মুশফিকের আফসোস, 'ফিফটি-সেঞ্চুরি অনেককিছু মিস হয়ে যাচ্ছে'
ইনডোরে ব্যাটিং, খোলা মাঠে রানিং-- মিরপুরে কদিন বেশ সরব ছিল মুশফিকুর রহিমের উপস্থিতি। টেস্ট থেকে উইকেটকিপিং ছাড়লেও সেটির অনুশীলনও বাদ রাখেননি তিনি, সামনে কী আসছে, সেটি তো জানেন না। আশা করছেন, শীঘ্রই ব্যক্তিগত অনুশীলনের পরের ধাপে গ্রুপ করে অনুশীলনে যেতে পারবেন তারা। বিসিবির অধীনে কয়েকদিনের অনুশীলনে তার ভাল লাগা আছে। তবে টিভিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখে আছে আফসোসও। না জানি ফিফটি, সেঞ্চুরির সাথে মিস হয়ে যাচ্ছে কতো কিছু!
কভিড-১৯ মহামারির পর ইংল্যান্ড খেলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে, এরপর তাদের সিরিজ আছে আয়ারল্যান্ড, পাকিস্তানের সঙ্গে। ভারত আইপিএল নিয়ে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। অস্ট্রেলিয়া তাদের গ্রীষ্মের সূচির সঙ্গে ঘোষণা করেছে বিগব্যাশের সূচিও। নিউজিল্যান্ডের অনুশীলন শুরু হয়েছে, আসন্ন শীতের মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হবে তাদের। শ্রীলঙ্কা প্রায় উঠে পড়ে লেগেছে সিরিজ আয়োজনে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যাপার একটু অন্যরকম।
মুশফিক সেটি বুঝতে পারছেন ভালভাবেই, তবে আশাবাদী তিনি, “এটা আসলে আমাদের হাতে নেই, ফলে চিন্তা করাটা বোকামোর কাজ হবে। সবার জন্যই কঠিন ছিল। বাসায় থেকে যতখানি পেরেছি যাতে ফিটনেস নিয়ে কাজ করা যায়। অবশ্যই আমার জীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম, চার মাস লকডাউন দেখা। বিসিবিকে অসংখ্য ধন্যবাদ, তারা এই সুযোগ করে দিয়েছেন। বিশেষ করে অপারেশনস কমিটিকে, তারা যেভাবে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যে কদিনই করেছি আমরা অনুশীলন, সেটা খুবই ভাল ছিল, সার্থক ছিল।
“আর আশা করি ইনশাআল্লাহ, বিশ্ব যেভাবে এগুচ্ছে, ম্যাচ শুরু হচ্ছে, হয়তো অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের অবস্থা একটু আলাদা। তবে পরিস্থিতি যদি উন্নত হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ ঈদের পর আমরা যেন একসঙ্গে দল হিসেবে অনুশীলন শুরু করতে পারি।
ইনডোরে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে মুশফিকের আলোচনা, শনিবার মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে/বিসিবি
১৯ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই, আলাদা করে দেশের প্রায় ৫টি ভেন্যুতে ১১ জন ক্রিকেটারকে অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল বিসিবি। মুশফিক ছিলেন তাদেরই একজন। নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন তিনি, “যে কদিন করেছি, খুবই ভাল ছিল। ইনডোরে করাটা কঠিন। তো চাচ্ছিলাম যাতে রোদের ভেতর খোলা মাঠে এসে রানিংটা করা যায়, ফিটনেস নিয়ে কাজ করা যায়। তার সঙ্গে স্কিলওয়ার্ক। সেটা হয়েছে।”
এতদিন ঘরে বসে ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাকে, ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাঠের ব্যবস্থাও করতে চেয়েছিলেন তিনি। এর আগে বিসিবিকেও অনুরোধ করেছিলেন অনুশীলনের সুযোগ করে দিতে। তবে তখন বিসিবি রাজি হয়নি, সবকিছু প্রস্তুত করেই মুশফিকদের অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তারা। শুরুতে অবশ্য মুশফিক একটু দ্বিধা-দ্বন্দ্বেই ভুগেছিলেন, “আমাকে বললে প্রথম দিকে কনফিউজড ছিলাম, ভয় লাগছিল, যেহেতু মিরপুরের আশেপাশে সবই প্রায় রেড-জোন। তবে এখানে আসার পর থেকে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, কারণ এখানে এতো সুন্দর, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। যারা আমার সঙ্গে ছিল, তারাও একমত হবে। হয়তো এরপর ১৫-২০ না হলেও ২-৪-৫ জন হিসেবে করতে পারি।”
তবে নিজের আফসোসটা লুকাতে পারেননি তিনি, “খেলা দেখলে আসলে আফসোস লাগে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সঙ্গে খেলাটাই দেখা হয়। একটু হলেও খারাপ লাগে। হয়তো ৫০-১০০, অনেককিছু মিস হয়ে যাচ্ছে। এখন টিভিতে খেলা দেখে কীভাবে মানসিক দিক দিয়ে কীভাবে প্রস্তুত থাকা যায়, সেটাই করছি। নতুন নিয়ম শেখার চেষ্টা করছি। আশা করছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরলে যাতে আমরা আবারও ফর্মে ফিরতে পারি।”
আপাতত নিজেদের হাতে যা আছে, সেটা নিয়েই ভাবতে চান তিনি, “আমাদের হাতে নেই (এসব)। আমরা ক্রিকেটার হিসেবে কীভাবে ফিটনেস ধরে রাখতে পারি, স্কিলটা ধরে রাখতে পারি, আর মানসিক দিক দিয়ে ফ্রেশ থাকার চেষ্টা করতে পারি, এবং শক্ত থাকতে পারি, এগুলো করছি। নিয়মিত কোচের সাথে সেশন করছি, পরিবারের সঙ্গেও ভাল সময় গেছে। মুখিয়ে আছি ইনশাল্লাহ মাঠের মানুষ কবে মাঠে ফিরতে পারব।”