টাইব্রেকারে মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে মান রাখল বসুন্ধরা
বড় দলগুলোর মতো বসুন্ধরা কিংসও বিপদে পড়ে গিয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে খেলা গড়ায় কোয়ার্টার ফাইনালে। আধঘন্টায়ও দুইদলকে আলাদা করা গেল না। টাইব্রেকারে ভাগ্য নির্ধারণ তাই। ভাগ্যের খেলায় মুক্তিযোদ্ধা অসহায়, প্রথম দুইটি কিক থেকেই গোল করতে ব্যর্থ তারা। আনিসুর রহমান জিকো তাই নাটকের শেষ অঙ্কের নায়ক। টাইব্রেকারে নিখুঁত বসুন্ধরা ৪-১ ব্যবধানে জিতে উঠে গেছে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে।
ঢাকা আবাহনী, চট্টগ্রাম আবাহনী, সাইফ স্পোর্টিং বিদায় নিলেও তাই টিকে থাকল বসুন্ধরা কিংস। তবে শেষ কোয়ার্টার ফাইনালের শুরুটা যেভাবে হয়েছিল তাতে খেলা যে এতোদূর গড়াবে সেরকমও মনে হচ্ছিল না। ম্যাচের ৩ মিনিটে বক্সের ভেতর বাম দিকে থাকা মতিন মিয়ার পাস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিল জালাল কেদু।
অমন দাপুটে শুরুর পর প্রথমার্ধে আরও বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বসুন্ধরা কিংস। বখতিয়ার দুশবেকভ, মাহবুবুর রহমান সুফিল, কেদু- সবাই গোলে শট করেছিলেন। তবে কাজের কাজটা করতে পারেননি কেউ। মুক্তিযোদ্ধা সে তুলনায় আক্রমণে ছিল সাদামাটা। তবে একটি সুযোগ পেয়েছিল তারা প্রথমার্ধে। জিকো তখন সজাগ ছিলেন, তাই আর গোল পায়নি মুক্তিযোদ্ধা।
আক্রমণে ভয়ঙ্কর না হলেও শুরুতে গোল খেয়েও গুছিয়ে খেলার চেষ্টা ছিল মুক্তিযোদ্ধার ভেতর। রক্ষণে থ্রি ম্যান ব্যাকলাইন খেলিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেছিল মুক্তিযোদ্ধা। বসুন্ধরা দ্বিতীয়ার্ধে তাই অনেকটাই হেই হারিয়েছিল। এবারের ফেডারেশন কাপে অবশ্য বসুন্ধরার এই চেহারাটাও পুরনো।
দ্বিতীয়ার্ধে বলার মতো আক্রমণ ছিল বসুন্ধরার একটি। কলিনদ্রেসের বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া শট লেগেছিল সাইডনেটে। অন্যপ্রান্তে মুক্তিযোদ্ধা আত্মবিশ্বাসী হচ্ছিল একটু করে। ক্যামেরুন স্ট্রাইকার বিয়াগে পল এমিলি জিকোর সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে সহজ সুযোগ নষ্ট করার পর দমে না গিয়ে তাই ৭৬ মিনিটে সমতায় ফেরে মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযোদ্ধার সমতায় ফেরা ইয়াসিন খানের এক ভুলে। বাম দিক থেকে উড়ে আসা একটি ক্রস সিক্স ইয়ার্ড বক্সের ভেতর ছেড়ে দিয়েছিলেন ইয়াসিন। জিকোর সঙ্গে ইয়াসিনের সমন্বয়হীনতার সুযোগ নিয়ে বল পেয়ে যান মেহেদি হাসান। এর পর বসুন্ধরাকে প্রাপ্য শাস্তিটা দিয়ে দলকে সমতায় ফেরান তিনি।
সমতায় ফেরার পর এগিয়েও যেতে পারত মুক্তিযোদ্ধা। কর্নার থেকে এমিলি ভালো একটি হেড করেছিলেন, তবে জিকো নিয়মমাফিক সেভ করে আর এগুতে দেননি প্রতিপক্ষকে। অতিরিক্ত সময়ে মুক্তিযোদ্ধা নিজেদের খোলসবন্দী করে রেখেছিল আরও। বসুন্ধরা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেই ভাগ্য গড়ে ফেলার সুযোগ পেয়েছিল। আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার নিকো দেলমন্তের প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে থেকে দারুণ এক শট করেছিলেন গোল। কিন্তু বারপোস্টে লেগে বল ফেরত আসার পর রবিউল হাসান ও কলিনদ্রেস দুইজনই গোল করতে ব্যর্থ হন। খেলা তাই টাইব্রেকারেই গড়ায়।
মুক্তিযোদ্ধার নরিতো হাসহিগুচি ও তরিকুল ইসলাম- দুইজনই দুর্বল শট মেরে দলকে ভুগিয়েছেন। প্রথম দুইটি শট জিকো সহজ সেভ করে তাই অনেকদূর এগিয়ে দিয়েছিলেন দলকে। বসুন্ধরার হয়ে বখতিয়ার, দেলমন্তে, ফাহাদ ও কলিনদ্রেস চারজনই সফল কিক নিয়ে বাকি কাজটা সেরেছেন আরামেই। সেমিফাইনালে বসুন্ধরার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ পুলিশ এফসি।