• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ইউর্গেন ক্লপ : বিশ্বাসে মেলে, মেলে তর্কেও

    ইউর্গেন ক্লপ : বিশ্বাসে মেলে, মেলে তর্কেও    

    লিভারপুলের ঢিলেঢালা জার্সিটা ট্র্যাকস্যুটের ওপর দিয়েই গায়ে চাপিয়ে দিয়েছেন। মাথার ক্যাপটাও উলটো করা। ডান বাহুতে লিভারপুলের মাফলার পেঁচিয়েছেন। রাতারাতি মেটাল গাই থেকে হয়ে গেছেন হিপহপ গাই। অ্যানফিল্ডের দ্যা কপের ওপর বানানো স্টেজে উঠলেন নাচতে নাচতে। অন্যকে জড়িয়ে ধরাতে বারণ আছে, সেসবের তোয়াক্কা আর করলেন না। কেনি ডালগ্লিশকে জড়িয়েই ধরলেন। প্রিমিয়ার লিগের সিইও রিচার্ড মাস্টার্স কর্পোরেট লোক। তার সঙ্গে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত মেলানো যায়, জড়িয়ে ধরা সম্ভব হলে হয়ত তাও করতেন ইউর্গেন ক্লপ। জার্মান এই ভদ্রলোকের বয়স ৫৩। তবে বেশ ভুষা, আচরণ কোনোকিছু দেখেই আপনার সেটা মনে হবে না।

    লিভারপুলের শিরোপা উদযাপনের মঞ্চে সবার আগে উঠেছিলেন ক্লপ। সেটা পুরোপুরি মানানসই। লিভারপুলের ৩০ বছরের আক্ষেপ ঘোচানোর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব তো তারই। ক্লপকে নিয়ে এখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই। গত এক বছর এক মাসে চ্যাম্পিয়নস লিগ, সুপার কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপ, প্রিমিয়ার লিগ- ৪টি হাতিঘোড়া শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি লিভারপুলকে। এই কোচের প্রশংসা না করে পারা যায় না।

    ক্লপ লিভারপুলকে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছেন। ‘বিলিভ’ শব্দটা লিভারপুলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্লোগান বলা যায়। ক্লপ যখন ইংল্যান্ডে এসেছেন ততোদিনে ইউনাইটেড উলটো পথে যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। ম্যানচেস্টারের অন্য ক্লাবের দাপট দেখেছেন ক্লপ। এরপর সেই দাপট গুঁড়িয়ে দিয়ে গৌরব এনে দিয়েছেন লিভারপুলকে।


    ক্লপের বয়স ৫৩। কিন্তু আদতে তিনি তরুণ। চিরসবুজ যাকে বলে। তার সঙ্গে এই প্রজন্মের তেমন ফারাক নেই। বরং এই প্রজন্মের নেতা হতে পারেন তিনি। তবে আগের প্রজন্মের ফারাক আছে তার। কিন্তু ক্লপ সেগুলোও শ্রদ্ধা করতে জানেন। একবার বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে তার বাবাকে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল ক্লপকে। “আমাদের যুগে আমরা এতো শত মাইল হেঁটে স্কুলে যেতাম”- বাপ-দাদার আমলের এসব গল্প এই প্রজন্মের জন্য মিম বানানোর উপাদেয় উপকরণ। কিন্তু ক্লপের জন্য ব্যাপারগুলো আলাদা। ক্লপ বলেছিলেন, “আমার বাবার আমলে তারা কয়েক মাইল হেঁটে প্রতিদিন যাতায়াত করতেন। তাদের শিক্ষা তাদের জীবন থেকে নেওয়া। সেই শিক্ষার সঙ্গে আমাদের জীবন-ধারার পার্থক্য আছে। তারা যা বলেন আর করেন, এর কোনো কিছুই ফেলনা নয়।”

    ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ডরা যদি তরুণ হন, ক্লপ যদি পরিণত বয়সের হন, আর তারও আগের আমলের লোকে যদি প্রৌড় হন- তাহলে ক্লপ এই তিন প্রজন্মের সঙ্গে সাম্যাবস্থায় থাকার উপায় বাতলে দিয়েছেন। ক্লপের উত্থানের পেছনে বড় অবদান আছে তার এই জীবন দর্শনের।

    ২০ বছর বয়সে সন্তানের বাবা হওয়ার পর বড় পরিবর্তন এসেছিল ক্লপের জীবনে। বাবা হওয়ার অনুভূতি হয়ত সবাইকেই বদলে দেয় কোনো না কোনোভাবে। ক্লপের জন্য সেই সময়টা ছিল সংগ্রামের। ফুটবলার ছিলেন, তবে সেই মাপের না। শুধু ফুটবল খেলে রুটি-রুজি জুটতো না। সিনেমার বড় বড় রিল টানার কাজ করতেন তিনি। আধুনিক ভাষায় ‘অড-জব’ বলে যাকে।

    বিবিসির ওই সাক্ষাৎকারেই ক্লপকে আরেকটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। সিনেমার রিল টানার কাজ করার সময় যদি তাকে বলা হত একদিন তিনি বড় কোচ হবেন, তাহলে কি সেই ভবিষ্যত বাণী বিশ্বাস করতেন?

