• অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ২০১৬
  • " />

     

    কোথায় আছে তারা?

    কোথায় আছে তারা?    

    কৈশোরের ছাপ আছে এখনও অনেকের মুখাবয়বেই! চোখেমুখে আছে স্বপ্নের ঝিলিক। সে স্বপ্নের সীমান্ত দূর-দুরান্তে, তবে অনেকেই জমিন খুঁজে পান সে স্বপ্নের, এ আসরে! অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ তাই কুঁড়িদের ফুল হয়ে ওঠার আরেক ধাপ। চারাগাছদের মহীরুহ হয়ে ওঠার একটা সোপান!

    অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শেষ হয়, শুরু হয় সেই কুঁড়িদের নিয়ে স্বপ্ন দেখার পালা! শুরু হয় তাঁদের মাঝে ভবিষ্যত দেখার প্রত্যাশা! সদ্য শেষ হওয়া আইসিসির অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসরও এর ব্যতিক্রম নয়। ঝলক দেখিয়েছেন অনেকেই, বিশ্বমঞ্চের তারকা হবেন কতোজন, তা বলবে সময়। তবে থেমে নেই প্রত্যাশার পারদ, জাতীয় দলে তাঁদের অনেকেরই সুযোগ পাওয়া উচিৎ, এমনটাও বলছেন অনেকেই! আর ‘কেন সুযোগ দেয়া হবে না’ সেই প্রশ্ন তো অতীতকাল থেকেই উপমহাদেশে বেশ জনপ্রিয়! কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্ট থেকে জাতীয় দলে যাওয়ার ‘সেতু’টা আদতে কতোজন পাড়ি দিয়েছেন সফলভাবে? জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই বা কতোজন চেনাতে পেরেছেন নিজেকে?

    আগের আসরগুলোর সেরারা আন্তর্জাতিকে কতোখানি আলো ছড়িয়েছেন, নীচের লেখা তা নিয়েই। তবে বয়সভিত্তিক দল থেকে জাতীয় দল, দুইয়ের পার্থক্যটা খুব ভালভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন এ আসরের ভারতীয় দলের কোচ, আর একসময়কার ভারতীয় দলের অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। সেবার যুবাদের টুর্ণামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো কোহলিদের ভারত, তাঁদের উদ্দেশ্যেই ভারতীয় কিংবদন্তি বলেছিলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টা কেবল শুরু হতে যাচ্ছে তোমাদের জন্য। এখন থেকে যা কিছু করে দেখাতে পারবে তাই হবে তোমাদের অর্জন!’


     

    • ১৯৮৮ঃ উইলিয়ামস-হোল্ডসওয়ার্থের আক্ষেপের গল্প!

    যুবাদের বিশ্বকাপের প্রথম আসর মূলত আয়োজন করা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার স্বাধীনতার দুইশ' বছর পূর্তিতে। সেসময়ের সাত টেস্ট খেলুড়ে দেশের পাশাপাশি খেলেছিল ছয় সহযোগী দেশের যুবাদের সম্মিলিত দল ‘আইসিসি অ্যাসোসিয়েটস’। সে দলের নেতৃত্বে ছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল, পরবর্তীতে টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। সেবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া দলের ব্রেট উইলিয়ামস হয়েছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। প্রায় ৫২.৩৩ গড়ে করেছিলেন ৪৭১ রান।

    সেরা বোলারের পুরষ্কার জিতেছিলেন রানার্স-আপ পাকিস্তানের মুশতাক আহমেদ ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়েন হোল্ডসওয়ার্থ। দু’জনই নিয়েছিলেন ১৯টি করে উইকেট। আমিনুল কিংবা মুশতাক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্যুতি ছড়িয়েছেন পরে, তবে টুর্নামেন্টটির সবচেয়ে বড় চমক ব্রেট উইলিয়ামস ও হোল্ডসওয়ার্থ জাতীয় দলের জার্সিই গায়ে দেয়ার সৌভাগ্য হয়নি! প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে আনাগোনা করেই শেষ হয়েছিল তাঁদের ক্রিকেট ক্যারিয়ার। হোল্ডসওয়ার্থ ১৯৯৩ সালের অ্যাশেজ সফরের স্কোয়াডে ঠাঁই পেয়েছিলেন, তবে ব্যাগি গ্রিনটা অধরাই থেকে যায় তাঁর!

     

    হোল্ডসওয়ার্থের জীবন কেটেছে ঘরোয়াতেই! 

