত ৫৬ বলে ১২ চার আর ৮ ছয়ে ১১৬ রানের ইনিংসটা। নিউজিল্যান্ডের ২১৪ রানের ইনিংসটা ঠিকই ধরে ফেললেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানরা, তবে শেষ বলে মাইকেল ক্লার্ক তৃতীয় রান নিতে গিয়ে হলেন রান-আউট। ম্যাচ টাই।

     


    ৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে উইকেট নেই কোনো, তবুও ড্যানিয়েল ভেট্টোরি আস্থা রাখলেন টিম সাউদির ওপরই। আস্থার প্রতিদান দিলেন সাউদি, অস্ট্রেলিয়ার তিন ব্যাটসম্যান ক্যামেরন হোয়াইট, ডেভিড ওয়ার্নার আর ব্র্যাড হ্যাডিনকে করতে দিলেন মাত্র ৬ রান। শন টেইটের তিন বলে ৯ রান নিলেন ম্যাককালাম-মার্টিন গাপটিলরা।

     


    ম্যাচসেরা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ছাড়া আর কেই বা হতে পারেন এরপর!