• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    যে কারণে ফিফার নিষেধাজ্ঞা পেতে হলো সাইফ স্পোর্টিংকে

    যে কারণে ফিফার নিষেধাজ্ঞা পেতে হলো সাইফ স্পোর্টিংকে    

    নির্ধারিত সময়ে ৩ খেলোয়াড়ের বেতন পরিশোধ করতে না পারায় ফিফার নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে। আপাতত জরিমানার টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত নতুন কোনো খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে পারবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি।

    কেন দলবদলে নিষেধাজ্ঞা পেল সাইফ স্পোর্টিং?
    নিষেধাজ্ঞা মূলত বাফুফের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও ফিফার রায়টাই কার্যকর করছে তারা। ২০১৭ সালে প্রাক মৌসুমে ৩ জন ফুটবলারকে দলে ভেড়ানোর জন্য ঢাকায় উড়িয়ে এনেছিলেন সাইফ স্পোর্টিংয়ের তখনকার কোচ নিকোলা কাভাজোভিচ। তবে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন না করেই স্লোভাক মিডফিল্ডার মাকো ভিলিয়াম, মন্টেনেগ্রো ফরোয়ার্ড সাভা গ্রাদাসেভিচ ও সার্বিয়ান ডিফেন্ডার গোরান অব্রাদোভিচকে ফিরিয়ে দিয়ছিল সাইফ।

    এরপর সে বছরই ওই ৩ ফুটবলার ফিফার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ফিফাও তদন্ত শুরু করে। সাইফ স্পোর্টিং ও ফিফার ভেতর দুই বছর ধরে বেশ কয়েকবার চিঠি চালাচালির পর এ বছর মার্চের দিকে ফিফা খেলোয়াড়দের পক্ষেই রায় দেয়। মার্চের ১৩, ১৪ ও ২৩ তারিখে ফিফার পাঠানো চিঠিতে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ৪ হাজার ইউএস ডলার ভাতা বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় সাইফকে। সঙ্গে এই ৩ ফুটবলারের ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোটমাট আরও ৯৩ হাজার ৫০০ ডলারের খড়্গ চাপে ক্লাবটির ওপর। এসবের পর আবার জরিমানা বাবদ যোগ করা হয় আরও ১৫ হাজার সুইস ক্রোনা। যে টাকা পাওয়ার কথা ফিফার।

    ফিফার নিয়ম অনুযায়ী পরের এক মাসের ভেতর টাকা পরিশোধ করার থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ব্যর্থ হওয়ায় দলবদলে নিষেধাজ্ঞা নেমে এসেছে  সাইফ স্পোর্টিংয়ের ওপর। ঘরোয়া বা আন্তজার্তিক কোনো ফুটবলারকেই দলে ভেড়াতে পারবে না সাইফ স্পোর্টিং।

    এখন কী করবে সাইফ স্পোর্টিং?
    দলবদলে নিষেধাজ্ঞাটা মূলত ফিফার ডিসিপ্লিনারি কোড এর আর্টিকেল ১৫- অনুযায়ী আরোপ করা হয়েছে। ওই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- খেলোয়াড়দের বেতন, ক্ষতিপূরণ ও ফিফার জরিমানার টাকা পরিশোধ করলেই মুক্তি মিলবে সাইফের।

    দলবদলে নিষেধাজ্ঞা প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথমবার হলেও এর আগে মোহামেডান ও শেখ রাসেলকেও নিয়মভঙ্গের জন্য পেতে হয়েছে সাজা। দুই ক্লাবেরই ৩ পয়েন্ট করে কেটে নেওয়া হয়েছিল সেবার।

    সাইফ স্পোর্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসিরউদ্দিন চৌধুরী অবশ্য বলছেন এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্য অপ্রত্যাশিতই ছিল, “করোনাভাইরাসের এই সময় টাকা পরিশোধ করা ঝামেলা বলে আমরা ফিফাকে চিঠি দিয়েছিলাম সময় বাড়াতে। সেটার জবাব পাইনি। করোনাভাইরাসের ঝামেলা না থাকলে টাকা আমরা আগেই পরিশোধ করে দিতাম।”

    শিক্ষা পেলাম, বাকিদেরও সতর্ক করব:  সাইফ পরিচালক

    নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলছেন শুরুদিকে ক্লাবের অসতর্কতার জন্যই এ ধরনের জরিমানার সামনে পড়তে হয়েছে তাদের। ফিফার শাস্তি মেনে নিলেও ওই ৩ ফুটবলারকে দুষছেন তিনি, ”ট্রায়ালে আমাদের এখানেই অনেকেই খেলতে আসে। আবার পছন্দ না হলে এখানকার ক্লাবগুলো তাদের ফিরিয়েও দেয়। ঝামেলা হয়েছে কোচকে অন্ধ বিশ্বাস করে। তার ওপরই ছেড়ে দিয়েছিলাম আমরা। ওই ৩ ফুটবলারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ ছিল। আমরা তাদের কোনোভাবেই দলে রাখতাম না।”  

    “আমরা ওদের বিদায় দেওয়ার পর জানতে পেরেছিলাম তারা ফিফার দ্বারস্থ হয়েছে। অথচ এখানে থাকতে (বাংলাদেশে) তারা আমাদের ম্যানেজারের গায়েও হাত তুলেছে। আমরা এরপরও তাদের সঙ্গে পেশাদার আচরণ করেছি। এখন তারাই আবার ফিফার কাছে গিয়ে নালিশ জানাল। আমাদের জন্য একটা শিক্ষা হলো এবার।”

    খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে শুরুর দিকে ক্লাব কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট মনোযোগী ছিল না বলেও স্বীকার করছেন নাসিরউদ্দিন। তবে এই ঘটনার পর ফিফার নিয়ম-নীতির ব্যাপারে সাইফ স্পোর্টিং আরও সাবধানী হয়েছে বলে তার দাবি, “এখন আমরা খেলোয়াড় ভেড়ানোর ব্যাপারে পুরোপুরি মনোযোগী। তখন আমরা কেবল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে উঠে আসা দল। সব ব্যাপারে তাই তেমন নজর রাখা হয়নি। এখন এই ঝামেলা কাটিয়ে উঠেছি। আমি বাকি ক্লাবদেরও সতর্ক করব এ ব্যাপারে।”