• বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর
  • " />

     

    টেস্টের জন্য প্রস্তুত সাইফ, দলের চাহিদা পূরণ করতে না পারার আফসোস মিঠুনের

    টেস্টের জন্য প্রস্তুত সাইফ, দলের চাহিদা পূরণ করতে না পারার আফসোস মিঠুনের    

    মোহাম্মদ মিঠুন যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। না তার শট, না ইয়াসির রাব্বির স্লিপে ক্যাচটা। নাঈম হাসানের বলটা কাট করতে গিয়েছিলেন, তবে স্লিপের বাধা টপকানো হলো না তার। সেঞ্চুরিটা উঁকি দিয়েও হারিয়ে গেল। সেন্ট্রাল জোনের আশার অনেকখানি মিলিয়ে গেল যেন তাতেই, মিঠুনের হতাশা তাই সেঞ্চুরির চেয়েও দলের জন্য ইনিংস কাজে না আসাটাই। 

    আগেরদিন বিকেলে নাঈম হাসানও খানিকটা অবিশ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, নাঈমের বলেই স্লিপে ইয়াসির রাব্বির হাতে ধরা পড়ার পর। নাঈম অবশ্য সেঞ্চুরি বা এমন মাইলফলকের সামনে ছিলেন না, তবে প্রথম ইনিংসের মতোই লম্বা ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। দুজনই হতাশ, একই বোলার-ফিল্ডার কম্বিনেশনে আউট হয়ে। 

    বিসিএলে আপাতত এ রাউন্ডের পরই নাঈম-মিঠুন যাচ্ছেন পাকিস্তানে। টেস্ট স্কোয়াডে আছেন দুজনই, অবশ্য দুজনের লক্ষ্য বা পরিস্থিতি একটু আলাদা। সাইফের অভিষেক হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, আর কোচের বলা ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী সুযোগ পাচ্ছেন মিঠুনও। তবে তিনি আপাতত তেমন কিছু জানেন না, সুযোগ পেলে দলের চাহিদা পূরণ করতে না পারার আফসোসটা আর করতে চান না।  

    ভারত সফরে কলকাতা টেস্টেই অভিষেকের সম্ভাবনা ছিল সাইফের, তবে এর আগেই আঙুলের চোট তাকে ছিটকে দিয়েছিল। তার সামনে আবার সুযোগ আসছে রাওয়ালপিন্ডিতে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেনিংয়ে ভাবা হচ্ছে তাকেই। সাইফ বলছেন, স্বপ্নপূরণ মতো ব্যাপার এটি, তবে তিনি প্রস্তুত। 

    “আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলাম”, বিসিএলে ম্যাচের পর বলেছেন সাইফ, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ সিরিজে হাত ফেটে গিয়েছিল। (তবে) এখন আরও বেশি সময় পেয়েছি। কাজ করেছি (নিল) ম্যাকেঞ্জির সাথে, (রায়ান) কুকের সাথে। সব মিলিয়ে খুবই প্রস্তুত মনে হচ্ছে নিজেকে, সুযোগ পেলে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।”

    বিসিএলের এ ম্যাচে ৩৩৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ৫৯ রানের লম্বা ইনিংস খেলেছিলেন সাইফ। একদিকে উইকেট পড়ে যাচ্ছিল, তিনি আউট হয়েছিলেন ৯ম ব্যাটসম্যান হিসেবে। সাইফ বলছেন, টেস্টেও এমন পরিস্থিতি হলে লম্বা ইনিংস খেলার ইচ্ছা তার, “পরিস্থিতির যা চাহিদা থাকবে (তেমনই খেলার চেষ্টা করব)। যদি একপাশে উইকেট পড়ে, দলের চাহিদা থাকে (যে আমি ক্রিজে থাকি), তাহলে আমি যতো ওভার পারি খেলব। সবকিছুই তো পরিস্থিতি, উইকেটের ধরনের ওপর নির্ভর করে।” 

    সব মিলিয়ে টেস্টের আগে বিসিএলের এই এক রাউন্ড খেলা সহায়তা করবে বলেই আত্মবিশ্বাস তার, “আমরা যারা পাকিস্তান যাচ্ছি, এই ম্যাচ আমাদের জন্য খুব ভাল হয়েছে। উইকেট শুরুতে পেসারদের জন্য সহায়ক ছিল, ওদের পেসার ভাল ছিল। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে হাসান (মাহমুদ) খুব পেসে বোলিং করে, রুবেল জোরে করে। প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। ওদের স্পিনারও ভাল ছিল। নাঈম ছিল, তাইজুল (ইসলাম) ভাই ছিল। আমার মনে হয়, খুব ভাল প্রস্তুতি হয়েছে এই ম্যাচ দিয়ে।”

    সাইফ যখন টেস্টের স্বাদ নিতে প্রস্তুত, মিঠুন তখন আরেকবার শতভাগ দেওয়ার আশায় নামবেন সুযোগ পেলে। ৭ টেস্ট খেলে ফেলেছেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৭ রানের একটি ইনিংস ছাড়া ফিফটি নেই তার আর। ভারতে ৪ ইনিংসে করেছেন ৩৭ রান, পাকিস্তান সফরে তার জায়গা পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট সংশয় ছিল তাই। 

    অবশ্য ডমিঙ্গো বলছেন, মিঠুনকে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৫-৬-এ ভাবছেন তারা। মিঠুন অবশ্য তার ক্যারিয়ারের সব ইনিংসেই খেলেছিলেন ৪ নম্বরে। তবে আপাতত তিনি পজিশন নিয়ে ভাবছেন না, “আসলে ওভাবে বলা শক্ত। দলের হয়ে যখন খেলি, দলের চাহিদা পূরণ করাই প্রথম কাজ। যদি ওভাবে বলি, নেতিবাচক অনেক কিছুই চলে আসে। যে আমার পজিশন কোনটা। অবশ্যই এমন না যে, আমি খারাপ পজিশনে খেলছি। ভাল পজিশনেই খেলছি। সেটা নিয়ে আমার আপত্তি নাই যে পজিশন পাচ্ছি না। আফসোস একটাই বলতে পারেন, আমি যেখানেই খেলছি, আমার কাছে দল যেটি আশা করে, সেটি ঠিকঠাক দিতে পারছি না।” 

    “আমি দুঃখিত, আসলে জানি না যে আমি খেলব কিনা। খেললে কোথায় খেলব। খেললে যেখানেই খেলি, শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব আমার দিক থেকে। বাকিটা ফল বলবে। যদি আমার ভাগ্যে থাকে, যদি চেষ্টাটা ঠিকঠাক হয়, তাহলে ফল এমনিতেই আসবে।”