শামি-জাদেজাতে দেড় সেশনেই জিতল ভারত
স্কোর
ভারত ৫০২/৭ ডিক্লে ও ৩২৩/৪ ডিক্লে
দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৩১ ও ৬৩.৫ ওভারে ১৯১ (পিট ৫৬, মুথুসামি ৪৯*; শামি ৫/৩৫, জাদেজা ৪/৮৭)
ভারত ২০৩ রানে জয়ী
ম্যাচ বাঁচাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে হতো পুরো দিন। মোহাম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাদেজা অবশ্য প্রোটিয়া টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কোনো প্রতিরোধ গড়ারই সুযোগ দেননি। এক প্রান্তে শামির গতি, আরেক প্রান্তে জাদেজার ঘূর্ণি জাদু; এতেই কুপোকাত ফাফ ডু প্লেসিরা। মূল ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও নবম উইকেটে দারুণ এক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন সেনুরান মুথুসামি ও ড্যান পিট। শেষ পর্যন্ত বিশাখাপত্তনমে ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ১৯১ রানেই গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০৩ রানের বড় ব্যবধানে জিতেই সিরিজে এগিয়ে গেলেন বিরাট কোহলিরা।
গতকাল দিনের শেষ আধ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে ডিন এলগারকে হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ প্রথম সেশনেই পড়েছে সাত উইকেট। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ভারতকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। অফ স্টাম্পের অনেকখানি বাইরে পড়া বলটি টার্ন করে ভাঙ্গে ডি ব্রুইনের স্টাম্প। এই উইকেটের মাধ্যমে টেস্টে নিজের ৩৫০তম উইকেট পেলেন অশ্বিন। এটা এসেছে ৬৬ ম্যাচে, যা শ্রীলংকার মুত্তিয়া মুরালিধরনের সমান। তারা দুইজনই সবচেয়ে কম সময়ে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন। সেই শুরু, এরপর শুধু প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়া দেখেছে বিশাখাপত্তনম।
শামির বলে কুপোকাত বাভুমা
ডি ব্রুইন ফেরার তিন বল আউট হন টেমবা বাভুমাও। শামির নিচু হয়ে আসা বলটা সামলানো ছিল প্রায় অসম্ভব! শূন্য রানে বোল্ড হয়েই প্যাভিলিয়নে ফেরেন বাভুমা। ডু প্লেসি-এইডেন মার্করাম প্রায় আধ ঘণ্টা ক্রিজে ছিলেন। ২২ তম ওভারের পঞ্চম বলে আবার শামির আঘাত। এবার ভেতরের দিকে আসা বলটা কী মনে করে ছেড়ে দিলেন ডু প্লেসি, উড়ে গেল তার অফ স্টাম্প। দুই ওভার পর রানের খাতা না খুলে শামির বলে বোল্ড হন কুইন্টন ডি ককও।
২৭ তম ওভারে দেখা যায় জাদেজার জাদু। এই ওভারে তিনটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। মার্করামকে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচে ফিরিয়েছেন জাদেজা। জাদেজার মাথার ওপর দিয়ে বল তুলে দিয়েছিলেন মার্করাম, লাফিয়ে উঠে এক হাত দিয়েই সেটা লুফে নিয়েছেন জাদেজা। তিন বল পর ভার্নন ফিল্যান্ডারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। আম্পায়ার প্রথমে আউট না দিলেও রিভিউ নিয়েই উইকেট পায় ভারত। পরের বলেই কেশভ মহারাজকেও একইভাবে আউট করেন জাদেজা। এবার অবশ্য রিভিউ নিয়ে পার পাননি মহারাজ।
৭০ রানে নেই দক্ষিণ আফ্রিকার ৮ উইকেট। ম্যাচটা শেষ হয়ে যেতে পারত প্রথম সেশনেই। এরপরই নবম উইকেটে সেনুরান মুথুসামি ও ড্যান পিটের দুর্দান্ত প্রতিরোধ। দুইজন শেষ আধ ঘণ্টায় মাটি কামড়ে থেকেছেন। দ্বিতীয় সেশনেও ভারতীয় বোলারদের হতাশায় ডুবিয়েছেন মুথুসামি-পিট জুটি। দুইজন মিলে ভারতের বিপক্ষে নবম উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়েছেন।
ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরিও পেয়ে যান পিট। পিট-মুথুসামি জুটি ৩৩ ওভার খেলে করে ৯১ রান। এই জুটি ভাঙ্গেন শামি। বোলিংয়ে ফিরে প্রথম বলে পিটকে বোল্ড করেন শামি। অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন পিট, বল তার ব্যাটের কানায় লেগে ফিরে আসে স্টাম্পে। জাসপ্রীত বুমরার পর এক ইনিংসে চারজন ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করা দ্বিতীয় ভারতীয় বোলার হলেন শামি। দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ উইকেটটেও নিয়েছেন শামি। টেস্টে এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি।