লিটন-তামিমের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল সাকিবের?
টিভি পর্দায় সেটা দেখা যাচ্ছিল। মাশরাফি বিন মুর্তজা হাসছেন, ওদিকে স্টিভ রোডস কিছু একটা বলছেন মজা করে। বাংলাদেশ যে দল ৩২২ তাড়া করছে সেটা মনে হয়নি একবারও, অন্তত ড্রেসিংরুম দেখে। কিন্তু আসলেই কি তাই? ক্রিজে সাকিব আর লিটনের কী কথা হয়েছিল? ম্যাচ শেষে গোমরটা ফাঁস করলেন সাকিব আল হাসান।
ইনিংসের শুরুতে অবশ্য সাকিব ড্রেসিংরুমেই ছিলেন। তামিম আর সৌম্য যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে স্বস্তির একটা হাওয়া বয়ে গিয়েছিল। পরে সাকিব বলেছেন, ‘ড্রেসিংরুমে আমরা সবাই মজা করছিলাম। দুই ওপেনার যখন ব্যাটিং শুরু করল, আমরা সবাই নির্ভার ছিলাম। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল, এই রান আমরা তাড়া করে জিতব। ড্রেসিংরুমে কারও মধ্যে কোন শংকা ছিল না। ’
তামিম আর সৌম্যর জুটি অবশ্য টেকেনি বেশিক্ষণ, খুব দ্রুতই ক্রিজে নামতে হয় সাকিবকে। শুরুতে পেয়েছেন তামিমকে, দুজন মিলে শুরুটাও দারুণ করেছিলেন। সাকিবের সঙ্গে তামিমের ব্যাট থেকে ঠিকরে বেরুচ্ছিল গত কয়েক ম্যাচের ফিকে হয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস। দুজন জুটি বেঁধে বাংলাদেশকে আগেও জিতিয়েছেন, এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই তো তাদের মাটিতে গত বছর বাংলাদেশ হারিয়েছে দুজনের জুটিতে ভর করে। তারপরও বিশ্বকাপ বলে কথা। আজকের ম্যাচে পরিস্থিতিটাও ছিল অন্যরকম। ক্রিজে দুজন জুটি বাঁধার পর সাকিবের মুখে শুনুন ওই সময়ের গল্প, ‘আমি আর তামিম যখন ব্যাট করছিলাম, আমি ওকে অন্তত দুইবার বলেছি, আমরা ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারি। পাঁচ ছয় ওভার আগে শেষ হবে যদি আমরা ব্যাটিং করি। তখন দুজন দুজনকে চেষ্টা করেছি বলার, অনেকবার ওকে বলেছি, শেষ পর্যন্ত খেলতে হবে। আমরা অনেক বাজে বল পাচ্ছি। চার মারতে পারছি। ভালো বল মারার জন্য আমাদের ওরকম চাপও নিতে হয়নি। আমাদের দুজন সব সময় একে অন্যকে মনে করিয়ে দিয়েছে, এই ম্যাচ আমাদের পক্ষে শেষ করে আসা সম্ভব।’
শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেটা হয়নি, কটরেল ক্ষণিকের জন্য জন্টি রোডস হয়ে যাওয়ায় তামিমের ফিরতে হয়েছে ফিফটির আগে। তবে সাকিব কথা বলার জন্য পেয়ে গেছেন নতুন একজনকে। লিটনের সঙ্গে অবশ্য হুব বেশি ব্যাট করেননি ওয়ানডতে সাকিব, আজকের ম্যাচের আগে মাত্র পাঁচবার তা করতে পেরেছেন। সাকিব শুরুতে জুনিয়র পার্টনারকে বলছিলেন, ‘আমি জানি উইকেট ভালো ছিল। ওকে বলেছিলাম, তিন উইকেট পড়ে গেলেও কোনো সমস্যা নেই। আমর মাচ শেষে করেও আসতে পারব।’
এরপর সাকিব যা বললেন, লিটনকে পরের ম্যাচের জন্য নিশ্চিতভাবেই আরও প্রেরণা দেবে, ‘প্রথম ১০-১৫ বল পর যেভাবে ব্যাট করেছে সেটা ছিল দেখার মতো। অসাধারণ ব্যাটিং করেছে ও। আমি অন্য প্রান্ত থেকে মুগ্ধ হয়ে দেখেছি। কখনোই আমাকে চাপে ফেলার মতো কিছু করেনি। আমার মনে হয় এটাই ওর ব্যাটিংয়ের সেরা দিক। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ, তিন চার ম্যাচ পর ব্যাট করতে আসাটা মোটেই সহজ কিছু ছিল না। ও যেভাবে চাপ সামলেছে সেটা আসলেই ছিল অসাধারণ।