• মেসির দলবদল
  • " />

     

    যে কারণে বার্সেলোনা ছাড়তে চেয়েছিলেন মেসি

    যে কারণে বার্সেলোনা ছাড়তে চেয়েছিলেন মেসি    

    ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আপাতত বার্সেলোনায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লিওনেল মেসি। মূলত নিজের ‘প্রিয় ক্লাবকে আইনি লড়াইয়ে জড়াতে না চাওয়াতেই’ শেষ পর্যন্ত ইউটার্ন নিয়েছেন তিনি। গোল ডট.কমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বার্সেলোনা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ এবং তার বোর্ডকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মেসি। বর্তমান সভাপতি এবং বোর্ডকে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই ফুটবলার।

    গোলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে গত মৌসুম জুড়েই বারবার বার্তোমেউকে তার ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন মেসি, “আমি ক্লাব এবং সভাপতিকে বলেছি যে, আমি যেতে চাই। আমি তাকে সারা বছর এটা বলে এসেছি। আমার মনে হচ্ছিল এখন সরে যাওয়াটাই ভালো।”

    “আমার মনে হয়েছিল, ক্লাবের এখন তরুণ, নতুন খেলোয়াড় দরকার। আমি ভেবেছিলাম বার্সেলোনায় আমার সময় শেষ। তবে এটা ভাবতেও আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল, কারণ আমি সবসময়ই বলে এসেছি, বার্সেলোনায় আমি ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই।”

    “এই বছরটি অনেক কঠিন ছিল। আমি অনুশীলনে, খেলায় এবং ড্রেসিং রুমে অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমার জন্য সবকিছুই কঠিন হয়ে উঠছিল, আর তখনই একটা সময় আমি নতুন লক্ষ্য খোঁজার সিদ্ধান্ত নিই।”

    “চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্নের সঙ্গে হারের পর এই সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি অনেক আগে থেকেই এই বিষয়ে ভাবছিলাম। আমি সভাপতিকেও বলেছি, তিনি সবসময়ই বলেছেন মৌসুম শেষে আমি যা করতে চাই, তা করতে পারব। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি তার কথা রাখেননি।”

    ক্লাবকে বিপদে ফেলতে নয়, বরং ক্লাব সভাপতিকে তার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মনে করিয়ে দিতেই ব্যুরোফ্যাক্স পাঠিয়েছিলেন মেসি, “আমি পুরো বছর জুড়েই সভাপতিকে বলছিলাম যে, আমি ক্লাব ছাড়তে চাই। আমার ক্যারিয়ারে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণের সময় এসে গেছে। তবে সে আমাকে সময় বলেছে, ‘আমরা কথা বলব, তবে এখন নয়, এটা-সেটা। সভাপতির কথা শুনে তখন বুঝতেই পারিনি তিনি আসলে কী বলতে চেয়েছেন।”

    “আমি ক্লাব ছাড়তে চাই, এই বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার জন্যই ব্যুরোফ্যাক্স পাঠিয়েছিলাম। আর আমি ফ্রি-তে ক্লাব ছাড়তে পারি এবং চাইলে আরও এক বছর থাকার সুযোগ আছে। তবে সেই সুযোগ না নিয়ে বরং এখনই ক্লাব ছাড়তে চাই, এটাই ব্যুরোফ্যাক্সে উল্লেখ করা হয়েছিল।”

    “এটা শুধু আমার সিদ্ধান্তটিকে আনুষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কোনো সমস্যা তৈরি অথবা ক্লাবের বিরুদ্ধে অবস্থান জানানোর জন্য নয়। আমি যদি ব্যুরোফ্যাক্স না পাঠাতাম, তার মানে হত যে আমি ক্লাবে আরও এক বছর থাকতে চাই। তারা বলছে যে আমি ১০ জুনের আগেই জানাইনি। তবে আমি আবারও বলছি, তখন আমরা সব প্রতিযোগিতায় খেলার মাঝে ছিলাম, সেটা সঠিক সময় ছিল না।”

    বায়ার্নের বিপক্ষে হার নয়, বরং ক্লাব সভাপতি বার্তোমেউ এবং তার বোর্ডের সঠিক পরিকল্পনার অভাবই মেসিকে বার্সেলোনা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে, “অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অনেক কঠিন ছিল। এটা বায়ার্ন ম্যাচের ফলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আসেনি, অনেকগুলো কারণেই এই সিদ্ধান্তে এসেছিলাম। আমি সবসময়ই বলেছি আমি এখানেই থাকতে চাই এবং ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। আমি একটি উইনিং প্রজেক্ট চেয়েছিলাম, ক্লাবের হয়ে আরও অনেক শিরোপা জিতে বার্সেলোনার কিংবদন্তিকে প্রসারিত করতে চেয়েছিলাম।”

    “আর সত্যি বলতে এখানে দীর্ঘ সময় ধরে কোনো প্রজেক্ট নেই। তারা শুধু কোনো সংকট তৈরি হলে সেটা ঢাকার চেষ্টা করে। আমি আগেই বলেছি, আমি সবসময়ই আমার পরিবার এবং ক্লাবের কল্যাণের কথা ভাবি।”