• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সেঞ্চুরির আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ওয়ার্নার

    অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সেঞ্চুরির আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ওয়ার্নার    

    শাহিন আফ্রিদ্রির বলটা তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপার ও স্লিপের মাঝে দিয়ে গিয়ে হলো চার। হেলমেট খুলে ডেভিড ওয়ার্নার দিলেন সেই চিরচেনা ‘লাফ’। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করায় উচ্ছ্বাসটা যেন আগের সববারের চেয়ে একটু বেশিই ছিল এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের। টন্টনে ম্যাচসেরা হওয়ার পর ওয়ার্নার বলছেন, জাতীয় দলের হয়ে যে আবার সেঞ্চুরি করতে পারবেন, সেই আশাটাই একটা সময় ছেড়ে দিয়েছিলেন।

    বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ওয়ার্নার। সহ অধিনায়কের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পাশাপাশি আজীবনের জন্য হারিয়েছেন দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগও। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেও অস্ট্রেলিয়ার পোশাকে অনেকটাই অচেনা ছিলেন ওয়ার্নার। ভারতের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতির ফিফটি করে জন্ম দিয়েছিলেন নানা প্রশ্নের। বিধ্বংসী ওয়ার্নার কি তাহলে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেলেন?

    নাহ, পাকিস্তানের বিপক্ষেই দেখা গেছে সেই পুরনো ওয়ার্নারকে। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মুডে থাকা ওয়ার্নার এগারো চার ও এক ছয়ে ১১১ বলে করেছেন ১০৭ রান। ওয়ার্নার বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময়টায় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বড় কিছু করার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন, ‘হ্যাঁ এরকম ভাবনা মাথায় সবসময়ই আসতো। এটাই অবশ্য আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গেছে। যতগুলো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলেছি সবসময় এটাই ভেবেছি।’

    নিষেধাজ্ঞার ওই কঠিন সময়টায় স্ত্রী ক্যান্ডিসই ছিলেন ওয়ার্নারের সবচেয়ে বড় প্রেরণা, ‘আমার স্ত্রী ও বাচ্চাদেরই সব কৃতিত্বটা দিতে চাই। ক্যান্ডিসই আমাকে আগলে রেখেছিল। আমি এখন যা সবটুক কৃতিত্বই তাঁর। নিষেধাজ্ঞার প্রথম তিন মাসে আমি কিছুই করতে চাইতাম না। সে অনেকটা জোর করেই আমাকে বিছানা থেকে উঠিয়ে অনুশীলনে পাঠাতো। এজন্যই আমি ফিট থাকতে পেরেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগের অবস্থায় নিজেকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে দারুণ খুশি আমি। সতীর্থরাও আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’

    ভারতের বিপক্ষে স্টিভ স্মিথ ও ওয়ার্নারকে বহুবার দুয়ো দেওয়া হয়েছিল। ইংল্যান্ডে পা রাখার পর থেকে প্রায় প্রতি ম্যাচেই এমনটা হয়েছে। কাল পাকিস্তানের বিপক্ষে তেমন কিছু ঘটেনি। ওয়ার্নার বলছেন, প্রতিপক্ষের সমর্থকদের দুয়ো নিয়ে তিনি একদমই ভাবেন না, ‘কে কী বলল সেটা নিয়ে আমি ভাবি না। আমাদের কাজ মাঠে গিয়ে পারফর্ম করা। এরকম দুয়ো তো সবসময়ই পেতে হয়, এসব গায়ে লাগাতে নেই। আমি আমার পুরো ক্যারিয়ারেই দুয়ো শুনেছি। এতে তো আরো বেশি রান করার ইচ্ছা জাগে। আমি শুধু খেলার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। হাসিমুখেই সবকিছুর মুখোমুখি হচ্ছি।’

    ওয়ার্নারের মুখ ও ব্যাট, দুটিই যেন বিশ্বকাপে আরও বেশিবার হাসে, এমনটাই চাইবে অস্ট্রেলিয়া।