করোনাভাইরাস মোকাবেলায় 'সবার অবদানে ম্যাচ জেতার সুযোগ' নিতে বলছেন সাকিব
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাই মিলে ‘ম্যাচ জেতার সুযোগ’ নিতে বলছেন সাকিব আল হাসান। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে বলেছেন তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘যুদ্ধের’ সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেছেন, “আমি তো দেখিনি, তবে যা গল্প শুনেছি- যারা যুদ্ধ করতে পারেনি, যুদ্ধের সময় মানুষ খাবার, হয়তো কোনও একটা সংবাদ- এসব দিয়েও সহায়তা করতো যারা যুদ্ধ করেছেন তাদের। আমার কাছেও ব্যাপারটা এমন। আমরা পেছনে থেকে যতোখানি সম্ভব সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসতে পারি। যারা সামনের দিকের যোদ্ধা তারা ভালভাবে করতে পারবে তাহলে।”
নিজের গড়া ফাউন্ডেশন থেকে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেছেন, “ডাক্তার, নার্স, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যারা যেখানে দায়িত্ব পালন করছেন, সরকার- সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। তবে আমরা ভালভাবে ফিরে আসতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দ্রুতই সম্ভব এটি। যারা ফ্রন্টলাইনে যোদ্ধা আছেন, আপনাদের দায়িত্ব বেশি, আপনাদের ঝুঁকি বেশি। তবে কিছু করার নেই। করতে হবে এখন আমাদের।”
“আমি খুবই রিলেট করতে পারি। যে ম্যাচে আমরা দলের প্রায় সবাই অবদান রাখতে পারি- সে ম্যাচ জেতার চেয়ে থেকে সন্তুষ্টির কিছু হতে পারে না। একজন-দুজনের অবদানে ম্যাচ জেতার চেয়ে (এটি বেশি সন্তুষ্টির)। সবাই মিলে ম্যাচ জেতার এই সুযোগটা যাতে আমরা নেই।”
স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) কেন প্রয়োজন, যেটাও বুঝতে পারছেন তিনি, “যুদ্ধে যাওয়ার আগে, ম্যাচ খেলার আগে প্রস্তুতি দরকার। ভালভাবে পারফর্ম করার জন্য। আত্মবিশ্বাসী হয়ে যাওয়ার জন্য।”
সহায়তার জন্য ফাউন্ডেশন গড়েছেন সাকিব/ সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন
করোনাভাইরাস কভিড-১৯ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার মাঝেই দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিজের পরিবারের কাছে গেছেন বর্তমানে নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। তবে সেখানে গিয়ে স্বেচ্ছায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তিনি, এরপর গেছেন পরিবারের কাছে। পেশাদার ক্রিকেটার জীবনে অন্য সময়ে নিজ পরিবারকে সময় দেওয়া হয় না জানিয়ে তিনি বলেছেন, চেষ্টা করছেন বাচ্চাকে অনেক সময় দিতে।
‘সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’ থেকে ফেসবুক লাইভে এসে তার উদ্যোগের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের এসব নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। “সবাই স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে পড়েছে, আমিও কিছু অনুসরণ করার চেষ্টা করছি। তবে আমার মনে হলো, এ সময়ে আমি একটু উলটোদিকে যাই। সাধারণ সময়ে যা করা হয় না ক্রিকেটার হিসেবে, সেসব করি। ওজনও একটু বেড়ে গেছে। তবে হ্যাঁ, সুস্থ থাকার জন্য যা করার দরকার, তা করছি।”
“পুরো পৃথিবীর অবস্থাই ভাল না। দোয়া করছি যাতে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।”
নিজের গড়া ফাউন্ডেশন শুধু নয়, যে যেভাবে পারেন, সেভাবেই সবাইকে এগিয়ে আসতে বলেছেন সাকিব। বলেছেন, এ সময়ে প্রতিবেশীর ভাল-মন্দর দিকে খেয়াল রাখার মতো কাজও এখন গুরুত্বপূর্ণ।
তার ফাউন্ডেশন থেকে কভিড-১৯ টেস্টিং কিট, পিপিই- এসব জোগাড় করার চেষ্টা করছেন সাকিব। সঙ্গে বলেছেন, অন্য অনেকের মতো জার্সি বা ব্যাট- এমন কিছু নিলামে তোলার পরিকল্পনাও করছেন।
আর ফাউন্ডেশন নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে তার, “ইনশাআল্লাহ, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ- এমন কিছু করতে পারলে তো সেটা অনেক ভাল হবে। আর আমি যেহেতু ক্রিকেটার, একটা ক্রিকেট একাডেমিও করতে পারি। সবাই সহায়তা করলে পারব।”
ঘরে বন্দী থাকার দিনে অ্যাথলেটরা যখন নিজেদের ফিটনেস নিয়ে ব্যস্ত, সাকিব আল হাসান তখন উল্টোদিকে হাঁটছেন। নিজের ওজনও একটু বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘সাধারণ সময়ে ক্রিকেটার হিসেবে যা খাওয়া হয় না, সেসবও খেয়ে’।
সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনে সহায়তা করতে পারেন এই লিঙ্কে গিয়ে