• ইউরো বাছাইপর্ব
  • " />

     

    রামোসের রেকর্ডের রাতে অন্তিম মুহূর্তের গোলে জয় হাতছাড়া হল স্পেনের

    রামোসের রেকর্ডের রাতে অন্তিম মুহূর্তের গোলে জয় হাতছাড়া হল স্পেনের    

    বেলজিয়াম, ইতালির সাথে ইউরো ২০২০ বাছাইপর্বের প্রথম ৬ ম্যাচ জেতা দল ছিল স্পেন। নরওয়ের মাঠে রবার্তো মরেনোর দলের সামনে সুযোগ ছিল বেলজিয়ানদের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে ইউরো ২০২০ যাত্রা নিশ্চিত করা। কিন্তু বাছাইপর্বের মাত্র সাত ম্যাচ পরই স্পেনের ইউরোর টিকেট নিশ্চিত হতে দিলেন না নরওয়ের জশ কিং। বোর্নমাউথ ফরোয়ার্ডের অন্তিম মুহূর্তের পেনাল্টিতে 'এফ' গ্রুপের ম্যাচে নরওয়ের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে স্পেন। ইকার ক্যাসিয়াসকে (১৬৭) টপকে স্পেনের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডের রাতটা ইউরো যাত্রা নিশ্চিত করে স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না সার্জিও রামোস (১৬৮)।

    দু'দলের মধ্যে আকাশপাতাল পার্থক্য হলেও নিজেদের মাঠে পুরো ম্যাচ, বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে সমানে সমান টেক্কা দিয়েছে নরওয়ে। প্রথমার্ধেও স্প্যানিশদের গোলের সুযোগই তৈরি করতে দেয়নি লার্স লাগেরব্যাকের দল। ৪-১-৪-১ ফর্মেশনে খেলা স্পেনের বিপক্ষে ৪-২-৩-১ এ দল সাজিয়েছিলেন লাগেরব্যাক। মাঝমাঠে সার্জিও বুস্কেটস, দানি সেবায়োসদের একদমই সুবিধা করতে দেননি হেনরিকসেন, বার্জরা। আক্রমণে রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড মার্টিন ওদেগার্ড এবং কিং প্রতি-আক্রমণে রামোসদের ভুগিয়েছেন বেশ। কিন্তু ফর্মে থাকা স্ট্রাইকার এর্লিং হালান্ডের অভাবটা ভুগিয়েছে তাদেরও।

     

    দলকে লিড এনে দেওয়ার পর সলের উদযাপন

     

    প্রতি-আক্রমণে গতিতে স্প্যানিশদের হার মানালেও গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগাকে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি ওদেগার্ডরা। স্পেনের আক্রমণে ছিলেন না ইস্কো, আলভারো মোরাতাদের কেউই। রিয়াল-বার্সা থেকে ছিলেন কেবল রামোস, বুস্কেটস। স্প্যানিশদের মাঝে পুরো ম্যাচেই বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল সুস্পষ্ট। প্রথমার্ধে দু'দলের কেউই গোলে শট নিতে পারেননি। নরওয়ের দৃঢ় রক্ষণভাগকে ছোট ছোট পাসে ভেদ করতে না পেরে দূরপাল্লার শটের শরণাপন্ন হয়েছে স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কাজ হয় তাতেই।

    ৪৬ মিনিটে নরওয়ের রক্ষণভাগের ভুল ক্লিয়ারেন্সে ডিবক্সের বাইরে থেকে হাফভলিতে দলকে লিড এনে দেন সল নিগুয়েজ। অবশ্য এজন্য নরওয়ে গোলরক্ষক রুনে জারস্টেইনকে ধন্যবাদ জানাতেই পারেন তিনি, সলের নিরীহদর্শন শট তার হাত গলে জড়ায় নরওয়ের জালে। তবে পিছিয়ে পড়ার মিনিট দুয়েক পরই সমতায় ফিরতে পারত লাগেরব্যাকের দল। কিন্তু ৪৯ মিনিটে ওদেগার্ডের কর্নারে গোলের মাত্র কয়েক গজ দূর থেকেও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কিং। অবশ্য তাতে হাল ছাড়েনি নরওয়ে। ৫৮ মিনিটে আবারও সুযোগ পেয়েছিলেন কিং, কিন্তু এবারও কেপাকে বিপদে ফেলতে পারেননি তিনি। স্পেনের ভাগ্য সহায় হলে সুযোগ হাতছাড়ার চড়ামূল্যই দিতে হত নরওয়েকে।

     

    নরওয়ের ত্রাণকর্তা জশ কিং!

     

    ৬৬ মিনিটে ডিবক্সের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে ফাবিয়ান রুইজের শট জারস্টেইনকে পরাস্ত করতে প্রতিহত হয় ক্রসবারে। তবে ৭৯ মিনিটে খুব সম্ভবত ম্যাচে ফেরার সবচেয়ে দারুণ সুযোগটা পেয়েছিলেন কিংই। পুরো ম্যাচে নরওয়ের মিডফিল্ডের কলকাঠি নাড়া ওদেগার্দের ডিফেন্সচেরা থ্রু পাসে স্পেন ডিবক্সে ঢুকে পড়েন কিং, কিন্তু রাউল আলবিওলের চার্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শট বাইরে মারেন তিনি। স্পেনের মত দলকে চেপে ধরেও একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করার কারণে দুয়োও শুনতে হয়েছে কিংকে। তবে শেষ পর্যন্ত 'জিরো' থেকে 'হিরো' বনে গেছেন কিং।

    দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে বাঁ-প্রান্ত থেকে ভেসে আসা ক্রসে এল;আব্দুলাওই হেড করতে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ডিবক্সে ফেলে দেন কেপা, পেনাল্টির বাঁশি দেন রেফারি মাইকেল ওলিভার। পুরো ম্যাচে সুযোগ হাতছাড়া করা কিং ১২ গজ থেকে অবশেষে পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত গোল। ডেভিড ডি গেয়া ফর্মে না থাকায় স্পেনের গোলবার সামলাতে তার ওপরই আস্থা রেখেছিলেন মরেনো, কিন্তু কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি কেপা। অন্তিম মুহূর্তের গলে জয় হাতছাড়া হওয়ায় ৭ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে 'এফ' গ্রুপের শীর্ষেই থাকল স্পেন। ১০ পয়েন্ট নিয়ে তিন-এ আছে নরওয়ে।