আবারও ইউনাইটেডকে আটকে দিল উলভস
রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই ক্যামেরা চলে গেল তার দিকে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের লাল জার্সিতে মুখ লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পল পগবা, দারুণ সুযোগ পেয়েও যিনি জয় এনে দিতে পারেননি দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি আদায় করেছিলেন নিজেই, কিন্তু ১২ গজ থেকে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি পগবা। এর আগে অ্যান্থনি মার্শিয়ালের গোলের পর রুবেন নেভেসের গোলে ১-১ সমতায় শেষ হয়েছে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স এবং ইউনাইটেডের ম্যাচ। নিজেদের শেষ পাঁচ দেখায় উলভসের বিপক্ষে জয়হীন থাকল ‘রেড ডেভিল’রা (৩ ড্র, ২ হার)।
পেনাল্টি মিস করলেও মাঝমাঠে পুরোটা ম্যাচই দারুণ খেলেছিলেন পগবা। ৬৭ মিনিটে মার্শিয়ালের সাথে ওয়ান-টু-ওয়ান করে আদায় করে নিয়েছিলেন পেনাল্টি। পগবার জন্যই পেনাল্টি ছেড়ে দিয়েছিলেন চেলসির বিপক্ষে আগের ম্যাচে ১২ গজ থেকে গোল করা মার্কাস রাশফোর্ড। কিন্তু পগবাকে খালি হাতেই ফিরিয়েছেন প্যাট্রিসিও, ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডারের আগুনে শট ফিরিয়ে দিয়েছেন দারুণভাবে। দ্বিতীয়ার্ধের বাকিটা সময় চেষ্টা করে গেছে ইউনাইটেড, কিন্তু লিড আর পুনরুদ্ধার করা হয়নি।
আরও একবার মলিনিউ থেকে হতাশা নিয়ে ফিরলেও শুরুটা দারুণই হয়েছিল ইউনাইটেডের। শুরু থেকেই অ্যান্থনি মার্শিয়াল, মার্কাস রাশফোর্ডদের দমিয়ে রাখতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল উলভসের ডিফেন্ডারদের। ১৮ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে পল পগবার শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও। অবশ্য প্রথমার্ধে ঠিকই লিড নিয়েছে ইউনাইটেড। ২৭ মিনিটে রাশফোর্ডের পাস থেকে ইউনাইটেডের জার্সিতে গোলের ‘হাফ সেঞ্চুরি’ পূরণ করেছেন মার্শিয়াল। রোমেলু লুকাকুর প্রস্থানের পর ইউনাইটেডের ‘৯’ নম্বর জার্সি গায়ে যেন নিজেকে ফিরে পেয়েছেন তিনি। প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ তৈরি, পজেশন ধরে রাখার দিক দিয়ে উলভসের চেয়ে এগিয়েই ছিল ইউনাইটেড।
৩৮ মিনিটে উলভস অধিনায়ক কনোর কোডির ভুলে বল পেয়েও নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় ব্যবধান দ্বিগুণের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন মার্শিয়াল নিজেই। এজন্য অবশ্য চড়া মূল্যই দিতে হয়েছে ওলে গানার সোলশারের দলকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরার আশায় ফুলব্যাক ম্যাট ডোহার্টিকে উঠিয়ে উইঙ্গার আদামা ট্রায়োরেকে নামিয়ে দিয়েছিলেন উলভস ম্যানেজার নুনো। ট্রায়োরেকে পেয়ে যেন বদলে যায় উলভসের আক্রমণভাগ। ৫৪ মিনিটেই ডানপ্রান্তে ফাউল আদায় করেছিলেন ট্রায়োরে। হোয়াও মুতিনিয়োর ফ্রিকিকে রাউল হিমেনেজের হেড ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় বারপোস্টে। তবে এর মিনিট দুয়েক পরই সমতায় ফেরে নুনোর দল।
উলভসের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৩ গোল করেছেন তিনি, এর মধ্যে ১০টিই এসেছে ডিবক্সের বাইরে থেকে। ৫৬ মিনিটে মুতিনিয়োর মাইনাস থেকে ডিবক্সের বাইরে বল পেয়ে যান মিডফিল্ডার রুবেন নেভেস। ডানপায়ের দুর্দান্ত বাঁকানো শটে ডি গেয়াকে পরাস্ত করেন তিনি, মলিনিউ মাতে বাধভাঙ্গা উল্লাসে। গোলের পর মুতিনিয়োর অফসাইডে থাকা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও ‘ভিএআর’-এর শরণাপন্ন হয়ে গোলের বাঁশি দেন রেফারি। দ্বিতীয়ার্ধের সময় যত গড়িয়েছে, তত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন হিমেনেজ-ট্রায়োরেরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেডের মতই দ্বিতীয় গোলের আর দেখা পাওয়া হয়নি তাদের। ড্র নিয়েই তাই মাঠ ছাড়তে হল ইউনাইটেডকে। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের চার নম্বরে থাকল ‘রেড ডেভিল’রা।