অস্ট্রেলিয়ার জয়টা শুধু বিলম্বই করতে পারলেন ব্লান্ডেল
অস্ট্রেলিয়া ৪৬৭ ও ১৬৮/৫ ডিক্লে
নিউজিল্যান্ড ১৪৮ ও ২৪০ অলআউট
ফলঃ অস্ট্রেলিয়া ২৪৭ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচঃ ট্রাভিস হেড
অস্ট্রেলিয়া যে হারছে না, সেটা তৃতীয় দিন শেষেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ডড় করতেও প্রায় অলৌকিক কিছুর দরকার হতো নিউজিল্যান্ডের। টম ব্লান্ডেল নিজের ঘাড়ে দায়িত্বটা নিয়েই নিয়েছিলেন, কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে সমর্থন পেলেন না কোনো। মেলবোর্ন টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলেই তাই নিশ্চিত হয়ে গেছে কিউইদের পরাজয়, ২৪৭ রানে হেরে গেছে ম্যাচটা। জেমস প্যাটিনসন আর নাথান লায়ন মিলেই করে ফেলেছেন কাজটা।
ওয়েড আর হেড মিলে আজ চতুর্থ দিনের শুরুটা করেছিলেন। দুজন ৩১ রান যোগ করেছিলেন ১০ ওভারের মধ্যে। এরপর ২৮ রান করে ওয়াগনারের বলে বোল্ড হয়ে যান হেড। পেইন ইনিংস ঘোষণাও করে দেন তখনই।
চতুর্থ ইনিংসে কিউইদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৮৮, সেজন্য বিশ্বরেকর্ড গড়ার দরকার ছিল তাদের। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা টম ল্যাথামের এবার ধৈর্যচ্যুতি হয়ে গেল নবম ওভারেই। প্যাটিনসনের অফ স্টাম্পের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ চলে গেছে উইকেটের পেছনে, পেইন নিয়েছেন ভালো একটা ক্যাচ। ৮ রানে ফিরেছেন ল্যাথাম। উইলিয়ামসনের সুযোগ ছিল প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা পুষিয়ে দেওয়ার। কিন্তু এই ইনিংসে আরও বেশি ব্যর্থ, কোনো রান না করেই প্যাটিনসনের বলে হয়ে গেছেন এলবিডব্লু। রিভিউ নিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক, কিন্তু আম্পায়ারস কলে কপাল পুড়েছে তার।
প্যাটিনসন সেই ওভারেই পেয়ে গেছেন আরেকটি উইকেট। অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা কাট করতে গিয়ে রস টেলর বল নিয়ে এসেছেন স্টাম্পে, ফিরেছেন ২ রান করেই। এরপর ব্লান্ডেল আর নিকোলসে পাল্টা আক্রমণ শুরু নিউজিল্যান্ডের। ব্লান্ডেল দলের সঙ্গে আছেন অনেক দিন থেকেই, কিন্তু খেলার সুযোগ হচ্ছিল না। টেস্টে কতটা কী করতে পারবেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন ছিল। প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার পর সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হচ্ছিল। কিন্তু সব উত্তর দিয়েছেন এই ইনিংসে। ১০৬ বলে পেয়েছেন ফিফটি, এরপর আরও বেশি আগ্রাসী হয়েছেন। কপালটা অবশ্য ভালো তার, শুরুতেই এলবিডব্লু হতে পারতেন। কিন্তু আম্পায়ার এলবিডব্লু হতে পারতেন। কিন্তু আম্পায়ার আউট দেননি, অস্ট্রেলিয়াও রিভিউ নেয়নি।
সেটার জন্য অনেকক্ষণ তাদের ভুগিয়ে গেছেন ব্লান্ডেল। কামিন্স-স্টার্কদের বলে দারুণ পুল করছিলেন, নিয়মিত সচল রাখছিলেন রানের চাকা। চতুর্থ উইকেটে নিকোলসকে নিয়ে যোগ করেছেন ৫৪ রান। এরপর লায়নের বলে স্টাম্পড হয়েছেন নিকোলস, ফিরেছেন ৩৩ রান। ওয়াটলিংয়ের সঙ্গে ব্লান্ডেলের জুটিও যন্ত্রণা দিচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। দুজন ২০ ওভার খেলে ৭২ রান তুলে ফেলেছিলেন। এরপরেই আবার লায়নের জাদু, এবার বেশ টার্ন করা বলটা ওয়াটলিংয়ের ব্যাটের ভেতরের দিক ছুঁয়ে চলে গেছে লেগ স্লিপে। ডি গ্র্যান্ডোম ৯ রান করে লায়নের বলেই আউট, তবে মিচেল স্যান্টনার বেশ কিছুক্ষণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন ব্লান্ডেলকে। কিন্তু ২৭ রান করে লায়নের বলেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। ব্লান্ডেল পৌঁছে গেছেন সেঞ্চুরির কাছাকাছি, কামিন্সের বলটা মিড অনে ঠেলে দিয়েছেন ওপেনার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেই তার প্রথম সেঞ্চুরি। এমসিজির কিউই সমর্থকেরা শার্ট খুলেই উদযাপন করেছে এই সেঞ্চুরি। এরপর সাউদি আউট হয়ে গেছেন, আর ব্লান্ডেল শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১২১ রান।