বর্ণবাদী স্লোগানে দুইবার বন্ধ হলো ইংল্যান্ড-বুলগেরিয়া ম্যাচ
ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট এই আশংকাটা করেছিলেন অনেক আগেই। ইংলিশ ফুটবলাররাও বলেছিলেন, বুলগেরিয়ার মাঠে বর্ণবাদের শিকার হতে পারেন তারা। শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো সেটাই। ইউরো বাছাইপর্বের ম্যাচে বুলগেরিয়া সমর্থকদের বর্ণবাদী স্লোগানে দুইবার ম্যাচ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন রেফারি।
ম্যাচের তখন ২৮ মিনিট, ইংল্যান্ড এগিয়ে ২-০ গোলে। ইংলিশ ডিফেন্ডার টাইরন মিংস গ্যালারি থেকে শুনতে পান বর্ণবাদী মন্তব্য। সাথে সাথেই এটা তিনি অধিনায়ক হ্যারি কেইনকে জানান। রেফারি ইভান বেবেকের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলতেও দেখা গেছে কেইনকে। রেফারি ম্যাচ বন্ধ রাখেন বেশ কয়েক মিনিটের জন্য। স্টেডিয়ামে ঘোষণাও দেওয়া হয়, এই ধরনের কাজ আবার করলে ম্যাচটা বাতিলও করা হয়ে পারে।
কিছুক্ষণ পর আবার শুরু হয় ম্যাচ। ৪৩ মিনিটে আবার ম্যাচটি বন্ধ করতে বাধ্য হন রেফারি। এবার বুলগেরিয়ার কিছু সমর্থকের ‘নাৎসি স্যালুটের’ কারণেই এটা করেছেন তিনি। কালো হুডি পরা কয়েকজন দর্শক এসেছিলেন মাঠে। তারা ইংল্যান্ড ফুটবলারদের উদ্দেশ্য করে এই বিতর্কিত স্যালুট দিচ্ছিলেন বারবারই।
বুলগেরিয়া সমর্থকদের বিতর্কিত সেই নাৎসি স্যালুট
প্রথমার্ধ শেষে মাঠ ছাড়ার সময় ঘরের মাঠের সমর্থকের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে খোদ বুলগেরিয়া অধিনায়ক ইভেলিন পোপভেরও। দ্বিতীয়ার্ধে আর তেমন কোনো উত্তেজনা ছড়ায়নি এসব নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ম্যাচটি জিতেছে ৬-০ গোলে।
ম্যাচের ফলাফল ছাপিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিল বর্ণবাদের ইস্যুটাই। ম্যাচের পর ইংলিশ ফুটবলাররা নিজেদের টুইটারে কঠোর সমালোচনা করেছেন বুলগেরিয়ার দর্শকের এমন আচরণের। স্ট্রাইকার রাহিম স্টার্লিং বলছেন, ‘বুলগেরিয়ার জন্য খারাপ লাগছে, তাদের স্টেডিয়ামে এমন ইডিয়ট দর্শক খেলা দেখতে আসে। ৬-০ তে জিতে আমরা আমাদের কাজটা করেছি। আমাদের সমর্থকরা নিরাপদে সফরটা করে গেছে, তাদের অভিনন্দন।’
জেসে লিনগার্ড লিখেছেন, ‘যারা সুন্দর খেলাটাকে নষ্ট করতে চায়, ইংল্যান্ডের সবাই তাদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। ইউয়েফার উচিত এই ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।’ মার্কাস র্যাশফোর্ড লিখেছেন, ‘এরকম পরিস্থিতিতে খেলা সহজ কাজ না। ২০১৯ সালে এমনটা হবে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। এমন প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা তিন পয়েন্ট পেয়েছি। কিন্তু এসব বন্ধ করতে হবে।’
এদিকে বুলগেরিয়া কোচ কাসেমির বালাকোভ বলছেন, তিনি বর্ণবাদী কোনো মন্তব্যই শুনতে পাননি, ‘আমি ব্যাক্তিগতভাবে এরকম কিছু শুনিনি। আমি দেখেছি রেফারি ম্যাচ বন্ধ রেখেছেন। আর শুধু বুলগেরিয়ার দর্শকই নয়, ইংল্যান্ডের সমর্থকরাও শিষ দিচ্ছিল বুলগেরিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের সময়। দ্বিতীয়ার্ধে তারা আমাদের সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে অনেক কিছুই বলেছেন যা আমার পছন্দ হয়নি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমাদের সবার মনোযোগটা ফুটবলেই ছিল। যদি সত্যিই বর্ণবাদের মতো কিছু হয়ে থাকে তাহলে সেটার জন্য আমরা দুঃখিত। বুলগেরিয়ার ফুটবল এটা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’