• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    তাড়া করেও লিভারপুলকে ছোঁয়া হলো না চেলসির

    তাড়া করেও লিভারপুলকে ছোঁয়া হলো না চেলসির    

    প্রিমিয়ার লিগ

    ফলাফল চেলসি ১-২ লিভারপুল


    প্রথমার্ধের ধাক্কা আর সামলে ওঠা হয়নি চেলসির। এনগোলো কান্তের গোলে অবশ্য শেষদিকে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল। কিন্তু লাভ হয়নি। লিভারপুল টানা ষষ্ঠ জয়ে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে ৫ পয়েন্টের লিড পোক্ত করেছে আরও।

    সেটপিসে কতোখানি শক্তিশালী সেটা আরও একবার চেলসির মাঠে প্রমাণ করেছে লিভারপুল। তাদের দুইটি গোলের উৎসই সেটপিস। গত মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ বার সেটপিস থেকে গোল করেছে ইউর্গেন ক্লপের দল। প্রিমিয়ার লিগের যে কোনো দলের চেয়ে যেটা সাত গোল বেশি।

    স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে লিভারপুল এগিয়ে যেতে সময় নিয়েছিল ১৪ মিনিট। ডিবক্সের সামনে থেকে পাওয়া ফ্রি কিকে শক্তির সঙ্গে বুদ্ধিরও দারুণ পরিচয় দিয়েছেন ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ড। মোহামেদ সালাহ, আর্নল্ড দুইজনই দাঁড়িয়েছিলেন বলের সামনে। সালাহ দৌড়ে গিয়ে আলতো টাচে বল ঠেলে দিয়েছেন পেছনে, তাতে সামনে থাকা মানব দেয়াল পেরিয়েছে বল। আর্নল্ড এরপর শুধু প্লেসমেন্টটা ঠিক রেখে গোল করেছেন কেপাকে হতাশ করে।

     

     

    পিছিয়ে পড়েও চেলসি দমে যায়নি অবশ্য। ট্যামি আব্রাহাম দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলে। কিন্তু ওয়ান অন ওয়ানে লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের কাছে থমকে গেছেন আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা আব্রাহাম। এর কিছুক্ষণ পর চেলসির উদযাপনও থমকে গেছে। সিজার আজপিলিকুয়েতা গোল করে মাতিয়ে তুলেছিলেন ঘরের সমর্থকদের। কিন্তু ভিএআর চেকে বাতিল হয়েছে গোল, মেসন মাউন্ট আক্রমণের সময় ছিলেন অফসাইডে।

    চেলসি তখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল। সেটাকে এরপর পুরোপুরি দমিয়ে দিয়েছেন রবার্তো ফিরমিনো। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের ডিবক্সের পাশ থেকে নেওয়া ফ্রি-কিক থেকে হেডে দ্বিতীয় গোল করে চেলসিকে আরও দমিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

    চেলসির সমস্যা শুরু হয়েছিল প্রথম গোল হজমের পর  থেকেই। পরের মিনিটেই এমারসন মাঠ ছেড়েছেন ইনজুরি নিয়ে। ৪২ মিনিটে ক্রিস্টেনসেনকে বরণ করতে হয় একই পরিণতি। দুই গোল আর একাদশের দুইজনকে হারিয়ে বিরতিতে যেতে হয় চেলসিকে। 

    চেলসি এরপর ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছে কম। লিভারপুলও চাপে পড়েনি তাই। হেসে খেলেই জয়ের দিকে এগুচ্ছিল তারা। কিন্তু এনগোলো কান্তে কাজটা কঠিন বানিয়ে দিলেন। ম্যাচ শেষের ১৯ মিনিট বাকি থাকতে করলেন দারুণ এক গোল। বাম দিক থেকে বল পেয়ে ঘুরে দৌড় শুরু করেছিলেন, এরপর থেমেছেন ১৮ গজ দূর থেকে। দৌড় থামাননি, সামনে থেকে দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে গোল দেখেছেন সেখান থেকেই। শট মেরেছেন নিখুঁত, কান্তের দুর্দান্ত গোলে লড়াইয়েও ফেরে চেলসি।

    ইয়ুর্গেন ক্লপকে এরপর একটু সতর্ক হতেই হত। এরপর তিনি করালেন প্রথম বদল। চেলসির লাগাম টেনে ধরতে সাদিও মানেকে তুলে নামানেল জেমস মিলনারকে। এসবের কোনো কিছুই হয়ত কাজে লাগত না, যদি আরেক বদলি মিচি বাতসুয়াই আর শুরু থেকেই খেলা মেসন মাউন্ট অসাধারণ দুইটি সুযোগ হাতছাড়া না করতেন। চেলসির দুই আক্রমণের উৎসই ছিলেন এমারসনের বদলি নামা মার্কোস আলোন্সো। ৮৮ মিনিটে তার বাম দিক থেকে করা ক্রস একেবারে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন বাতসুয়াই। তবুও হেডে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। আর নির্ধারিত সময়ের ১০ সেকেন্ড আগে মাউন্ট বল পেয়েছিলেন পায়ে, তিনিও প্রথম সুযোগে মারতে গিয়ে বল উঠিয়ে দিয়েছেন আকাশে।

    লিভারপুলকে তাড়া করেও আর শেষ পর্যন্ত তাই ধরা হয়নি ল্যাম্পার্ডের চেলসির। ক্লপ প্রিমিয়ার লিগে নিজের দেড়শতম ম্যাচে তুলে নিয়েছেন ৯২ তম জয়। দেড়শ ম্যাচের হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে তার চেয়ে সফল শুধু হোসে মরিনহো। চেলসিকে নিয়েই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি, জিতিয়েছিলেন প্রিমিয়ার লিগ। ক্লপও সেই পুনরাবৃত্তিই চাইবেন।