    ক্লপের জবাব, “অবশ্যই”।

    “আমি যে একদিন কিছু একটা করব তা আমি জানতাম। সেটুকু বিশ্বাস না করলে আর এতোদূর আসতে পারতাম না।”

    ক্লপ মিরাকলে বিশ্বাস করেন না। আত্মবিশ্বাস তার মূল পুঁজি। আত্মবিশ্বাসের আবার ধরন আছে। আপনি যখন দেয়ালে ঠেকে গেছেন, তখন আত্মবিশ্বাসই কেবল আপনাকে ফেরাতে পারে। নইলে দুর্গম পথ আপনার পাড়ি দেওয়া হবে না। এক কোণায় জীর্ণ হয়ে পড়ে থাকবেন। আবার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আপনাকে ডোবাতেও পারে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কাল হয় কখন?


    লিভারপুল যে এবার লিগ জিতছে সেটা মোটামুটি গত ডিসেম্বর নাগাদই একরকম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। দিন যায়, ম্যাচ যায়- লিভারপুল একই গতিতে ছোটে। সাংবাদিকরাও একই প্রশ্ন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যান। শিরোপা কি তাহলে এবার লিভারপুলই জিতছে? ক্লপ বলেন, “না, গাণিতিক হিসাবে যতক্ষণ না চ্যাম্পিয়ন ততোক্ষণ পর্যন্ত লিগ জেতার পথে লিভারপুল আগায়নি।” আত্মবিশ্বাসের লাগাম কোথায় কখন কীভাবে টেনে ধরতে হয় সেটা ক্লপের জানা। মোটিভেশনাল স্পিচের যুগে ক্লপের সংবাদ সম্মেলন একেকটা ঐশীবাণী আপনার জন্য। লোকে বলে পৃথিবীতে দুই ধরনের লোক আছে। একদল ক্লপকে প্রকাশ্যে ভালোবাসে, আরেকদল ক্লপকে ভালোবাসে গোপনে।

    ২০১৫-তে মৌসুমের মাঝামঝি সময়ে লিভারপুলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ক্লপ। ততোদিনে জার্মান কোচ নাম কামিয়ে ফেলেছেন। তার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড বায়ার্ন মিউনিখের আধিপত্য ভেঙে দুইবার বুন্দেসলিগা জিতেছে। ক্লপ দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালেও। গেগেনপ্রেসিং তখন তার সত্ত্বা, তার পরিচয়। ইংলিশ ফুটবলে নিজের দর্শন প্রতিষ্ঠা করতে এসেছেন ক্লপ।

    ক্লপের জন্য লিভারপুল ‘স্পেশাল ক্লাব’। আর নিজেকে তিনি ঘোষণা করলেন ‘দ্য নরমাল ওয়ান’ হিসেবে। ক্লপের প্রথম সংবাদ সম্মেলন যা বোঝা গেল, ক্লপ একজন লিভারপুল ভক্ত। একজন ভক্ত এসেছেন কোচিং করাতে।  

    নভেম্বরে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে প্রথম ম্যাচ হারল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডের সেই রাতে প্রচন্ড মন খারাপ হয়েছিল ক্লপের। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই গ্যালারি ফাঁকা করে দিয়েছেন সমর্থকেরা। তার খেলোয়াড়রাও উদ্দীপনা হারিয়েছে। ক্লপ সেটা মানতে পারেননি।

    কয়েকদিন পর ওয়েস্টব্রমের সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র। এবার ২-২ গোলে। কিন্তু সমর্থকেরা মাঠ ছাড়েননি। ক্লপের মতে খেলোয়াড়রাও সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন ম্যাচে। ড্রটা লিভারপুলের জন্য হতাশারই ছিল। ম্যাচ শেষে পর খেলোয়াড়রা যখন মাঠ ছাড়ার ধান্ধা করছিলেন, ক্লপ তখন মাঠে ঢুকে খেলোয়াড়দের হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন দ্য কপের সামনে। সবাই মিলে হাত উঁচু করে সমর্থকদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিল লিভারপুল।