     

    • ১৯৯৮ঃ গেইল-সারওয়ান-এনকালার আসর

    প্রায় দশ বছর পর আবারো যুবাদের বিশ্বকাপের আসর বসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপর থেকেই মূলত আইসিসির প্রতি দু’ বছর পর পর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া। আফ্রিকার মাটিতে সেরা ব্যাটসম্যানের পুরষ্কার জেতেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল। প্লেট কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের সঙ্গে এই ক্যারিবিয়ান খেলেছিলেন ১৪১ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস! তবে ম্লান হয়ে গিয়েছিল গেইলের ইনিংস, দুই বাংলাদেশী তরুণ আল শাহরিয়ার রোকন ও মেহরাব হোসেন অপির নৈপুণ্যে শিরোপা জিতেছিলো বাংলাদেশই! সেবার বিফলে গেলেও আগের আসরের ব্রেট উইলিয়ামসের মতো ক্যারিয়ারটা বিফলে যায়নি গেইলের। গেইলের তান্ডব যে ক্রিকেটে চলছে এখনও!

     

     

    ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংয়েও সেবার দাপট দেখিয়েছিল ক্যারিবীয়রা। ১৬ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের মুলেকি এনকালার সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বোলার হয়েছিলেন যে ক্যারিবীয়, তাঁর নামটা বিস্ময়জাগানিয়া, রামনরেশ সারওয়ান! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সারওয়ানের এগারো হাজারের ওপর রান আছে, আর উইকেট আছে সব মিলিয়ে ৪১! গেইল আর সারওয়ান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কত্বও করেছেন পরে, আর এনকালা জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলেছেন দশটি টেস্ট আর পঞ্চাশটি ওয়ানডে।

     

    • ২০০০ঃ যুবরাজের রাজত্ব

    এশিয়ার মাটিতে যুবাদের বিশ্ব-আসর এলো প্রথমবারের মতো। আলো কেড়ে নিলেন এক এশিয়ান, যুবরাজ সিং!  স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত, যুবরাজ হয়েছিলেন টুর্নামেন্টসেরা। সর্বোচ্চ ৩৪৮ রান করেছিলেন গ্রায়েম স্মিথ, দক্ষিণ আফ্রিকার পরবর্তীকালের ‘বিস্ময় অধিনায়ক’! তবে সেরা বোলার পুরস্কারটা বোধহয় এখনও আক্ষেপ জোগায় পাকিস্তানের জাহিদ সাঈদকে! ১৫ উইকেট নিয়েছিলেন জাহিদ, পরে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটেও নিয়েছেন প্রায় তিনশো উইকেট। তবে জাতীয় দলের চৌকাঠ মাড়া হয়নি তাঁর!

     

    যুবরাজ, শ্রীরাম, কাইফ,সোধি

     

    যুবরাজ পরে আবার ‘বড়দের’ বিশ্বকাপেরও টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন! ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জেতায় তো অনেক বড় ভূমিকা ছিল এককালের ‘ছোট’দের বিশ্বকাপ সেরা যুবরাজেরই! স্মিথ অধিনায়ক হয়েছেন, আলো ছড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে! তবে জাহিদ পুড়েছেন শুধুই আক্ষেপে, পাকিস্তানও কি আক্ষেপ করে তাঁকে নিয়ে?  


     

    • ২০০২ঃ তাসমান পাড়ে দুই অজি আর এক আফ্রিকানের আসর!

    এশিয়া থেকে বিশ্বকাপ গেল তাসমান সাগরের পাড়ে, তবে কিউইদের মাটিতে ব্যাট হাতে আলো ছড়ালেন একজন অজি, ক্যামেরন হোয়াইট। করেছিলেন ৪২৩ রান, অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্বও করেছেন পরবর্তীতে। ১৬ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার হয়েছিলেন আরেক অসি, জ্যাভিয়ের ডোহের্টি। হোয়াইট বা ডোহের্টি, জাতীয় দলে আনাগোনা থাকলেও থিতু হতে পারেননি পাকাপোক্তভাবে।

     

    চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি হাতে অস্ট্রেলিয়া দল 

     

    টুর্ণামেন্টসেরা টাটেন্ডা টাইবুর পরের গল্পটা আবার মিশ্রিত অনুভূতির! জিম্বাবুয়ের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হওয়ার কীর্তি গড়েছিলেন, হঠাৎ ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের ভাঙ্গা তরীটা বয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বেশ কিছুদিন! তবে সময়ের আগেই ক্রিকেট ছাড়ার কারণটাও একটু বিস্ময় জাগানিয়া, ধর্মের কারণে যে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন তিনি!

     

    প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং টুর্ণামেন্টসেরার ট্রফি হাতে টাইবু 


     

    • ২০০৪ সালঃ ধাওয়ান আর এনামুলের চমক!

