• দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান সিরিজ
  • " />

     

    ইনিংস পরাজয় আটকানোর পর দ. আফ্রিকাকে অপেক্ষায় রাখলো পাকিস্তান

    ইনিংস পরাজয় আটকানোর পর দ. আফ্রিকাকে অপেক্ষায় রাখলো পাকিস্তান    

    দ্বিতীয় টেস্ট, কেপটাউন
    তৃতীয় দিন, স্টাম্পস
    পাকিস্তান ১ম ইনিংস ১৭৭ (সরফরাজ ৫৬, মাসুদ ৪৪, অলিভিয়ার ৪/৪৮, স্টেইন ৩/৪৮) ও ২য় ইনিংস ২৯৪ (শফিক ৮৮, বাবর ৭২, মাসুদ ৬১, রাবাদা ৪/৬১, স্টেইন ৪/৮৫)
    দ. আফ্রিকা ১ম ইনিংস ৪৩১ (ডু প্লেসি ১০৩, মার্করাম ৭৮, বাভুমা ৭৫, আমির ৪/৮৮, আফ্রিদি ৪/১২৩) 
    দ. আফ্রিকার জয়ের জন্য ৪১ রান প্রয়োজন 


    কুইন্টন ডি কক হয়তো বলছিলেন ফাফ ডু প্লেসিকে, ৪১ রান করতে তাদের ওভার পাঁচেকের মতো প্রয়োজন। তবে সেটাও পেলো না দক্ষিণ আফ্রিকা, কেপটাউন টেস্ট গেল চতুর্থ দিনে। সিরিজে ব্যাটিংয়ে সম্ভবত তাদের সেরা দিন কাটানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪১ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে পাকিস্তান। তবে তৃতীয় দিনেই ইনিংস পরাজয় চোখ রাঙাচ্ছিল পাকিস্তানকে, তৃতীয় উইকেটে শান মাসুদ ও আসাদ শফিকের ১৩২ রানের জুটি- যেটি সিরিজে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ- সেটা বিলম্বিত করেছে। এরপর বাবর আজমের ৭২ রানের ইনিংস নিশ্চিত করেছে, অন্তত তৃতীয় দিনে জেতা হচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকার। সিরিজ জয়ের উদযাপনটাও তাই আপাতত করা হচ্ছে না তাদের।

    ২৫৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল এ সিরিজের নিয়মিত ঘটনাপ্রবাহ মেনেই। স্টেইনকে অফস্টাম্পের বাইরে ফুললেংথে ড্রাইভ করতে গিয়ে প্রথমে ক্যাচ দিয়েছেন ইমাম-উল-হক, আজহার আলি এলবিডব্লিউ হয়েছেন রাবাদার শুটারে। এরপরই বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে গেছেন মাসুদ ও শফিক। অফফর্মে থাকা ফাখার জামানের বদলে মাসুদকে পাঠানো হয়েছিল ওপেনিংয়ে, প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানের পর এবার করেছেন ৬১। চা-বিরতির আগে তিনি ফিরেছেন ডেল স্টেইনের অফস্টাম্পের বাইরের বলে আগবাড়িয়ে খেলতে গিয়ে। 

    শফিক এগুচ্ছিলেন সিরিজে পাকিস্তানের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়ার দিকে। অফস্টাম্প চ্যানেলে পড়ে ফিল্যান্ডারের বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মারাতেই হয়নি সেটা। এই ডানহাতি থেমেছেন ৮৮ রানেই। রাবাদার শর্ট অফ আ লেংথে এরপর আকাশে তুলেছেন ফাখার জামান, ওপেনিং থেকে নিচে নেমে যেন দিশা হারিয়ে ফেলেছেন আরও! ডুয়ান অলিভিয়ারের বলে শেষ সরফরাজ আহমেদও, এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্তটা রিভিউ নিয়েও আনতে পারেননি নিজের পক্ষে। পরের ওভারে স্টেইনের বলে কট-বিহাইন্ড আমির, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসের লিড শোধ করতেই পাকিস্তানের তখনও প্রয়োজন ছিল ৩৩ রান, শেষ ৩ উইকেটে। 

    সবচেয়ে বড় আশা হয়ে ছিলেন অবশ্যই বাবর আজম। তিনি খেলছিলেন সেঞ্চুরিয়নের প্রথম ইনিংসের মতোই এক ইনিংস। আক্রমণাত্মক, পরিস্থিতি সম্পর্কে মাথা না ঘামানো এক ইনিংস। ৫৫ বলে এদিন ছুঁলেন ফিফটি, ইয়াসির শাহর সঙ্গে ২৬ রানের পর মোহাম্মদ আব্বাসের সঙ্গে গড়লেন ২৩ রানের জুটি। রাবাদার অফস্টাম্পের বাইরের বলে আলগা শট খেলতে গিয়ে আউট হওয়ার আগে করেছেন ৮৭ বলে ৭২ রান, সেঞ্চুরিয়নের মতো এদিনও মেরেছেন ১৫টি চার। 

    শেষ উইকেটে আফ্রিদি ও আব্বাস মিলে যোগ করলেন আরও ২৪ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আফ্রিদি আউট হওয়ার ১১ বল আগেই শেষ হতে পারত পাকিস্তানের ইনিংস, মোহাম্মদ আব্বাস ক্যাচ তুলেও বেঁচে গেলেন ফিল্যান্ডার ওভার-স্টেপিং করায়। আব্বাসসহ দক্ষিণ আফ্রিকানরাও প্রায় মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে দিনের সময়ের সঙ্গে যোগ করা বাড়তি আধাঘন্টার বেশ কিছু সময় চলে গেল, বাকি ২০ মিনিট দক্ষিণ আফ্রিকানদের তাই দেননি আর আম্পায়াররা। 

    এর আগে শেষ ৪ উইকেটে এদিন আর ৪৯ রান তুলতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে সেটা তারা করেছে মাত্র ঘন্টাখানেকের মাঝেই। ৫৯ রান করে কুইন্টন ডি কক ক্যাচ দিয়েছেন, এরপর ভারনন ফিল্যান্ডার ও কাগিসো রাবাদাকে মোহাম্মদ আমির করেছেন বোল্ড। আমির ৪ উইকেট নিয়েছেন ৮৮ রানে, স্টেইনকে ফিরিয়ে ৪টি নিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদিও, ১২৩ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ চার ব্যাটসম্যানই ছুঁয়েছেন দুই অঙ্ক।