• বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ২০২০
  • " />

     

    নেট সেশন : পেসারদের দাপট নাকি ব্যাটসম্যানদের ঘুরে দাঁড়ানোর দিন?

    নেট সেশন : পেসারদের দাপট নাকি ব্যাটসম্যানদের ঘুরে দাঁড়ানোর দিন?    

    প্রেসিডেন্টস কাপ ফাইনাল, ২০২০
    নাজমুল একাদশ - মাহমুদউল্লাহ একাদশ 

    কবে, কখন
    ২৫ অক্টোবর, ২০২০
    বাংলাদেশ সময় ১.৩০ টা (১৩৩০)


    ‘উই আর ব্যাক… ইন ক্রিকেট’, বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের প্রথমদিন থেকেই শের-ই-বাংলায় ঝুলছে এমন ব্যানার। সেই প্রত্যাবর্তনের ‘শেষ’টা হচ্ছে রবিবার। এমনিতে শুক্রবারই হওয়ার কথা ছিল ফাইনাল, খারাপ আবহাওয়ায় সেটি পিছিয়ে গেছে। আগে থেকেই প্রতিটি ম্যাচেই ছিল রিজার্ভ ডে, সে হিসেবে ফাইনাল চলে গেছে রিজার্ভ ডে-তেই। 

    ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর তামিম ইকবালের ওপর আলাদা নজর ছিল, শেষ ম্যাচে নাগালে থাকা ম্যাচ হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তার দলকে। বেশ কোনঠাসা অবস্থা থেকে ফিরে এসে ফাইনালে উঠেছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। তাদের প্রতিপক্ষ নাজমুল একাদশকে বলতে হবে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ধারাবাহিক, গ্রুপপর্বের পারফরম্যান্স বিবেচনায় আনলে ফেভারিট তকমাও দিতে হবে তাদেরকেই। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৬৪ রানের স্কোরটাও তাদেরই। 

    এমনিতে ব্যাটসম্যানদের সেই অর্থে জ্বলে না ওঠা আর পেসারদের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স-- এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের হাইলাইটস। প্রথম ৬ ম্যাচে শীর্ষ উইকেটসংগ্রাহকের তালিকায় প্রথম ৬ জনই পেসার, প্রথম ১০ জনের ৮ জনই তাই। ব্যাটিংয়ে একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেছেন মুশফিকুর রহিম, সবচেয়ে বেশি রানও তারই। যদিও গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে চোটে পড়ে ফিল্ডিং থেকে উঠে গিয়েছিলেন তিনি, তবে সেরে ওঠার জন্য বাড়তি সময়ও পেয়েছেন এরপর ফাইনাল পিছিয়ে যাওয়াতে। 

    ব্যাটসম্যানদের জ্বলে না ওঠার পেছনে একটু কঠিন উইকেটের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরতির কথা উল্লেখ করেছিলেন জাতীয় দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তবে টুর্নামেন্ট থেকে একমাত্র কোনো দিক আলাদা করলে পেসারদের পারফরম্যান্সকে করবেন, বলেছেন এমনও। পেসারদের নিয়ে রীতিমতো রোমাঞ্চিত ছিলেন তিনি। 

    ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা মাঠে ফেরার, দীর্ঘদিন পর প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্রিকেট খেলার। নাজমুল হোসেন শান্ত যেমন বলছেন, টুর্নামেন্ট থেকে পাওয়া ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই ফাইনালে যাবে তার দল, “পুরো টুর্নামেন্টে অনেক উপভোগ করেছি, অনেক ইতিবাচক দিক ছিলো। তার মধ্যে আমার মনে হয় যে মুশফিক ভাইয়ের একটা ইনিংস, আফিফের একটা ইনিংস। পাশাপাশি তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান শুক্কুর ভাইয়ের কিছু ভালো ভালো ইনিংস ছিলো। আর বোলিং ডিপার্টমেন্টে যদি চিন্তা করি তাসকিন ভাই, আল-আমিন ভাই, নাঈম, নাসুম ভাই সবাই ভালো বোলিং করেছেন। ফলে নিজেদের মধ্যে একটা ‘হেলদি কম্পিটিশিন’ও হচ্ছে, সবাই উপভোগ করছে। সব মিলিয়ে অনেক ইতিবাচক দিক ছিলো, আশা করছি ফাইনালেও আমরা একটা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে যাবো।”

    “যদিও এটা প্রস্তুতিমূলক একটা টুর্নামেন্ট, কিন্তু আমার মনে হয় আমরা প্রতিটি ক্রিকেটারই খুব সিরিয়াসলি খেলেছি এবং খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েই আমরা খেলেছি। সবার ভেতরেই ওই প্রতিযোগিতা ছিলো যেন আমরা এক জন আরেক জনের চেয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারি, দল হিসেবে ভালো পারফর্ম করতে পারি,” বলেছেন ফাইনালের আরেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। 

