• লা লিগা
  • " />

     

    দশজন নিয়েও রিয়ালের টানা এগারো

    দশজন নিয়েও রিয়ালের টানা এগারো    

    গত ৪০ বছরে নিজেদের সবচেয়ে বাজে প্রাক-মৌসুম কাটিয়েছে তারা। একাধিক ফুটবলার দলে ভেড়ালেও নতুন মৌসুমের আগে রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে হয়তো সংশয় ছিল খোদ কট্টর সমর্থকদেরই। কিন্তু জিনেদিন জিদান ঠিকই বলেছিলেন, মৌসুম শুরু হলেই দেখা মিলবে আসল রিয়ালের। ম্যানেজারের কথা বৃথা যেতে দেননি ‘লস ব্লাঙ্কোস’রা। সেল্টা ডি ভিগোকে তাদেরই মাঠ স্তাদিও বালাইদোসে ৩-১ গোলে হারিয়েছে তারা। বার্সেলোনা যেখানে দশ বছর পর প্রথমবার লা লিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরেছে, সেখানে আজকের জয় নিয়ে টানা ১১ বছর লা লিগার প্রথম ম্যাচে অপরাজিত থাকল রিয়াল।

    বালাইদোসে রিয়ালের একাদশে বড়সড় এক চমকই রেখেছিলেন জিদান। এডেন হ্যাজার্ডের ইনজুরির কারণে ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং করিম বেনজেমার সাথে শুরু থেকেই খেলেছেন গ্যারেথ বেল। এতদিন তাকে ক্লাব ছাড়ার পরামর্শ দিলেও ম্যাচের আগেই বেলের ওপর আস্থা রাখার কথাই বলেছিলেন জিদান। নিজের কথা রেখেছেন জিদান, ম্যানেজারের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন বেল। ১২ মিনিটে কাসেমিরোর লম্বা পাস দুর্দান্তভাবে নিয়ন্ত্রণে এনে সেল্টার দাভিদ কস্তাসকে কাটিয়ে তার ক্রস গোলের সামনে থেকে আলতো টোকায় জালে পাঠিয়েছেন বেনজেমা। পুরো প্রথমার্ধেই রিয়ালের সেরা ফুটবলার ছিলেন বেল। নিচে নেমে রক্ষণে সাহায্য করা, প্রতি-আক্রমণে প্রান্তবদল করে সেল্টার ডিফেন্ডারদের রীতিমত নাকানিচুবানি খাইয়েছেন তিনি।

     

     

    ১৯ মিনিটে গোলও পেতে পারতেন বেল, কিন্তু তার আগুনে শট ফিরিয়ে দেন সেল্টা গোলরক্ষক রুবেন ব্লাঙ্কো। আক্রমণে দুর্দান্ত খেললেও রক্ষণের পুরনো সমস্যা আজকের ম্যাচেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে রিয়ালের। ২৮ মিনিটে আলভারো ওদ্রিওজোলা এবং সার্জিও রামোসের ভুল বুঝাবুঝিতে বল পেয়ে যান ইয়াগো আসপাস। কিন্তু শট নেওয়ার আগ মুহূর্তে দুর্দান্ত এক ট্যাকেলে তার পা থেকে বল কেড়ে নেন রাফায়েল ভারান। প্রথমার্ধে আরও কয়েকবার ডিফেন্ডারদের ভুলে বিপদে পড়তে হয়েছিল রিয়ালকে। কিন্তু শেষদিকে ভাগ্য সহায় না হলে হয়তো সমতায়ই প্রথমার্ধ শেষ করত সেল্টা।

    প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ওদ্রিওজোলার ভুলে বল পেয়ে যান আসপাস, তার পাস থেকে কর্তোয়াকে পরাস্ত করেন মেন্ডেজ। কিন্তু ‘ভিএআর’-এর শরণাপন্ন হয়ে গোল বাতিল করেন রেফারি; রিপ্লেতে দেখা যায়, অফসাইডে ছিলেন আসপাস। রেফারির গোল বাতিলের সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠে বালাইদোসে উপস্থিত সেল্টা সমর্থকেরা। অসন্তোষ প্রকাশ করার কারণে সতর্ক করে দেওয়া হয় সেল্টা ম্যানেজার ফ্রান এস্ক্রিবাকে। গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত মুদ্রার ওপিঠ মনে হলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মুদ্রার এপিঠ দেখেছে সেল্টা। ৫৬ মিনিটে আরাউহোকে পেছন থেকে ট্যাকেল করায় সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় লুকা মদ্রিচকে।

     

     

    ফিফার নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পেছন থেকে অ্যাকিলিস হিলে আঘাত করলেই সরাসরি লাল কার্ড দেখানোর নিয়ম করেছে ফিফা। কিন্তু তারপরও এত সামান্য টাচে মদ্রিচকে দেখানো লাল কার্ডকে বিতর্কিত সিদ্ধান্তই বলেছেন ধারাভাষ্যকারেরা। একজন বেশি থাকার সুযোগটা মিনিটখানেক পরই কাজে লাগাতে পারত সেল্টা। কিন্তু ৫৭ মিনিটে আরাউহোর হেড ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’ থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়ে দেন কর্তোয়া। সুযোগ হাতছাড়ার করার চড়া মাশুলই দিতে হয়েছে সেল্টাকে।

    ৬১ মিনিটে গোলের প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন টনি ক্রুস। ম্যাচের প্রায় ৩০ মিনিট দশজন নিয়ে খেললেও তেমন ভুগতে হয়নি রিয়ালকে। ৭৪ মিনিটে এবার প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে শট নিয়েছিলেন ক্রুস, কিন্তু এবার আর তাকে গোল করতে দেননি রুবেন। কিন্তু ৮০ মিনিটে ঠিকই সেল্টার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছেন বদলি ফরোয়ার্ড লুকাস ভাজকেজ। বেনজেমার পাস থেকে ব্যবধান ৩-০ করেছেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে সেল্টার হয়ে অভিষেকে গোল করে ব্যবধান কমিয়েছেন লোসাদা।