জিতেই চলেছে সিটি, অন্তিম মুহুর্তের আত্মঘাতী গোলে চেলসির ড্র
বোর্নমাউথের বিপক্ষে গত সপ্তাহে জোড়া গোল করে দলকে জিতিয়েছিলেন সার্জিও আগুয়েরো। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে এবার ব্রাইটন অ্যান্ড হভ অ্যালবিওনের বিপক্ষেও জাল খুঁজে পেলেন তিনি। আগুয়েরোর জোড়া গোলে ব্রাইটনকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার দল জিতলেও ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের চেলসিকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজেই আটকে দিয়েছে শেফিল্ড ইউনাইটেড। ‘ব্লুজ’দের সাথে ২-২ গোলে ড্র করেছে তারা।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচে থিতু হওয়ার আগেই পিছিয়ে পড়ে ব্রাইটন। ৬৮ সেকেন্ডে ওলেগজান্ডার জিনচেঙ্কোর পাসে ডেভিড সিলভার মাইনাসে দলকে লিড এনে দেন কেভিন ডি ব্রুইন। শুরুতেই লিড নেওয়ার পর ‘সিগাল’দের চেপে ধরে সিটি। ১৮ মিনিটেই লিড দ্বিগুণ করতে পারতেন সিলভা, কিন্তু রহিম স্টার্লিংয়ের পাস থেকে তার শট চলে যায় গোলের বাইরে দিয়ে। ২৫ মিনিটে ডি ব্রুইনের আগুনে শট দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন ব্রাইটন গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক না থাকলে হয়তো আরও পিছিয়ে পড়ত গ্রাহাম পটারের দল। কিন্তু ৪২ মিনিটে আগুয়েরোকে রুখে দিতে পারেননি তিনিও। ডি ব্রুইনের পাস থেকে ব্রাইটন ডিফেন্ডার লুইস ডাঙ্ককে কাটিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আগুয়েরো। পুরো প্রথমার্ধ আক্রমণে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও একেবারে শেষদিকে ম্যাচে ফেরার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ব্রাইটন।
কিন্তু ফরোয়ার্ড লিয়ান্দ্রো ট্রসার্ডের শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন সিটি গোলরক্ষক এডারসন মোরায়েস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অবশ্য ব্রাইটনের ম্যাচে ফেরার ক্ষীণ সম্ভাবনাও মিলিয়ে যায় আগুয়েরোর দ্বিতীয় গোলে। সিলভার পাসে ৫৫ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত বাঁকানো শটে গোল করেন ‘কুন’। ৭৯ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমে ব্রাইটনের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন বের্নার্দো সিলভা। ইতিহাদে আগুয়েরোর গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৯৮-এ। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে হোমে তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল ওয়েইন রুনি (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ১০১) এবং থিয়েরি অঁরি (আর্সেনাল, ১১৪)। ৪ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে অন্তত ঘণ্টা দুয়েকের জন্য টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল সিটি।
সিটির মত জিততে না পারলেও শেফিল্ডের বিপক্ষে শুরুটা দারুণ হয়েছিল চেলসির। ১৯ মিনিটে ‘ব্লেইডস’দের গোলরক্ষক হেন্ডারসনের ভুলে লিড এনে দেন ট্যামি আব্রাহাম। নরইচের বিপক্ষে গত ম্যাচের পর আবারও গোল পেলেন ইংলিশ স্ট্রাইকার। ৪৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেছিলেন তিনিই। এবারও শেফিল্ডের রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে যান তিনি, ডানপায়ের জোরাল শটে বল জালে জড়ান আব্রাহাম। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবারও শেফিল্ডের জালে বল পাঠিয়েছিল চেলসি। কিন্তু গোলের আগে বল বাইরে চলে যাওয়ায় ‘ভিএআর’-এর শরণাপন্ন হয়ে গোল বাতিল করেন রেফারি।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে ফেরে শেফিল্ড। ৪৬ মিনিটে স্টিভেনসের মাইনাসে চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগাকে পরাস্ত করেন ক্যালাম রবিনসন। প্রথমার্ধে জোড়া গোল করা আব্রাহাম হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন দ্বিতীয়ার্ধেই। কিন্তু ৫৫ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক সেভে তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন হেন্ডারসন। পুরো ম্যাচেই দারুণ সব সেভে দলকে ম্যাচে রেখেছেন ইংলিশ গোলরক্ষক। শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষকের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের প্রতিদান ঠিকই দিয়েছে শেফিল্ড। ৯০ মিনিটে রবিনসনের ক্রস ক্লিয়ার করতে যেয়ে বল নিজ জালে ঠেলে দেন কার্ট জুমা। শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ল্যাম্পার্ডের দলকে। ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৯-এ থাকল ‘ব্লুজ’রা।