• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    মোহামেডানকে এক হালি গোল ফেরত দিল আবাহনী

    মোহামেডানকে এক হালি গোল ফেরত দিল আবাহনী    

    ফুলটাইম
    আবাহনী লিমিটেড ৪-০ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব


    গ্যালারিতে দর্শক নেই, তাই উত্তাপও নেই। কিন্তু খেলোয়াড়দের গোল উদযাপনে এদিন একটু আলাদা ঝাঁঝ। তাতে জেদ আরেকটু বেশি। ম্যাচটা যে আবাহনী-মোহামেডানের সেটা বোঝা গেল ওই গোল উদযাপনে। তবে সেখানে দর্শক মোহামেডান। আবাহনী উৎসব করল চারবার, আর রাজ্যের অস্বস্তি নিয়ে সেটা সহ্য করতে হলো মোহামেডানকে। আবাহনী আসলে মোহামেডানকে হারিয়ে একটা প্রতিশোধই নিল। শেষ দেখায় মোহামেডানের কাছে একই ব্যবধানে হেরেছিল আবাহনী।

    মারিও লেমোসের দলের বড় জয়ে বড় অবদান কেরভেন্স বেলফোর্টের। জোড়া গোল করেছেন হাইতি ফরোয়ার্ড। নাবিব নেওয়াজ জীবন গোল পেয়েছেন, সানডে চিজোবার যোগ হয়েছে এক অ্যাসিস্ট। আর এডগার বের্নহার্ড এক গোলের সঙ্গে করেছেন এক অ্যাসিস্টও। ঢাকা ডার্বির ইতিহাসে শেষ কোনো দলের সবচেয়ে বড় জয় ৫-১ ব্যবধানের। গোলব্যবধানের হিসাবে তাই এই ম্যাচটিও ঢুকে গেছে ইতিহাসে।


    শুরুটা  একেবারে মন্দ ছিল না মোহামেডানের। দুই বিদেশী অবি মনেকে আর সুলেমান দিয়াবাতে গতি দিয়ে দুই-একবার ভড়কেও দিয়েছিলেন আবাহনীর রক্ষণকে। মোহামেডানের দৌড় অবশ্য ওই শুরুর দশ মিনিটই। এর পর আবাহনী আধিপত্যে একরকম কোনঠাসা হয়ে থেকেছে। মোহামেডানের রক্ষণ প্রথম চিড় ধরেছে ম্যাচের ১৫ মিনিটে।  জীবনের নিখুঁত ক্রস দূরের পোস্ট থেকে হেড করেছিলেন বেলফোর্ট। তখন মোহামেডান অধিনায়ক উরুই নাগাতা গোললাইন থেকে কর্নারের বিনিময়ে বল ক্লিয়ার করেন।

    মোহামেডানের তাতে লাভ হয়নি যদিও। মামুনুল ইসলামের কর্নারও গিয়ে পড়ল আবার বেলফোর্টের কাছে। এবার হেডে সফল তিনি। দারুণ হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে নিলেন ১৬ মিনিটেই। মোহামেডান সেই যে পিছু হঁটল এর পর একটা সময় হারিয়েই গেল। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় সব আলো কেড়ে নিলেন এডগার বের্নাহার্ডট আর বেলফোর্ট।

    ৩৩ মিনিটে বেলফোর্টের মিডফিল্ড থেকে দেওয়া ডায়গোনাল বল খুঁজে পেয়েছিল এডগারকে। মোহামেডানের ন্যারো ডিফেন্সের বদৌলতে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন তিনি। তবে এর পরও কাজ বাকি ছিল অনেক। বক্সের ঠিক ভেতর থেকে হাফ ভলিতে চোখ ধাঁধানো এক শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এডগার। বিরতির দুই মিনিট আগে আবার গোল। এবার গোলদাতা আর অ্যাসিস্টদাতার নাম অদল-বদল। এডগার ক্রস করলেন ডান প্রান্ত থেকে, সানডে-বেলফোর্ট দুইজনই ছিলেন বক্সের ভেতর। সানডে ডামি করে বল ছাড়লেন, বেলফোর্ট সুন্দর প্লেসিং শটে প্রথমার্ধের আগেই দলকে এগিয়ে নিলেন ৩-০ তে।

    দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য মোহামেডান হাল ছাড়েনি। তবে ততোক্ষণে দেরি হয়ে গেছে অনেক। মোহামেডানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেছেন নাবিব নেওয়াজ জীবন। মামুনুলের মিডফিল্ড থেকে দেওয়া লং বলে আবার ছিন্ন ভিন্ন মোহামেডানের রক্ষণ। সানডে বক্সের ভেতর থেকে হেড করে বল বাড়িয়েছিলেন, জীবন ছিলেন ফাঁকায়। ৬৩ মিনিটে আরেক হেডে গোলের হালি পূর্ণ করেন জীবন।

    মোহামেডান শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলেছে আক্রমণাত্মক। শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হয়েছে তাদের। বাকি সময়ে দিয়াবাতের শট বারপোস্টে লেগে ফেরত আসলে সান্ত্বনার গোলটিও আর পাওয়া হয়নি তাদের। অন্যপ্রান্তে অবশ্য হ্যাটট্রিক পূরণ হয়ে যেতে পারত বেলফোর্টের। বেলফোর্ট স্বার্থ ত্যাগ করলেন না বোকামি করলেন সেটা তিনিই ভালো জানেন। বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন মোহামেডানের বক্সে। সামনে ছিলেন শুধু গোলরক্ষক। নিজে শট না করে অফসাইডে থাকা সানডেকে পাস দিয়ে আর হ্যাটট্রিক পাওয়া হয়নি তার।

    বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ৪ ম্যাচ শেষে আবাহনীর পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ১০। মোহামেডান ৪ ম্যাচে দুই জয় আর দুই হার নিয়ে আটকে থাকল ৬ পয়েন্ট নিয়ে।

    ম্যাচ শেষে আবাহনী বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ছেড়েছে গ্যালারির গুটি কয়েক সমর্থকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে। আর মোহামেডানের অবস্থা উলটো। দুয়ো শুনে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। ফাঁকা গ্যালারির ডার্বির মজাটা বোধ হয় এখানেই।