    ওয়েস্ট ব্রমের সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র করা কবে থেকে লিভারপুলের জন্য উদযাপন করার মতো ফল হলো? ইন্টারনেট সেদিন ভেঙেই পড়ে যেন পারলে! টিভি পান্ডিতরা ওই রাতেই ছুড়ে ফেলেছিলেন ক্লপকে। ক্লপের কথা হলো সমর্থকদের ধন্যবাদ দেওয়ার একটা উপায় মাত্র এটি। ক্রিস্টাল প্যালেসের সঙ্গে তাদের চলে যেতে দেখে দুঃখ পেয়েছিলেন তিনি, এবার তারা হাল ছাড়েননি- এই ধন্যবাদটুকু সমর্থকদের প্রাপ্য।

    ক্লপের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে ব্র্যাড পিটের মানিবল সিনেমার ভালো মিল আছে। মানে ওই একই চিত্রনাট্য আর কী। অবশ্য এখানে পিটের করা চরিত্র বিলি বিনের মতো নন ক্লপ, বরং ক্লপকে লিভারপুলে আনা হয়েছিল যেন বিন যে তত্ত্ব অনুসরণ করেছিলেন, সেটি খাটিয়ে- ডাটা অ্যানালাইসিস। লিভারপুলের মালিকপক্ষ ক্লপকে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে তেমন একটা উৎসাহী ছিলেন না। কিন্তু ইয়ান গ্রাহাম নামের এক ডাটা অ্যানালিস্ট তাদের ম্যাচের পর ম্যাচ হিসেব কষে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, ক্লপের ডর্টমুন্ড যে ম্যাচগুলো হেরেছে তাতে ক্লপের দোষ কমই ছিল। সুযোগও বেশি তার দলই তৈরি করেছিল। ইয়ান গ্রাহামের পরামর্শ আর ডাটার ওপর ভর করে লিভারপুল নিয়োগ দিয়েছিল ক্লপকে।

    ওই ডাটা অ্যানালাইসিসের জোরেই ক্লপ বেশ খানিকটা সময় পেয়েছেন লিভারপুলে। প্রথম মৌসুমে লিগে লিভারপুল শেষ করল অষ্টম হয়ে। ইউরোপা লিগের ফাইনালে সেভিয়ার বিপক্ষে এক গোলে এগিয়ে থেকেও ৩-১ গোলে হারল। কোনো কিছুই ক্লপের পক্ষে যায় না, কিন্তু ওইসব হারেও মনিমুক্তার অভাব হয় না। লিভারপুল সমর্থকেরা আশ্বস্ত হলেন দ্বিতীয় মৌসুমে, লিভারপুল চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করে নেওয়ার পর।  

    লিভারপুল ঠিক পথেই এগুচ্ছিল। কিন্তু রবিন হুড পদ্ধতিতে। বড় দলের সঙ্গে ভালোই করে লিভারপুল, ছোট দলের কাছে হোঁচট খায় নিয়মিত। টানা দুইবার তাই লিগে চতুর্থ তারা। লিভারপুলের অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রতি একটা আসক্তি আছে। ক্লপ প্রথম যেবার লিভারপুলকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে উঠলেন সেবারই ১১ বছর পর ফাইনালেও উঠে গেল লিভারপুল। এরপর রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ফাইনালে সেই বিখ্যাত হার। মোহামেদ সালাহ চোটে পড়লেন, লরিস ক্যারিয়াস দুই ভুল করলেন- লিভারপুলও শিরোপা দিয়ে এলো রিয়ালকে।

    ততোদিনে ক্লপ একটা দল দাঁড় কড়িয়ে ফেলেছেন। ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ড, অ্যান্ড্রু রবার্টসনরা এসেছেন, ভার্জিল ভ্যান ডাইকও মৌসুমের মাঝপথে দলে এসে রক্ষণ রাতারাতি বদলে দিয়েছেন। রিয়ালের কাছে হারের পর আসলেন অ্যালিসন। সালাহ, রবার্তো ফিরমিনো, সাদিও মানের মতো গড়পড়তা খেলোয়াড়রা তার আগেই বিশ্বমানের ফুটবলারে পরিণত হয়েছেন।

    সব ঠিকঠাক করেও সেবার লিভারপুল পুরো মৌসুমে এক ম্যাচ হেরেও সিটির চেয়ে এক পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে শেষ করলো দ্বিতীয় হয়ে। ক্লপ অবশ্য সেই হতাশা পুষিয়ে দিলেন, টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডের সেমিফাইনালের আগে ক্লপ লিভারপুল খেলোয়াড়দের একটা কথাই বলেছিলেন, “দেখো পুরো দুনিয়া জানে এটা সম্ভব না। আমাদের দলে সালাহ, মানেও নেই। কিন্তু আমি জানি এটা সম্ভব। এখন তোমরা যদি আমার সঙ্গে থাকো তাহলে মাঠে গিয়ে করে দেখাও।”

