যুবাদের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ফিরে আসছিল ২০০৬ সালের পাকিস্তান-ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল। কিংবা, ইতিহাসের আরও মনোযোগী ছাত্র হলে, ফিরে আসতে চাইছিল ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালও! ইতিহাস থাকলো ইতিহাসের জায়গাতেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের যুবারা বাংলাদেশের মাটিতে লিখলেন নতুন ইতিহাস! প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলো শিমরন হিটমেয়ারের দল!
অথচ ১৪৫ রানে ভারতকে অল-আউট করার একপেশে ফাইনালই দেখছিলেন অনেকেই। সরফরাজ খানের ৫১ রান ছাড়া ভারতের ইনিংসে বলার মতো কিছু ছিলও না অবশ্য। তবে বোলিংয়ে নেমে বলার মতো অনেক কিছুই দিলো ভারতীয় বোলাররা। ৫ রানে প্রথম উইকেট ইঙ্গিত দিচ্ছিল, ছেড়ে কথা বলতে রাজি নয় ইশান কিষানের দল। ২৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর ৩৯ রানের এক জুটি, এরপরই আবার ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা। মিরপুরের ম্যাচটা তখনও ক্ষণে ক্ষণেই বদলাচ্ছিল রঙ।
তবে ছিলেন কিসি কার্টি, এসে যোগ দিয়েছিলেন কেমু পল। ইশানদের দলীয় মিটিং মাঠে দীর্ঘ হচ্ছে, স্লিপে সরফরাজের হতাশা বাড়ছে। উইকেটের পেছনে রিশাব পান্টের কথাগুলোও মিলিয়ে গেল একসময়। কার্টি আর পলের জুটি যে ধীরে ধীরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে গেল স্বপ্নের দোরগোড়ায়! কার্টি অপরাজিত থাকলেন ৫২ রান করে। তবে সব উচ্ছ্বাসের শুরুটা হলো কেমু পলকে দিয়েই। খলীল আহমেদের শর্ট বলটা চালালেন, বল গেল পেছনে। একটা সিঙ্গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে বইয়ে দিল আনন্দের বন্যা।
স্প্রিংগার তাঁর 'চেস্ট-রোল' এর পূর্ণ সংস্করণ দেখালেন, পোপ উইকেটে চুমু খেয়ে শুরু করলেন গ্যাংনাম স্টাইলের নাচ! কেউবা ছুটলেন দিগ্বিদিক, কেউ হয়ে পড়লেন বেশী আবেগী! তাতে মিশে গেল ভারতীয় কোনো যুবকের কান্নার রেশ, না পাওয়ার বেদনা! মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মিশে দিল ফিরে আসতে চাওয়া সেই লো-স্কোরিং ফাইনালগুলোও!
ওয়েস্ট ইন্ডিজের যুবারাই তো এখন নতুন ইতিহাস!
তাঁদের হাত ধরে কি ফিরবে ক্যারিবীয় সেই সোনালী সুদিন?