• এএফসি কাপ
  • " />

     

    মালদ্বীপের মাঠে ড্র করেও বাদ পড়ল আবাহনী

    মালদ্বীপের মাঠে ড্র করেও বাদ পড়ল আবাহনী    

    ফুলটাইম 
    মাজিয়া ০-০ আবাহনী 


    ম্যাচ শেষের বাঁশির পর বেশ কিছুক্ষণ গড়িয়েছে, আবাহনীর যাত্রাও থেমেছে তাতে। আবাহনী মিডফিল্ডার এডগার বের্নাহার্ড তবুও মাঠ ছাড়বেন না। তাকে ধরে টেনে নিয়ে সতীর্থরা বের হলেন কোনোমতে। মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন মাজিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে আবাহনী করেছে গোলশূন্য ড্র। ঘরের মাঠে দুই অ্যাওয়ে গোলেই তাই কপাল পুড়ল গতবারের জোনাল সেমিফাইনালিস্টদের। দুই লেগ মিলে ২-২ ড্রয়ে অ্যাওয়ে গোলের নিয়মে বাছাইপর্ব থেকেই বাদ পড়তে হলো মারিও লেমোসের দলকে।

    মালদ্বীপ জাতীয় স্টেডিয়ামে দুইদলের খেলা গোলশূন্য ড্র হলেও সেটা শেষে গিয়ে রূপ নিয়েছে যুদ্ধে। ডাগ আউটে মাজিয়া কোচ সেকুলোভস্কির সঙ্গে সোহেল রানার এক দফা হাতাহাতিও হয়েছে। ম্যাচেও বেশ কয়েকবার রেফারির সিদ্ধান্তে আবাহনীর খেলোয়াড়রা অসোন্তষ দেখিয়েছেন। সবকিছুর পরও আবাহনীকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

    পরের রাউন্ডে যেতে আবাহনীকে এই ম্যাচ জিততেই হত, অথবা ড্র করতে হত অন্তত ৩-৩ ব্যবধানে। সমীকরণ ছিল কঠিন। তবে একাদশে ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা ফেরায় কিছুটা ভরসাও সঙ্গী হয়েছিল আবাহনীর। মাজিয়া শুরু করেছিল ধীরস্থির ভাবে। প্রথমার্ধে আবাহনীর গোলের প্রচেষ্টাই চোখে পড়ল বেশি। ২৮ মিনিটে নাবিব নেওয়াজ জীবন, এডগারের দারুণ সমন্বয়ের পর বক্সের ভেতর বল পেয়ে গিয়েছিলেন সাদ উদ্দিন। গোলে শটও নিয়েছিলেন। তবে মাজিয়ার গোলরক্ষক অভিয়াস আজিজি ভুল করেননি। কাছের পোস্টে ভালো সেভ করে আবাহনীকে এগিয়ে যেতে দেননি তিনি। 

    দুই মিনিট পর কেরভেন্স বেলফোর্ট দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া না করলে সে আফসোসটা ভুলতে পারত আবাহনী। মামুনুল ইসলামের ফ্রি কিকে গোলের একেবারে সামনে থেকেও বলে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি বেলফোর্ট। ঘুমিয়ে থাকা মাজিয়া প্রথমার্ধের শেষদিকে জেগে উঠেছিল আক্রমণে। আবাহনী গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল বিরতির খানিক আগে ইব্রাহিম মাহুদির শট ঠেকিয়ে নিজের কাজটাও করে রেখেছিলেন তখন। 

    আগের ম্যাচে এই ইব্রাহিম আর কর্নেলিয়াসই সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছিলেন আবাহনীকে। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মাজিয়ার অধিনায়ক আসাদুল্লাহও। এই তিনজন মিলে দ্বিতীয়ার্ধে বড় একটা সময় আবাহনীকে ব্যস্ত রেখেছেন রক্ষণে। এর ভেতর দারুণ কিছু সুযোগও হাতছাড়া করেছেন কর্নেলিয়াসরা। ৭০ মিনিটে বাদশাও একবার দলকে বাঁচিয়েছেন আসাদুল্লাহর শট ব্লক করে। পরের মিনিটে শহীদুল আলম ভয়ঙ্কর ব্যাকপাস দুই দফার চেষ্টায় দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়ে আবাহনীর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। 

    গোলের সুযোগ তৈরিতে দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনীও খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না। কিন্তু কোনো কিছুই যেন আর কাজে আসছিল না এদিন লেমোসের দলের জন্য। ৫৬ মিনিটে এডগারের দারুণ ক্রস গোলের সামনে গিয়ে পড়েছিল, সেখানে বেলফোর্ট, সানডে চিজোবা- দুইজনই ছিলেন। কিন্তু একজনও পা ছোঁয়াতে পারলেন না সে ক্রসে। 

    জীবন এদিন নাম্বার টেন রোলেই শুরু করেছিলেন। কিন্তু কার্যকরী কিছুই আসছিল না তার কাছ থেকে। ম্যাচের ঘন্টাখানেক পার হওয়ার পরই জীবনকে উঠিয়ে রুবেল মিয়াকে মাঠে নামান লেমোস। সেই রুবেলই আবাহনীর ভাগ্য ফিরিয়ে দিতে পারতেন। ৮১ মিনিটে বেলফোর্ট একাই বক্সের ভেতর ঢুকে রুবেলকে বল বাড়িয়েছিলেন। ১২ গজ দূর থেকে রুবেলের করা ভলি গেছে বারপোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে। 

    শেষদিকে আবাহনী জান-প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে গেছে। তবে মাজিয়া সেই চাপে মচকে যায়নি। বরং রক্ষণে দারুণ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে 'যুদ্ধ'টা শেষ পর্যন্ত জয়ে করে নিয়েছে তারা।