বুলগেরিয়ার বর্ণবাদের ইস্যুতে কেঁদে ফেললেন স্টইচকভ
এই সপ্তাহে বুলগেরিয়ার মাঠে ইংল্যান্ডের ৬-০ গোলের বিশাল জয় ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল বর্ণবাদের ইস্যুতে। সোফিয়ায় প্রথমার্ধে দু'বার ম্যাচ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন রেফারি, আশঙ্কা ছিল ম্যাচ বাতিল হওয়ারও। কিন্তু বর্ণবাদের পরও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বড় জয় ছিনিয়ে আনা ইংল্যান্ড যেদিকে বাহবা পাচ্ছে, তখন বুলগেরিয়ার সমালোচনায় মুখর পুরো ইউরোপ। এবার নিজ দেশের সমর্থকদের অগ্রহণযোগ্য ব্যবহারের কড়া সমালোচনা করেছেন বুলগেরিয়ান কিংবদন্তী রিস্টো স্টইচকভ। কান্নায় ভেঙে পড়া স্টইচকভ বলেছেন, বুলগেরিয়ান সমর্থকদের লম্বা সময়ের জন্য স্টেডিয়াম থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
মেক্সিকান টিভি চ্যানেল টিইউডিএন-এর যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডিওর এক টকশোতে আমন্ত্রিত স্টইচকভকে বুলগেরিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই নিজের হতাশা প্রকাশ করেন সাবেক বার্সেলোনা স্ট্রাইকার।
"এ ধরনের সমর্থকদের কোনো স্টেডিয়ামেই খেলা দেখতে যেতে দেওয়া উচিত না। বা এর চেয়েও কড়া শাস্তি দেওয়া উচিত তাদের। ইংল্যান্ডে যেমন বর্ণবাদের প্রমাণ পাওয়া গেলে ঐ সমর্থকদের মাঠে এসে খেলা দেখা থেকে অন্তত পাঁচ বছর নিষিদ্ধ করা হয়। বুলগেরিয়ান বর্ণবাদী সমর্থকদেরও এরকম শাস্তি দেওয়া উচিত। তাদের ব্যবহারের জন্য অন্যদের ভুক্তভোগী হচ্ছে- এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।" কথা বলার সময় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি স্টইচকভ, টকশোতেই কেঁদে ফেলেন তিনি।
বর্ণবাদ নিয়ে অবশ্য ব্যবস্থা নিয়েছে বুলগেরিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। এখন পর্যন্ত চারজন সমর্থককে বর্ণবাদী মন্তব্য এবং নাৎসি স্যালুটের জন্য গ্রেফতার করেছে বুলগেরিয়ান পুলিশ। ম্যাচের পরপরই বুলগেরিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট বরিস্লাভ মিহায়লোভকে পদত্যাগের আহবান জানিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ; পদত্যাগও করেছেন বরিস্লাভ। ইউয়েফাও বর্ণবাদের প্রমাণ পেয়ে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সোফিয়ায় ম্যাচের ২৮ মিনিট থেকে শুরু হয়েছিল পুরো ঘটনা।
ইংলিশ অভিষিক্ত ডিফেন্ডার টায়রন মিংস বর্ণবাদের অভিযোগ জানান অধিনায়ক হ্যারি কেইনকে। ইংলিশ স্ট্রাইকার রেফারিকে জানালে স্টেডিয়াম ঘোষকের মাধ্যমে সমর্থকদের সতর্ক করে দেন রেফারি। মাইকে ঘোষণা করা হয়; বর্ণবাদী মন্তব্য না থামলে ম্যাচটিই পণ্ড ঘোষণা করা হবে। তবে তারপরও থামেনি বুলগেরিয়ার সমর্থকেরা। ৪৩ মিনিটে তাদের বিরুদ্ধে নাৎসি স্যালুটের অভিযোগ আনেন মার্কাস রাশফোর্ড এবং রহিম স্টার্লিং। অবস্থা বেগতিক দেখে নিজ সমর্থকদের সাথে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে যান বুলগেরিয়া অধিনায়ক পোপোভ। ম্যাচ শেষে টুইটারে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইংলিশ ফুটবলাররা। পোপোভের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন রাশফোর্ড।