• ক্রিকেটে করোনাভাইরাস
  • " />

     

    বলে থুতু-লালা ব্যবহার নিষিদ্ধের প্রস্তাব নিয়ে ভিন্নমত হোল্ডিং-ওয়াকারদের

    বলে থুতু-লালা ব্যবহার নিষিদ্ধের প্রস্তাব নিয়ে ভিন্নমত হোল্ডিং-ওয়াকারদের    

    কভিড-১৯ এর মহামারির পর ক্রিকেট আবারও শুরু হলে বলে থুতু, লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবের সঙ্গে আম্পায়ারের তত্ত্বাবধানে ‘বল টেম্পারিং’ এর সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে। তবে এমন ব্যাপার ঠিক কতোটা কাজে দেবে, তা নিয়ে সন্দীহান সাবেক পেসাররা। মাইকেল হোল্ডিং এর পেছনে কোনও ‘যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না’, ওয়াকার ইউনুস বলছেন বোলারদের ‘এর থেকে বিরত রাখা সম্ভব নয়’। আশীষ নেহরার মতে, এমন কিছু ‘বোলারদের স্রেফ শেষ করে দেবে’। 

    ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এই বিষয়ে মত দিয়েছেন সাবেক পাঁচ পেসার। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান হোল্ডিং বলছেন, ‘সবকিছু নিরাপদ নিশ্চিত করেই যদি খেলতে নামা হয়, তাহলে লালা ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কটা কীসের’ তা তিনি বুঝতে পারছেন না। 

    সবাইকে ১৪ দিন আলাদা থেকে খেলায় আসতে হবে, এমন সব প্রস্তাবের পরও বলে লালার ব্যবহার নিয়ে কথা উঠছে কেন, সে প্রশ্ন করেছেন হোল্ডিং, “আপনি যদি ‘নিরাপদ’ পরিবেশে সবাই থাকবে এটা বলেন, একই হোটেলে থাকেন, ম্যাচের সময় ভ্রমণ খুবই সীমিত রাখেন, তাহলে আপনি কারও লালা নিয়ে এতো চিন্তিত কেন? আপনার মতে তো ওই ব্যক্তি (যার লালা নিয়ে চিন্তা) কভিড-১৯ থেকে মুক্ত। যদি আইসিসি ভাবে যে ওই দুই সপ্তাহের পরও কাউকে কভিড-১৯ মুক্ত প্রমাণ করার মতো উপযুক্ত তথ্য নেই, তাহলে তো আপনি সবাইকে ঝামেলায় ফেলছেন। এমন পরিবেশে আপনি খেলবেন কেন? হয় এটা নিরাপদ, আর নাহলে নয়। এখানে দোনোমোনো করার সুযোগ নেই।” 

    বলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে সাবেক ভারতীয় পেসার নেহরা বলেছেন, হুট করে কৃত্রিম কোনও উপাদান বলের ওপর প্রয়োগ করা কঠিন হতে পারে বোলারদের। “কুকাবুরা, ডিউক বা এসজি বল শাইন করার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি আছে। নতুন বলের ক্ষেত্রে আলাদা, পুরোনো বলে যখন রিভার্স সুইং পাওয়া যাবে তখন আবার আলাদা। কখনও বেশি ঘাম প্রয়োগ করতে হয়। রিভার্স না করলে শুধু থুতু দিতে হয়। নতুন বলে আবার শুধু দাগ পড়লে খুবই সামান্য দিতে হয়।” 

    “বল শাইন করার ক্ষেত্রে কৃত্রিম উপাদান প্রয়োগের বৈধতা দিলে হুট করে সুইং পাওয়া যাবে না। কারণ, প্রাকৃতিকভাবে বল নিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত আপনি, এবং বিভিন্ন পর্যায়ে এটি বিভিন্ন রকম।” 

    পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ওয়াকারের কথার সুরও কিছুটা একই, “পেসার হিসেবে (কৃত্রিম উপাদান ব্যবহারের) এই ধারণা আমি প্রত্যাখ্যান করি। কারণ লালা-থুতু ব্যবহার করাটা সহজাত প্রক্রিয়া। দিনভর বল হাতবদল হয়। দৌড়াবেন, ঘামবেন, সেটা বলে যাবে। আর বলে লালা ব্যবহার করাটা ইচ্ছাগত যতোটা, তার চেয়ে বেশি সহজাত। এটা অভ্যাস, যেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে।” 

    “আমি জানি না এ আলোচনা কীভাবে এসেছে। তবে আমার মনে হয় লোকে লকডাউনে থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে পড়েছে। ফলে বেশি চিন্তা করছে। আমার মনে হয় না কৃত্রিম কিছু ব্যবহার করাটা সমাধান। আপনি হয়তো বোলারকে একটা নির্দিষ্ট কিছু প্রয়োগে অভ্যস্ত করাতে পারলেন, তবে ঘাম বা লালা ব্যবহারে বিরত রাখতে পারবেন না।” 

    আরেক পাকিস্তানি আজহার মাহমুদ অবশ্য আগ্রহী কৃত্রিম উপাদানের ব্যাপারটি কীভাবে কাজ করতে পারে, “এমন কিছুতে আমার আপত্তি নেই, বরং তারা এটা কীভাবে পর্যবেক্ষণ করবে সেটাতে আগ্রহ বেশি। আমার মনে হয় বল উৎপাদনকারীদের এখানে বড় ভূমিকা থাকবে- কী ব্যবহার করা হবে, কারণ তারা সবচেয়ে ভাল জানবে তাদের বলে ব্যবহার করা চামড়ায় কোনটি সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। এমন হতে পারে, বোলাররা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মতো কিছু ব্যবহার করছে, বল শাইন করতে।” 

    আর এর আগেও বল টেম্পারিংয়ের বৈধতার পক্ষে কথা বলা দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যালান ডোনাল্ড জানতে চান ব্যাটসম্যানদের মতটা, “আমি আসলে বিস্মিত হয়েছি। এটা ভাববার বিষয়। বড় নামের কিছু ব্যাটসম্যান এ বিষয়ে কী বলে, সেটা জানার ইচ্ছা আমার। আমি নিশ্চিত কিছু মন্তব্য আসবে। তবে আমি যেটা বলি, কাজে আসতে পারে এমন কিছু থাকলে আমাদের বাজিয়ে দেখা উচিৎ।”