ভারতকে উড়িয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু নিউজিল্যান্ডের
ভারত ৩৯.২ ওভারে ১৭৯ (জাদেজা ৫৪, পান্ডিয়া ৩০; বোল্ট ৪/৩৩, নিশম ৩/২৬)
নিউজিল্যান্ড ৩৭.১ ওভারে ১৮০/৪ (টেলর ৭১, উইলিয়ামসন ৬৭; বুমরা ১/২)
ফল: নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী
প্রস্তুতি ম্যাচ দেখে বিশ্বকাপের কোনো পূর্বানুমান করা একটু বোকামি। ভারতের ক্ষেত্রেও কিছুটা তাই, ১৯৮৩ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপের আগেও তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচে হেরেছিল তারা। ইংল্যান্ডে আরও একবার বিশ্বকাপ ফিরল, ভারতও হেরে গেল প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে। শুরুতে ট্রেন্ট বোল্টের সুইং সামলাতে পারেনি তারা, আর পরে জিমি নিশম ভুগিয়েছেন। ওভালে ১৭৯ রানে অলআউট হয়ে গেছেন কোহলিরা, যে রান তাড়া করতে নিউজিল্যান্ডকে খেলতে হয়েছে ৩৭.১ ওভার আর হারাতে হয়েছে ৪ উইকেট।
ধাক্কাটা বোল্ট দিয়েছেন দ্বিতীয় ওভারেই। ভেতরের দিকে ঢোকা দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে এলবিডব্লু রোহিত শর্মা, আউট ২ রানে। চতুর্থ ওভারে আবারও বোল্ট। এবার অবশ্য শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার। কিন্তু নিউজিল্যান্ড রিভিউ নিলে দেখা গেছে, শিখর ধাওয়ান বোল্টের বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়েছে ব্লানডেলের গ্লাভসে। ২ রানে আউট ধাওয়ান, ঠিক এক ওভার পর বোল্টের আরও একবার আঘাত। এবার ৬ রানে বোল্ড হয়ে গেছেন লোকেশ রাহুল।
তবে ভারত সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেয়েছে ১১তম ওভারে এসে। কলিন ডি গ্র্যান্ডমের মিডিয়াম পেসেই হয়েছে সর্বনাশ, অলস এক শট খেলার মাশুল দিয়ে বোল্ড অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ৩৯ রানের মধ্যে নেই ভারতের ৪ উইকেট। হার্দিক পান্ডিয়া প্রমোশন পেয়ে উঠে এসেছিলেন পাঁচে, খারাপও করছিলেন না। কিন্তু ৩৭ বলে ৩০ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন নিশমের বলে।
চোট পাওয়ায় বিজয় শংকর নামেননি আজ, কেদার যাদবও ছিলেন বিশ্রামে। দীনেশ কার্তিকের সুযোগ ছিল চার নম্বরে নিজের দাবিটা জানিয়ে রাখার। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না, ৪ রান করে আউট নিশমের বলে। এরপর ধোনি ৪২ বলে ১৭ রান করে সাউদির বলে ফিরে গেলেন, ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ভারত বিপর্যয়ের মুখেই।
সেই অবস্থায় সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। মূল পরিকল্পনায় হয়তো একাদশের বাইরে থাকার কথা এই অলরাউন্ডারের, এগারতে থাকতে হলে ব্যাট হাতেও কিছু করতে হতো। ৫৪ বলে ৫০ রান করে সেটি মন্দ করেননি জাদেজা। নবম উইকেটে কুলদীপের সঙ্গে তাঁর ৬২ রানের জুটিই ভারতকে ২০০র কাছাকাছি নিয়ে গেছে। জাদেজার আউটে শেষ পর্যন্ত সেটা আর হয়নি, ৪০ ওভারও খেলতে পারেনি ভারত।
ওভালের পিচ পরের দিকে ব্যাটসম্যানদের জন্য খানিকটা সহজ হয়েই এসেছিল। আর নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের ফিল্ডাররাও, চাহাল আর কার্তিক দুইটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। বুমরা অবশ্য দুর্দান্তই ছিলেন, দ্বিতীয় ওভারেই তুলে নিয়েছেন মানরোকে। গাপটিলও এরপর আউট হয়ে গেছেন ২২ রানে, পান্ডিয়ার বলে। তবে ভারতের আশাটা এরপর শেষ করে দিয়েছেন উইলিয়ামসন ও রস টেলর। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে যোগ করেছেন ১১৪ রান। ৮৭ বলে ৬৭ রান করার পর চাহালের বলে ক্যাচ দিয়েছেন রোহিতকে। টেলর অবশ্য ম্যাচ শেষ করে আসবেন বলেই মনে হচ্ছিল, কিন্তু ম্যাচ টাই অবস্থায় ৭৫ বলে ৭১ রান করে ফিরেছেন জাদেজার বলে। নিকোলস আর ব্লান্ডেলই তাই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।