ক্রিকেটারদের আন্দোলনকে 'ষড়যন্ত্র' বললেন বিসিবি প্রধান, 'পেছনে কারা আছে বের করা হবে'
প্রায় এক ঘণ্টা দশ মিনিটের সংবাদ সম্মেলন। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কয়েকবার ছাড়া প্রতিবারই খেলেছেন ফ্রন্টফুটে। ক্রিকেটারদের ১১ দফা দাবিকে বলেছেন ‘ষড়যন্ত্র’, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল ও বাকি বিশ্বের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই দাবিগুলো তোলা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তবে ১১ দফা দাবি মেনে নিয়ে ক্রিকেটারদের আবার মাঠে ফেরানো হবে কি না, এ নিয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা দেননি। ভারত সফর বাতিল হয়ে যাওয়া আশংকা নিয়েও বল ঠেলে দিয়েছেন ক্রিকেটারদের কোর্টে। বলেছেন, তারা খেলতে চাইলে খেলবে, না খেলতে চাইলে কিছু করার নেই।
কাল মিরপুর একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে ১১ দফা দাবি জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের পেশাদার ক্রিকেটাররা। সাকিবের নেতৃত্বে সেখানে ছিলেন জাতীয় দলেরসহ দেশের প্রায় সব শীর্ষ ক্রিকেটার। সেই দাবিদাওয়া পূরণের আগ পর্যন্ত তারা কোনো ধরনের ক্রিকেটীয় কর্মকান্ডে অংশ নেবেন না, সেটা জানিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিসিবিতে জরুরি বৈঠকে বসেছিল বোর্ড। এরপর দুপুর তিনটার পর মিরপুর স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
শুরু থেকেই তিনি ক্রিকেটারদের এই দাবি দাওয়া নিয়ে তুমুল বিস্ময় প্রকাশ করেন,’ যে দাবিগুলো চাইলেই পাবে, সেগুলো আমাদের না বলে সরাসরি বয়কটে যাওয়া পূর্বপরিকল্পিত একটা ব্যাপার। যে জিনিস ওরা চাইলেই পাবে, সেটা আমাদের কাছে চাচ্ছে না কেন?’
বিশেষ করে ভারত সিরিজের আগে এই ধরনের একটা আন্দোলন বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিপক্ষে একটা চক্রান্ত বলে তিনি মনে করেন, ‘ক্রিকেটাররা এসব দাবি আমাদের কাছে করলেই আমরা তা মেনে নিতাম। কিন্তু আমাদের কাছে করল না। আমাদের কোনো সুযোগ না দিয়ে বয়কটের ঘোষণা দিল। ওরা যখন যেটা চেয়েছে সেটা পেয়েছে? এখন দাবিগুলোর জন্য ওরা খেলা বন্ধ করে দেবে? এটি বড় কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে।"
"বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিপক্ষে বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটি শুরু হয়েছে বিসিবির একজন পরিচালক গ্রেফতারের পর। উনি গ্রেফতার হবার পর পুরো ব্যাপারটা নিয়ে বাইরের লোক ষড়যন্ত্র করছে। আইসিসির কাছে অভিযোগ করে জিম্বাবুয়ের মতো আমাদের বোর্ডকে সাসপেন্ড করাতে চেয়েছে। প্রথম ধাপে ক্রিকেটারদের ব্যবহার করছে। হ্যাঁ, ক্রিকেটাররা মিডিয়ার কাছে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়ায় আইসিসি, এসিসি থেকে শুরু করে সব জায়গায় আমাদের জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় ওরা তাই সফল হয়েছে।আমার কাছে কাল থেকে আইসিসিসহ বিভিন্ন বোর্ডের লোকজন ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের কী হলো?’
কিন্তু এই ষড়যন্ত্র কারা করছে? নাজমুল হাসান মনে করছেন, সব ক্রিকেটার এটা জানে না। গুটিকয়েক ক্রিকেটারের ইন্ধনেই এটা হচ্ছে। সঙ্গে বোর্ডের ভেতরেও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই সব নাম বেরিয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন, ‘সব খেলোয়াড় এটি জেনেশুনে করছে, আমার তা মনে হয় না। এক-দুজন তেমন থাকতে পারেন। বাকিরা ব্যাপারটা না জেনেই করছে। দলের মধ্যে কেউ যদি থেকে থাকে, যে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে-- তাকে আমরা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। পুরো প্ল্যান জানে এক-দুজন। খুব শিগগির সব প্রকাশ হবে।’
কিন্তু ভারত সফর কি হুমকি পড়ে গেল না? পাপন বলললেন, ভারত সফর হবে বলে তিনি আশাবাদী। কিন্তু দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলে দিলেন, ‘খেলোয়াড়েরা না খেলতে চাইলে তো আমাদের কিছু করার নেই। ক্যাম্পে গেলে ভালো, না খেলতে গেলে আমাদের কিছু করার নেই।