করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রিয়াজ, হাফিজ, ফাখারসহ আরও ৭ জন পাকিস্তান ক্রিকেটার
করোনাভাইরাস কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৭ জন পাকিস্তান ক্রিকেটার। ২৩ জুন আরেকটি পরীক্ষার ফল জানিয়েছে পিসিবি, যেটি করা হয়েছিল লাহোরে। এ দফা আক্রান্ত ক্রিকেটাররা হলেন- ফাখার জামান, ইমরান খান, কাশিফ ভাট্টি, মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ওয়াহাব রিয়াজ। এর আগে রাওয়ালপিন্ডিতে করা কভিড-১৯ পরীক্ষায় ২২ জুন পজিটিভ এসেছিলেন ৩ জন- শাদাব খান, হারিস রউফ ও হায়দার আলি।
এই ১০ জন ক্রিকেটারের সঙ্গে পজিটিভ হয়েছেন সাপোর্ট স্টাফ মালাং আলি। সঙ্গে ১৬ জন ক্রিকেটার ও ১১ জন সাপোর্ট স্টাফের ফল নেগেটিভ এসেছে, যার মাঝে আছেন বাবর আজম, আসাদ শফিক, মিসবাহ-উল-হক, ইউনুস খানরা। সোমবার নেগেটিভ এসেছিলেন ইমাদ ওয়াসিম ও উসমান শিনওয়ারি। ২৯ জন ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফকে নিয়ে ইংল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের। শোয়েব মালিক, ক্লিফ ডিকন ও ওয়াকার ইউনিসের পরীক্ষা করা হয়নি এখনও।
পিসিবি বলছে, আগের ৩ জনের মতো এই ৭ জন ক্রিকেটারেরও কোনো উপসর্গ ছিল না। আপাতত তাদেরকে নিজেদের পরিবারের সুরক্ষায় ‘আইসোলেশন’-এ থাকতে বলেছে পিসিবি।
১০ জন ক্রিকেটারের আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিতভাবেই বেশ বড় ধাক্কা পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফরের জন্য। তবে পিসিবি বলছে, সে সফর এখনও ঠিক পথেই আছে। প্রথম দফা ফলে নেগেটিভ আসা ক্রিকেটাররা ২৪ জুন লাহোরে ‘বায়ো-সিকিউর’ পরিবেশে একত্র হবেন, এরপর আরেকদফা পরীক্ষা করানো হবে ২৫ জুন। এরপর নির্ধারিত সময়েই ২৮ জুন চার্টার করা ফ্লাইটে তারা ম্যানচেস্টারের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন বলে জানিয়েছেন পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান।
এ নিয়ে ইংল্যান্ড সফরের স্কোয়াডে থাকা ১০ জন পাকিস্তান ক্রিকেটার আক্রান্ত হলেন কভিড-১৯ ভাইরাসে
“ইংল্যান্ড সফর ঠিক পথেই আছে, এবং দল ২৮ জুন নির্ধারিত সময়েই দেশ ছাড়বে। সৌভাগ্যক্রমে আমাদের লাল বলের স্কোয়াডের একমাত্র মোহাম্মদ রিজওয়ান ছাড়া সবার ফল নেগেটিভ এসেছে। এর মানে তারা অনুশীলন ও প্রস্তুতি শুরু করে দিতে পারবেন ইংল্যান্ডে আরেকদফা পরীক্ষার পর”, বলেছেন ওয়াসিম।
তবে হেড কোচ মিসবাহ-উল-হক বিকল্প প্রস্তুতির পরিকল্পনার সঙ্গে ব্যাক-আপ ক্রিকেটারদের পরীক্ষার কথাও ভাবছেন বলে জানিয়েছেন ওয়াসিম। এরই মাঝে চারজন রিজার্ভ ক্রিকেটার-- বিলাল আসিফ, ইমরান বাট, মুসা খান ও মোহাম্মদ নওয়াজকে পরীক্ষার জন্য ডেকে পাঠিয়েছে পিসিবি, জানিয়েছে ক্রিকইনফো।
আর যেসব ক্রিকেটারের ফল পজিটিভ এসেছে, তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এরপর দুইদফা পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এলে তারাও ইংল্যান্ড যেতে পারবেন বলে আশা করছে পিসিবি।
প্রটোকল অনুযায়ী, ইংল্যান্ড পৌঁছানোর ২৪ ঘন্টার মাঝে আরেকবার পরীক্ষা করা হবে পাকিস্তান স্কোয়াড ও সাপোর্ট স্টাফের সদস্যদের। প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার আগে সব মিলিয়ে মোট ৫ বার পরীক্ষা করা হবে তাদের।
কভিড-১৯ এ এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এটি যে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে, সেটি আরেকবার বলেছেন পিসিবির প্রধান নির্বাহী, “সম্প্রতি সবচেয়ে ফিট অ্যাথলেট, যারা কোনও উপসর্গ দেখায়নি, তাদের পজিটিভ আসা প্রমাণ করে এই ভাইরাস কতোখানি ভয়ঙ্কর হতে পারে। এরই প্রেক্ষিতে পিসিবির পক্ষ থেকে আমি সবাইকে আবারও সরকারের পক্ষ থেকে বলা সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলবো, নিজেদের এবং আপনজনের সুরক্ষায়।”
ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি করে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলার কথা আছে পাকিস্তানের। এর আগে ৮ জুলাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে ইংল্যান্ড। এরই মাঝে কভিড-১৯ টেস্টের ফল নেগেটিভ আসা সাপেক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড ইংল্যান্ডে পৌঁছে ‘বায়ো-সিকিউর’ কন্ডিশনে প্রস্তুতি নিচ্ছে ওল্ড ট্রাফোর্ডে।