চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরাকে আটকে দিল পুলিশ
ফুলটাইম
বসুন্ধরা কিংস ১-১ বাংলাদেশ পুলিশ এফসি
শক্তির বিচারে দুইদলের পার্থক্য যোজন যোজন। একদল প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন, আরেকদল প্রথমবার এসেছে সর্বোচ্চস্তরে। এমন ম্যাচ ড্র হওয়া তাই বড় চমকই। বসুন্ধরা কিংস বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আটকে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির কাছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়ার্ধেই হয়েছে দুই গোল। তৌহিদুল আলম সবুজ প্রথমে বসুন্ধরা কিংসকে এগিয়ে দিলেও, নুরুল নাইম ফয়সালের আত্মঘাতী গোল কপাল পুড়িয়েছে বসুন্ধরার।
লিগের প্রথম ম্যাচে শেষ মুহুর্তের গোল মুক্তি পেয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। ৫৫ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েও হাতছাড়ার করার মাশুল আসলে গুণেছে অস্কার ব্রুজোনের দল। আর চারদিন আগে আবাহনীর বিপক্ষে খেলার পর একাদশে ৫ পরিবর্তন এনেও নিকোলা ভিট্রোভিচের দল পেয়েছে মহামূল্যবান এক পয়েন্ট।
বসুন্ধরায় নাম লেখানোর পর এই ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছে তরুণ ডিফেন্ডার তারিক কাজির। রাইটব্যাক হলেও ব্রুজোন তাকে খেলিয়েছেন সেন্টারব্যাক হিসেবে। একাদশে ছিলেন বসুন্ধরার বাকি ৪ বিদেশী খেলোয়াড়ই। তবে এর পরও ৪-৩-৩ ফর্মেশনে শুরু করা বসুন্ধরাকে প্রথমার্ধে পুলিশের আঁটসাঁট রক্ষণ ভাঙতে ভালোই বেগ পেতে হলো। আর পুলিশের লক্ষ্য ছিল কাউন্টার অ্যাটাকে আক্রমণ করার। দুইদলের কেউই অবশ্য সেভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি প্রথমার্ধে। গোলশুন্য প্রথমার্ধ পুলিশের জন্য যতখানি প্রেরণাদায়ী ছিল, বসুন্ধরার জন্য ছিল তার উলটোটা।
দলের ছন্দহীন খেলায় বিরতির সময় বসুন্ধরা কোচ ব্রুজোনের মেজাজ হারানোর যথেষ্ট কারণও ছিল। তবে তিনি রাগ ঝাড়লেন রেফারির ওপর। অবশ্য কী কারণে অমন চটে গিয়েছিলেন ব্রুজোন সেটা জানা যায়নি। তবে বিরতির সময় যে খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করেছিলেন সেই ছাপ পাওয়া গেল বসুন্ধরার দ্বিতীয়ার্ধের খেলায়।
বখতিয়ার দুশবেকভকে দুই সেন্টারব্যাকের ঠিক ওপরে খেলিয়ে মিডফিল্ডের নিয়ন্ত্রণটা তখন আরও ভালোভাবে নেয় বসুন্ধরা। গোল পেতে এর পর খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। বাম প্রান্ত থেকে সাজানো আক্রমণে দানিয়েল কলিনদ্রেসের ক্রস গিয়ে পড়ে বক্সের ঠিক ভেতরে। আর্জেন্টাইন নিকোলাস দেলমন্তে প্রথম সুযোগেই নিচু ভলিতে গোলে শট করেন। গোলরক্ষক সাইফুল ইসলাম সেই শট ঠেকিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। সবুজ ছিলেন দূরের পোস্টে, টোকা দিয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন তিনি।
প্রথমার্ধ না হলেও এর পরের সময়টুকু নিশ্চিতভাবেই আফসোসে পোড়াবে বসুন্ধরাকে। দুই দফায় ফয়সাল আর কলিনদ্রেসের শট পুলিশ এফসির গোলরক্ষক ভালো সেভ করে দলের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। পুলিশ সে সময় নিজেদের অর্ধে যতোখানি ব্যস্ত ছিল তাতে বসুন্ধরা আরেকটু সচেষ্ট হলে বোধ হয় দ্বিতীয় গোলটিও পেয়ে যেতে পারত।
ওই ভুলের শাস্তিটাই ৭৩ মিনিটে বসুন্ধরাকে বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বসুন্ধরার কাছ থেকে নিজেদের অর্ধে বল ছিনিয়ে দ্রুত আক্রমণে উঠে গিয়েছিল তারা। পুলিশের এমএস বাবলু এর পর বক্সের ভেতর ঢুকে বাম পায়ে আড়াআড়ি এক শট নেন। বাবলুর শট দূরের পোস্টে লাগলেও, ফিরতি বল ফয়সালের গায়ে লেগে ঢুকে যায় নিজের জালে।
বাকি সময়ে বসুন্ধরার সঙ্গে সমানতালে টেক্কা দিয়েছে পুলিশ এফসি। ম্যাচ তাই শেষ হয়েছে দুইদলের পয়েন্ট ভাগাভাগিতে। দিনের অন্য ম্যাচে শেখ রাসেলকে আটকে দিয়েছে রহমতগঞ্জ। দুইদলের খেলা শেষ হয়েছে গোলশূন্যভাবে।