    অ্যানফিল্ড সে রাতে ম্যাজিক দেখিয়েছিল। লিভারপুল বার্সেলোনাকে বিদায় করে ফাইনালে উঠে গিয়ে পরে শিরোপাও জিতেছিল টটেনহামকে হারিয়ে। আগের মৌসুমে এতো চেষ্টার পরও একটুর জন্য শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের তৃপ্তি- দুটিই লিভারপুলকে দমিয়ে দিতে পারত। ঘটল উলটোটা। যা ঘটল সেটা ক্লপের বিশ্বাসও না, আত্মবিশ্বাসও না। কর্মফল।


    ৩০ বছরের আক্ষেপ ঘোচানোর পর লিভারপুলের শিরোপা নিশ্চিত হলো, ক্লপ সে রাতে কেঁদেই ফেললেন লাইভ টকশোতে। বললেন এই শিরোপা সবার জন্য। মার্চে প্রায় ছুঁয়ে ফেলা শিরোপা নিশ্চিত হতে লিভারপুলকে অপেক্ষা করতে হলো জুনের শেষ পর্যন্ত। আর সেই শিরোপা ছুঁয়ে দেখতে অপেক্ষা করতে হলো এরপরও প্রায় এক মাস।

    চেলসির বিপক্ষে মৌসুমের শেষ হোম ম্যাচে অ্যাডাম লালানাকে একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন ক্লপ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কথা রাখতে পারেননি। সেই দায় বোধ হয় ঘোচালেন স্টেজে উঠে। একেকজনের নাম ঘোষণা হয়, ক্লপ দুই হাত উঁচিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে ওঠেন মঞ্চে তাদের বরণ করে নিতে, প্রত্যেককে যেন কুর্ণিশ করেন। জর্ডান হেন্ডারসন শিরোপা উঁচিয়ে ধরার পর একে একে লিভারপুলের খেলোয়াড়রা শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন। ক্লপ অপেক্ষা করেন লালানার জন্য। লালানা শিরোপা ধরতে যান, ক্লপ এগিয়ে আসেন ভিড়ের ভেতর থেকে। দুইজন মিলে একসঙ্গে উঁচিয়ে ধরেন শিরোপা। তার আগ পর্যন্ত শিরোপা ছুঁয়ে দেখেন না ক্লপ। এর নাম নিষ্ঠা।

    আক্ষেপ ভোলার মুহুর্তটা ফাঁকা মাঠেই কাটাতে হয় লিভারপুলকে। সময়টাই তো এমন! কারও হাত নেই তাতে। অ্যানফিল্ডে নিয়িমিত যাতায়াত যাদের, সেই সমর্থকরা নিশ্চিতভাবেই জীবনের সবচেয়ে বড় উপলক্ষ্য মিস করে গেছেন। তারা যত না মিস করেছেন, তার চেয়ে বেশি তাদের অভাব টের পেয়েছেন ক্লপই। যে লোক ওয়েস্টব্রমের সঙ্গে ড্র করার পর সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেন না, তিনি শিরোপা উঁচিয়ে রাতে সমর্থকদের কুর্নিশ করতেন হয়ত।

    ক্লপ সমর্থকদের স্বপ্ন দেখান, ঘটা করে  উদযাপনের স্বপ্ন। ‘বা**’ বলে রাগ ঝাড়েন ভাইরাসের ওপর। আরেকবার মনে করিয়ে দেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে সংশয়বাদীদের দল থেকে সরে আসতে বলেছিলেন তিনি। এই শিরোপা বিশ্বাসীদের।

    বিশ্বাসে মেলায় বস্তু- এই প্রবাদের প্রথম লাইনের সঙ্গে একমত ক্লপ। তর্কে বহুদূর- সেটা মানেন না তিনি। তর্কাতর্কি করেই বিশ্বাসের আরাধ্য বস্তু জিতে নিতে হয়- অ্যানফিল্ডের আতশবাজি আর এলইডি লাইটের ঝলকানিতে ক্লপ সেই বার্তা দিয়ে যান।

    লিভারপুলের রাস্তাঘাটে ক্লপের টিফো শোভা পায় অনেকদিন হলো। বিটলসের শহরে ক্লপ এসেছিলেন হেভি মেটাল আবহ নিয়ে। সময়ের সঙ্গে তিনি আরেক জন লেননে পরিণত হয়েছেন।