• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    আবাহনীর জবাব দেওয়ার সুযোগ, মোহামেডান কোচের জন্য 'দেশী ক্লাসিকো'

    আবাহনীর জবাব দেওয়ার সুযোগ, মোহামেডান কোচের জন্য 'দেশী ক্লাসিকো'    

    কবে, কখন 
    ঢাকা ডার্বি 
    আবাহনী লিমিটেড-মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব 
    ৪ মার্চ, সন্ধ্যা ৬.৩০ 
    বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম 


    আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথের যে ‘পুরনো দিন’ নেই সে কথাও পুরনো হয়ে গেছে এখন। দেশের ফুটবলেই তো সমর্থকদের জন্য হাহাকার। তবে এরপরও গুটিকয়েক যে কজন নিয়মিত ঘরোয়া ফুটবলের খবর রাখেন তাদের কাছে এই দুই দলের লড়াইয়ের আবেদন কমেনি। দুই দলের খেলোয়াড়রা বড় হয়েছেন ‘অতীত জৌলুসের’ গল্প শুনে। জৌলুস না থাকলেও একে অন্যের মুখোমুখি হওয়ার সময় জ্বালানির অভাব হয় না তাদের। ডার্বির মাহাত্ম্য আসলে এখানেই। 

    পয়েন্ট টেবিলে কে কোন অবস্থানে আছে, দুই দলের শক্তির পার্থক্য কতোখানি, ইতিহাস কী বলে, রেকর্ডে কী আছে- এসব প্রশ্ন নস্যি ডার্বির কাছে। সবচেয়ে বড় প্রমাণটা এই দুই দলের শেষ ম্যাচ। গত মৌসুমে মোহামেডান হাবুডুবু খাচ্ছিল পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। প্রথম লেগে আবাহনী তাদের উড়িয়ে দিয়েছিল ৩-০ তে। লিগে বসুন্ধরাকে ধরতে না পারলেও এএফসি কাপের সাফল্যে আবাহনী তখন মোহামেডানের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। চার বছর ধরে এই দুই দলের ম্যাচ একচেটিয়াভাবে জিতেছে আবাহনী। এর পর সেই মোহামেডানই মাটিতে নামিয়ে আনল তাদের। ৪-০ গোলে ডার্বি হারল আবাহনী। 

    আরেকবার যখন মোহামেডানের মুখোমুখি আবাহনী তখন তাদের পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস সেই স্মৃতিই তুলে আনছেন। এবার একটা উপযুক্ত জবাব দেওয়া লক্ষ্য তার, “গতবার মোহামেডানের কাছে হারের পর সবাই আমাদের সমালোচনা করেছিল। সেটা যৌক্তিকই ছিল। এবার আমাদের প্রমাণ করতে হবে আমরাই সেরা।” 

    লেমোসের কথায় ডার্বির ঝাঁঝ। তার কাছে ঢাকা ডার্বি বাকি আর যে কোনো ডার্বির মতো সমান গুরুত্বের, “আমি দুই ক্লাবের অতীত ইতিহাসের কথা জানি। একসময় মাঠে প্রচুর দর্শক আসতো, মারামারিও হত। এখন মাঠে দর্শক কম আসে। তবে আমি নিশ্চিত দুই দলের সমর্থকেরাই এই ম্যাচ দেখতে মাঠে আসবে।”


    মোহামেডানের ব্রিটিশ কোচ শোন লেইন এই ডার্বির কথা জানতেন বাংলাদেশে আসার আগ থেকে। ক্লাবের সঙ্গে যখন কথা-বার্তা চলছিল তখন ইন্টারনেট ঘেটে জেনেছেন দুই ক্লাবের ইতিহাস। তার কাছে মনে হয়েছে এটা দেশী এল ক্লাসিকো। 

    মোহামেডান আবাহনীর বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছে ১০ দিনের বিরতির পর। আবাহনীর অবস্থা উলটো। মাত্র ২ দিন আগে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে খেলেছে তাঁরা। বিশ্রামের এই তারতম্য পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ম্যাচে। যদিও শক্তির হিসেবে আবাহনী যোজন যোজন এগিয়ে। 
     
    এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত আবাহনীর খেলায় একটা পার্থক্য স্পষ্ট। গতবার তারা ছিল লিগের সবচেয়ে বেশি গল করা দল। এবার ৩ ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত ৪ গোল করেছে আবাহনী। গোল করার জন্য কিছুটা ধুঁকতেই হচ্ছে তাদের। তবে লেমোস বলছেন অন্য কথা। এই মৌসুমে তার লক্ষ্য দলকে রক্ষণাত্মক দিক দিয়ে আরেকটি শক্তিশালী করা। সেটা করতে গিয়েই গোল করার দিকে নজর কমেছে তার দলের, “গতবার বসুন্ধরা কিংস লিগ জিতেছে রক্ষণের জোরে। সেরা রক্ষণ যার তারাই শিরোপা যেতে। এবার আমার লক্ষ্যই ছিল রক্ষণ শক্তিশালী করা। তাই আপাতত এখনও গোল কম হচ্ছে কেন সেটি নিয়ে চিন্তিত নই আমি।” 

    মোহামেডান কোচ লেইন জানেন শক্তির পার্থক্যে তার দল পিছিয়ে আছে। কিন্তু ডার্বিতে ড্র করে পয়েন্ট বাগানোও তার লক্ষ্য নয়, “আমরা জিততেই মাঠে নামব। সেটা এক গোলের জয় হোক আর যাই হোক। ডার্বিতে জিততে চাই।”

    দলের খবর 
    নতুন করে ইনজুরিতে পড়েননি দুই দলের কেউ। মালি ডিফেন্ডার উসমান বার্থে আগে থেকেই চোটে পড়েছিলেন। মোহামেডান তাকে দলে পাচ্ছে না। লেইনের তার পছন্দের ৩-৫-২ ফর্মেশনই অনুসরণ করার কথা। তবে ম্যাচ যেহেতু আবাহনীর বিপক্ষে, তাই বেশিরভাগ সময় সেটা ঘুরিয়ে ৫-৩-২  হয়ে যেতে পারে। 

    আবাহনী কোচ ইঙ্গিত দিয়েছেন অপরিবর্তিন একাদশ নামানোর। তবে মোহামেডান ফরয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতেকে নিয়ে দুশ্চিন্তা তার। রক্ষণে গতিশীল ডিফেন্ডারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে, নাসিরুদ্দিন চৌধুরী জায়গা হারাতে পারেন টুটুল হোসেন বাদশার কাছে। 

    হেড টু হেড 
    দুই দলের মোট মুখোমুখি হয়েছে ১২৭ বার। তাতে আবাহনীর জয় ৫২ ম্যাচে, আর মোহামেডান জিতেছে ৪১ ম্যাচ। প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত ২৩ দেখায় ১০ বার জিতেছে আবাহনী। মোহামেডানের জয় এর অর্ধেক, ৫ ম্যাচে। 

    প্রেডিকশন 
    আবাহনী ২-১ মোহামেডান