• অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ২০১৬
  • " />

     

    'পরিকল্পনামতো খেলেই প্রত্যাশিত জয়'

    'পরিকল্পনামতো খেলেই প্রত্যাশিত জয়'    

    প্রতিপক্ষ নাকি স্নায়ুচাপ? কোনটা বেশী কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল আজ মিরাজদের জন্য? নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশী যুবাদের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটা যারা সরাসরি দেখেছেন তাঁদের বেশীরভাগই হয়তো দ্বিতীয়টির পক্ষেই মত দেবেন!  দলীয় ৯৮ রানের মাথায় চার উইকেট খুইয়ে ফেলার পর মন্থর উইকেটে কমছিল রানের গতি আর একটু একটু করে বাড়ছিল ‘আস্কিং রান রেট’। ২১২ রানের জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যখন ৪ উইকেটে ১২৮ রান, আইসিসির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের জরিপের তথ্যমতে বাংলাদেশের জয় দেখছিলেন মাত্র ২৫ শতাংশ দর্শক!

     

     

    শেষপর্যন্ত আর একটিও উইকেট না খুইয়ে মিরাজ-জাকিরের আস্থার ব্যাট বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো পৌঁছে দিয়েছে বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে। গ্যালারিতে কিংবা টিভি পর্দার সামনে বসে থাকা সমর্থকরাই যেখানে স্নায়ুর উপর প্রচণ্ড চাপ অনুভব করছিলেন, তখন উইকেটে থাকা উনিশের কম বয়সী তরুণদের অবস্থাটা অনুমেয়ই।

     

    বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ সে চাপের কথা স্বীকার করে বললেন পরিকল্পনামতো এগিয়েই সেটা জয় করা গেছে, “শুরুতে ওপেনাররা একটু ধীরে খেলেছে, পরবর্তীতে উইকেটও কিছু পড়ে যাওয়ায় শেষ দিকে রান তাড়া করাটা কঠিনই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি আর জাকির চাপটুকু না নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে যাওয়ার চিন্তা করি। আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে কোন চার-ছয় মারার দিকে যাবো না, স্রেফ স্ট্রাইক রোটেট করে এক-দুই রান করে নিয়ে এগোবো। আর এভাবেই খেলেই আমরা কাঙ্ক্ষিত সাফল্যটা পেয়েছি।”

     

     

    জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার সময় উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকির হাসান ৭৭ বল মোকাবেলায় ৭৫ রান ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান ৬৫ বল মোকাবেলায় ৫৫ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। জাকিরের সাথে তাঁর এই জুটিটাকে আলাদা করেই মনে রাখতে চান বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন, “এ ধরণের চাপের মুখে খেলাটা আসলেই খুব কঠিন। চাপ সামলে যে খেলতে পারে সে-ই আসলে বড় ক্রিকেটার হতে পারে, অনেক দূর যেতে পারে। সবমিলিয়ে ইনিংসটা আমি উপভোগ করেছি বেশ।”

     

    তবে উপভোগের সীমানাটা এখানেই আটকে রাখতে চান না ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় এই তারকা, “বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোন বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে, অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। কিন্তু ভালোলাগাটা এখানেই শেষ হয়ে গেলে হবে না, আমাদের আরও অনেক দূরে যেতে হবে...সেমিফাইনালে জিততে পারলে ফাইনালেও দারুণ কিছু করে দেখানোর একটা সুযোগ তৈরি হবে। আমরা আমাদের মতো করেই এগিয়ে যাবো।”

     

     

    তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসেবে নেপালের ব্যাটিং-বোলিং কি কিছুটা হলেও চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশকে? অধিনায়ক মিরাজ অন্তত এটাকে চমক হিসেবে দেখছেন না, “আমরা ওদেরকে কখনই ছোট করে দেখি নি। তাছাড়া ওরা যোগ্য দল বলেই তো সুপার লিগে উঠে এসেছে। ওদেরকে তাই ছোট করে দেখার কোন সুযোগও নেই। আমরা শুধু আমাদের নিজেদের খেলাটাই খেলতে চেয়েছি এবং সেভাবেই দিন শেষে সাফল্যও পেয়েছি।”