     

    রঙ্গমঞ্চ
    শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর

    টুর্নামেন্টের মাঝপথে চট্টগ্রাম থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল কিউরেটরকে। এমনিতে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় নিয়মিতই, উইকেটে অবশ্য শেষদিকে ব্যাটে বল আসছিল বেশ ভালভাবেই। এখন পর্যন্ত ২৬৪ রানের বেশি ওঠেনি, শুরুর দিকে টানা টসে জিতে ফিল্ডিং নিলেও পরে সেই ক্রমটা ভেঙেছিল। টানা বৃষ্টির পর উইকেটের আচরণ হয়ে উঠলে পারে আরেকটু বেশি ‘ট্রিকি’।  

    যাদের ওপর চোখ

    আল-আমিন হোসেন / রুবেল হোসেন 

    ডমিঙ্গো তাসকিনকে নিয়ে উচ্ছ্বাস জানিয়েছিলেন আগেও, ফাইনালের আগেও বেড়েছে সেটি। বেশ ফিট অবস্থায় আছেন, বলের গতির সঙ্গে ভ্যারিয়েশনের দিকেও উন্নতি তার চোখে পড়ার মতোই। ফাইনালে তার ওপর নজর থাকবেই, তবে তার দলের আল-আমিন হোসেনও কিন্তু উজ্জ্বল। বেশ আঁটসাঁট বোলিং করেছেন, বোলারদের মাঝে সবচেয়ে কম ইকোনমি রেট তারই (৩.৫৬), যারা শীর্ষ দশে আছেন তাদের মাঝে। উইকেটও নিয়েছেন ১৭.২৯ গড়ে ৭টি। চোখ থাকবে রুবেলের ওপরও। উইকেটসংখ্যায় ফাইনালে খেলতে যাওয়া বোলারদের মাঝে এগিয়ে তিনি, ৪ ম্যাচে ১০টি নিয়েছেন ১৩.৪ গড়ে। 

    লিটন দাস

    ১১, ০, ২৭, ৫-- লিটন দাসের এখন পর্যন্ত স্কোর। কোভিড-১৯ এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া বাংলাদেশ ওপেনার এখনও তেমন কোনও ফর্ম খুঁজে পাননি এ টুর্নামেন্টে। ফাইনালে কী করবেন? 


    সম্ভাব্য একাদশ

    টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী ১২ জন করে খেলতে পারবেন প্রতি ম্যাচে একটি দলে, ১১ জন করে ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ের নিয়ম মেনে। শেষ ম্যাচে নাজমুল একাদশের বাইরে ছিলেন সাইফ হাসান, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও নাঈম হাসান। মাহমুদউল্লাহ একাদশের বাইরে ছিলেন মুমিনুল হক, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও সুমন খান। বিপ্লব চোটে পড়েছেন, ফলে ফাইনালেও তার খেলার সম্ভাবনা কম। 


    সংখ্যার খেলা 

    • গ্রুপপর্বে নাজমুল একাদশের কাছে দুটি ম্যাচই হেরেছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ 
    • ১৭, ০, ১৬, ৮-- ৪ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ একাদশের ওপেনিং জুটি। 

    তারা বলেন 

    “এটা তো আসলে ফাইনাল ম্যাচ। সেটা যে লেভেলেরই হোক না কেন ফাইনাল তো ফাইনালই। আমরা ফাইনাল নিয়ে অতটা চিন্তিত না। কারণ এর আগে আমরা অনেক ফাইনাল খেলেছি। আমাদের স্বাভাবিক প্রস্তুতি এর আগে যেভাবে ছিল এর আগের ম্যাচগুলোতে, সেভাবেই আমাদের প্রস্তুতি নেয়া আছে। আমরা যদি সবার ভূমিকা বুঝি এবং সবার পারফরম্যান্সটা সবাই দেখাতে পারি তাহলে ইনশাল্লাহ ইতিবাচক ফলাফলই আসবে।”

    রুবেল হোসেন 

    “ফাইনালে ইনশাআল্লাহ লক্ষ্য থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। কারণ আমাদের দল চারটার মধ্যে তিনটায় জিতেছে। আর সবাই অনেক এফোর্ট দিচ্ছে এবং অনেক পরিশ্রম করছে। মাঠে আমরা সবাই ফিল্ডিং বলেন, ব্যাটিং বলেন সবাই সবার জায়গা থেকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তো চেষ্টা থাকবে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।

    তাসকিন আহমেদ