    তাসমান সাগরের পাড় থেকে যুব বিশ্বকাপ ফিরলো এশিয়ায়, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ করলো আয়োজন। চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশেরই প্রতিবেশী ভারত, আর স্বাগতিকরা সন্তুষ্ট থাকলো প্লেট জিতেই। এ আসরের সবচেয়ে বড় চমক ছিলেন শিখর ধাওয়ান। শুধু সেরা ব্যাটসম্যান নন, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন বর্তমান ভারতীয় দলের ওপেনার। ৫০৫ রান করা ধাওয়ানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০১০ সালে। ২০১৩ সালে টেস্ট অভিষেকে দ্রুততম অভিষেক সেঞ্চুরির (৮৫ বল) রেকর্ডও করেছিলেন ধাওয়ান।

     

     

    ধাওয়ান যুবাদের আসর থেকে এসেছেন বড় পরিসরে, এনামুল হক জুনিয়রের ক্ষেত্রে হয়েছিল উল্টোটা! এই আসরের সেরা বোলার হয়েছিলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র। টুর্নামেন্টে মোট ২২ উইকেট নেয়া এনামুলের জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার আগেই! ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে টেস্ট-ক্যাপ পেয়েছিলেন, অবশ্য ওয়ানডে খেলেছিলেন যুব-বিশ্বকাপের পরের বছর, ২০০৫ সালে। ২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেরা বোলার বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের অন্যতম নায়কও ছিলেন। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে মাত্র ১৮ বছর ৪০ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে এক টেস্টে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও গড়েন এই বাঁহাতি স্পিনার। তবে এখন যেন হারিয়ে খুঁজছেন নিজেকে, বাংলাদেশ কি পেরেছে এনামুলের ‘যথার্থ ব্যবহার’ করতে?

     

     

     

    • ২০০৬ঃ পূজারায় নির্ভরতা!

    দৃশ্যপটে এবার এলো পাকিস্তান। ফাইনালে রোহিত শর্মা-পূজারা-জাদেজার ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো প্রথমবারের মতো তাদের প্রতিবেশীরা। যিনি হলেন টুর্ণামেন্ট সেরা আর সেরা ব্যাটসম্যান, সেই চেতেশ্বর পূজারা এখন ভারতীয় টেস্ট দলের মিডল অর্ডারের আস্থার প্রতীক। ২০১০ সালে টেস্টে অভিষেক, দ্রাবিড়-লক্ষণদের বিদায়ের শূন্যস্থানটা তো তাঁকে দিয়ে পূরণ করাতে চাইছে ভারত! ২০১৩ সালে আইসিসির সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরষ্কারও জিতেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

     

     

    শ্রীলঙ্কার মাটিতে হওয়া সেই আসরে বোলিংয়ে সেরা হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মইজেজ হেনরিকেস। ২০০৯ সালে ওয়ানডে অভিষেক, তবে ভিতটা শক্ত হয়নি এখনও!  অলরাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন ৬টি ওয়ানডে, ৩টি টেস্ট আর ৪টি টি-টোয়েন্টি। পর্তুগালে জন্ম নেয়া হেনরিকেসের বয়স এখন ২৯, ফুল হয়ে কি ফুটবেন সামনে?

     

     

     

    • ২০০৮ঃ কোহলির আবির্ভাব আর তন্ময়কে খুঁজে ফেরা

    ভিরাট কোহলি- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বেশ আলোচিত এ নাম ভারতকে জিতিয়েছিলেন ট্রফি। তবে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন আরেকজন, কোহলিরই সতীর্থ তন্ময় শ্রীভাস্তব। কোহলি ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হয়ে গেছেন, তবে তন্ময় এখনও খুঁজে ফিরছেন জাতীয় দলের রাস্তা! সন্তুষ্ট থাকছেন আইপিএল আর রঞ্জি খেলেই!

     

     

    তন্ময়ের মতো আক্ষেপভরা গল্প নয় ওয়েইন পারনেল বা টিম সাউদির। পারনেল ১৮ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন সেরা বোলার, জাতীয় দলে সুযোগও পেয়ে যান পরের বছরই। নিয়মিত না হলেও টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন, জাতীয় দলেও খেলছেন এখন। টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন কিউই পেসার টিম সাউদি। নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমনের বর্তমানে অনেক বড় ভরসার নাম সাউদি, ২০১১ বিশ্বকাপে নিয়েছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাউদির উইকেটসংখ্যাও হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে তিনশো।

     

     

     

    • ২০১০ঃ ‘ফ্রম পাপুয়া নিউ গিনি উইথ উইকেটস’

    আয়োজক দ্বিতীয়বারের মত নিউজিল্যান্ড, চ্যাম্পিয়ন আগের মতোই অস্ট্রেলিয়া। ১৫ উইকেট নিয়ে সেরা বোলারের নামটা তাঁর দল বিবেচনায় চমক জাগানিয়া, রেইমন্ড হাওডা, দেশ পাপুয়া নিউ গিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের জমিনটা শক্ত করতে লড়াই করে যাচ্ছে পিএনজি, হাওডার সম্বল সেখানে চারটি লিস্ট-এ ম্যাচ!

