'তারাই আসল ফুটবলার', স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে নিয়ে হুলিও সিজার
একটা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি অবদান ছিল ফুটবলারদের- আপনি এমন ঘটনা তো প্রতিদিন শুনতে পাবেন না। বিশেষ করে নিজে যদি ফুটবলার হন, তাহলে নিশ্চয় ব্যাপারটা আবেগি করে তুলবে আপনাকে। আপনি কল্পনা করতে চাইবেন, কেমন ছিল তখনকার সময়ে ফুটবল খেলা! ব্রাজিলের সাবেক গোলরক্ষক হুলিও সিজারের অনুভূতি হচ্ছে এমনই। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যদের সঙ্গে লাঞ্চ করার পর তিনি বলছেন, তারাই আসল ফুটবলার। দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে গল্প করবেন, কাদের সঙ্গে লাঞ্চ করেছেন তিনি।
মোটামুটি একদিনের সফরে বাংলাদেশ এসেছেন সিজার, উপলক্ষ্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশ-বুরুন্ডির সেমিফাইনাল দেখা। ছেলে-মেয়ে ফুটবলারদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন কিছু, আর লাঞ্চ করেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সঙ্গে। সিজার জানাচ্ছেন সেই অনুভূতি, “আমার সুযোগ হয়েছে, আমি খুবই আনন্দিত, সাবেক এই ফুটবলারদের সঙ্গে লাঞ্চ করতে পেরে। আমার সুযোগ ছিল তাদের সঙ্গে দেখা করার। তারাই তো আসল ফুটবলার।”
“তারা যখন খেলেছিল, পরিস্থিতি সহজ ছিল না। যুদ্ধ চলছিল। তারা জাতিকে আশা দিয়েছিল। মানসিকভাবে এই সময় শক্ত থাকতে হয়, যখন যুদ্ধ চলে। তারা শক্ত ছিল। তারা চেষ্টা করেছিল, তাদের দেশকে গর্বিত করতে। আমার জন্য এটা দারুণ অভিজ্ঞতা। আমি দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারব, আমি তাদের সঙ্গে লাঞ্চ করতে পেরেছি। আমি বলতে পারব, তাদের সঙ্গে কী হয়েছিল।”
এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসায় গিয়েছিলেন সিজার, “আমি জাতির জনকের বাসায় গিয়েছিলাম। আমার জন্য আবেগময় ব্যাপার ছিল এটি। আগে তার সম্বন্ধে যথেষ্ট জানতাম না। এখন তার সম্বন্ধে কিছু জানার চেষ্টা করব, দিনের কিছু অংশ ব্যয় করব- তাকে ও তার দেশকে জানতে। আশা করি, এই শহর জিততে পারবে। আমার ও মিগেলের উপস্থিতি দলের জন্য একটু সৌভাগ্য বয়ে আনবে। ফেডারেশনে এসে ছেলে-মেয়ে, বিশেষ করে গোলকিপারদের সঙ্গে দেখা হয়ে ভাল লাগছে। কিছু টিপস দিয়েছি। বিশেষ করে মেয়েদের।”
সব মিলিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন তাকে খেলোয়াড়ি জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানাচ্ছেন তিনি, “প্রথমে আমি বলতে চাই, এখানকার পরিস্থিতি, মনে করিয়ে দিচ্ছে, যখন খেলোয়াড় ছিলাম। এটা দারুণ। ধন্যবাদ দিতে চাই, প্রেসিডেন্টকে এখানে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। আমি শুধু একদিন থাকব, দুর্ভাগ্যজনকভাবে। আমি এই দেশ নিয়ে আমার দেশের মানুষদের বলব।”
অবশ্য প্রশ্ন শুরুর আগে কৌতুক করে বলেছিলেন, ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির সঙ্গে সেই ম্যাচ নিয়ে প্রশ্ন না করতে। তবে সে প্রশ্ন হলো ঠিকই। সিজার বললেন, ম্যাচশেষে কেঁদেছিলেন তিনিও, “কেউ কিছু বলছিল না ড্রেসিংরুমে। সেই মুহুর্তটা আমাদের জন্য অবিশ্বাস্য ছিল, আমাদের কিংবা সমর্থকদের জন্য। সেই মুহুর্তে কী হয়েছিল, সেটা ব্যাখ্যা করা কঠিন। ড্রেসিংরুমে সবাই শান্ত থাকতে চাচ্ছিল, কেউ কাঁদছিল- তাদের মধ্যে আমি ছিলাম।”
“তবে আমাদের প্রেসিডেন্ট এসে বলেছিলেন, ফুটবলে এমন হয়। এর মানে এই না যে, এর আগে আমাদের যা অর্জন, তা মিলিয়ে যাবে।”