'ম্যাড়ম্যাড়ে' ফাইনালেও পাকিস্তানকে আশার আলো দেখাচ্ছে পিএসএল
করাচীর দর্শকরা কাল এসেছিলেন জমজমাট এক ফাইনাল দেখার প্রত্যাশায়। কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটরের তিনটি ম্যাচই যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে, সেখানে এমন ফাইনাল আশা করাটাই স্বাভাবিক। শেষ পর্যন্ত তাদের খানিকটা হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে। ‘ম্যাড়ম্যাড়ে’ এক ফাইনালে পেশোয়ার জালমিকে আট উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পিএসএলের শিরোপা জিতেছে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরস।
গ্রুপ পর্বের শেষ চারটি ম্যাচসহ মোট আটটি ম্যাচ হয়েছে করাচীতে। তিনটি ম্যাচ লাহোরে হওয়ার কথা থাকলেও ভারত-পাকিস্তানের মাঝে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেগুলো করাচীতেই নিয়ে আসা হয়। করাচীর দর্শক অপেক্ষায় ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং দেখার জন্য, তবে শেষ মুহূর্তে ইনজুরির কারণে পাকিস্তান পর্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবি।
এবি না থাকলেও পিএসএলের পাকিস্তান পর্বে কম রোমাঞ্চ দেখেননি দর্শক। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচটি কোয়েটার বিপক্ষে এক রানে ম্যাচ জিতে নেয় করাচী কিংস। প্রথম কোয়ালিফায়ার ও প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচও গেছে শেষ ওভারে।
ফাইনালে অবশ্য তেমন কোন রোমাঞ্চই ছড়ায়নি। প্রথমে ব্যাট করে পেশোয়ার তোলে ৮ উইকেটে ১৩৮ রান। জবাবে আহমেদ শেহজাদের ৫৮ ও রাইলি রুশোর ৩৯ রানের সুবাদে ৮ উইকেটের সহজ জয় পায় কোয়েটা। কাল কোয়েটার হয়ে ব্যাট হাতে মাত্র ৭ রান করলেও টুর্নামেন্টজুড়েই উজ্জ্বল ছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন।
৩৭ বছর বয়সী ওয়াটসনই হয়েছেন সিরিজ সেরা। ১২ ম্যাচে তাঁর রান ৪৩০, গড় ৪৩, স্ট্রাইক রেট ১৪৩.৮০। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশির চার(৪৩) ও ছয়ও(২২) মেরেছেন তিনিই। ইসলামাবাদের বিপক্ষে ৮১, পেশোয়ারের বিপক্ষে ৯১ ও ৭১ রানের তিনটি ইনিংসের জন্য পেয়েছিলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
গত কয়েক মৌসুমের মতো এবারও পিএসএলের বেশ কিছু ম্যাচ হয়েছে পাকিস্তানে। ধীরে ধীরে এখানে বিদেশি ক্রিকেটাররা খেলতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলেই বিশ্বাস আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসনের, ‘যেসব বিদেশি ক্রিকেটার এবার খেলতে এসেছেন পাকিস্তানে, তাদের নিরাপত্তায় কোন কমতি রাখে করাচী। অস্ট্রেলিয়া ও অন্য দেশ থেকেও পর্যবেক্ষকরা এসেছিলেন ফাইনাল দেখতে। পাকিস্তান যে ক্রিকেট খেলার জন্য একদম নিরাপদ, সেটা ধীরে ধীরে সবাই বুঝতে পারছেন। বিদেশি ক্রিকেটারদের পাকিস্তানে খেলার আগ্রহও দিনদিন বাড়ছে। কোন ঝামেলা ছাড়াই পিএসএলের ফাইনাল আয়োজন করেছে করাচী। এটা বড় একটা সাফল্য। আইসিসিও তাদের সাহায্য করছে।’
পিএসএলের ম্যাচ পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে সাহায্য করবে, শুরু থেকেই এমনটা বলে এসেছেন আয়োজকরা। নিরাপত্তা ইস্যু থাকলেও এবারের পিএসএলের শেষভাগের সব ম্যাচ নির্বিঘ্নেই হয়েছে করাচীতে। তবে পিএসএলের পাকিস্তান পর্বের সাফল্যে বড় দলগুলো পাকিস্তান সফরে রাজি হয় কিনা, সেই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।