     

     

    ৩৯১ রান করে টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন দক্ষিন আফ্রিকার ডমিনিক হেন্ড্রিকস। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও আবির্ভাব হয়নি তাঁর, গউটেংয়ের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলে যাচ্ছেন এখনও!

     

    • ২০১২ঃ বিজয়ের আসর

    অস্ট্রেলিয়ার মাটির বিশ্বকাপে ২২ গজ শাসন করলেন এক বাংলাদেশী, এনামুল হক বিজয়। করলেন ৩৬৫ রান, বিশ্বকাপের পরপরই ডাক পেয়ে গেলেন জাতীয় দলে। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সেঞ্চুরি করলেন, জাগালেন অনেক প্রত্যাশাও। তবে চোট-অফফর্ম মিলিয়ে এখন জাতীয় দলে ফেরার চেষ্টাটাই করে যেতে হচ্ছে বিজয়কে।

     

     

    বিজয়ের অভিষেক বেশ আগে ঘটলেও সে আসরের সেরা বোলার রিইস টপলির আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আনাগোনা বেশিদিনের নয়। ২০১৫ সালের আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে দেন এই বাঁহাতি পেসার, খেলছেন সীমিত ওভারে প্রায় নিয়মিতই। তবে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় উইল বসিস্তো এখনও অপেক্ষায়, অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার! ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৯টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন এই অলরাউন্ডার।

     

    • ২০১৪ঃ সবাইকে ছাপিয়ে মুস্তাফিজ-রাবাদা

    যুব বিশ্বকাপের আসর বসলো মরুর দেশ আরব আমিরাতে। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো দক্ষিন আফ্রিকা। সেরা খেলোয়াড়ও এক প্রোটিয়া যুবা, তাদেরই অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম। তাঁর সতীর্থ কাগিসো রাবাদা জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও ডাক পাননি মারক্রাম। তাঁর অভিজ্ঞতা ১৯টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আবার আরেকজন বাংলাদেশী, সাদমান ইসলাম (৪৬০ রান)। তবে জাতীয় দলের লাল-সবুজের জার্সিটা অধরাই রয়ে গেছে এখনও, খেলেছেন ১৬টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়েও খেলেছেন সাদমান।

     

     

    আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দুই তরুণ বিস্ময়-পেসার খেলেছিলেন এ আসরে। তবে মুস্তাফিজুর রহমান ও বা কাগিসো রাবাদা নন, সেরা বোলার হয়েছিলেন শ্রীলংকার অনুক ফার্নান্দো। মুস্তাফিজ-রাবাদা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাতালেও অনুকের অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত ৭টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ।

     

     

     

    • ২০১৬ঃ ওই মিরাজদের কেতন ওড়ে!

    বিশ্বকাপ ফিরেছিল বাংলাদেশে, তবে অধরা ট্রফিটা ছোঁয়া হয়নি মিরাজদের। মিরপুরের বসন্ত বাতাসে বেজেছে ক্যালিপসো সুর, প্রথমবারের মতো ট্রফি নিয়ে গেছেন হিটমেয়ার-স্প্রিংগারদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৪২ রান আর ১২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন অবশ্য বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজই। তাঁর চোখ এখন জাতীয় দলে। হতে চান বিশ্বসেরা এক অলরাউন্ডার।

     

     

    ডারহামের তরুণ জ্যাক বার্নহাম করেছেন টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৪২০ রান্, সবাইকে ছাপিয়ে সেরা বোলার হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ‘আশ্রিত’ নামিবিয়ার ফ্রিটজ কোয়েটজি(১৫ উইকেট)। আলো ছড়িয়েছেন ভারতের সরফরাজ খান, নেপালের সন্দীপ লামিশানে। স্বপ্নের জাতীয় দলের চাবিটা কে পাবেন আগে?

     

    সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়। কুঁড়িদের ফুল হয়ে ফোটার গল্পটাও তাই তোলাই থাকবে আরও কিছুদিনের জন্য!