• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    ঢাকার পর খুলনাকে নিয়ে ছেলেখেলা করলো চট্টগ্রাম

    ঢাকার পর খুলনাকে নিয়ে ছেলেখেলা করলো চট্টগ্রাম    

    জেমকন খুলনা ৮৬ অল-আউট, ১৭.৫ ওভার (ইমরুল ২১, আরিফুল ১৫, জহুরুল ১৪, মোস্তাফিজ ৪/৫, নাহিদুল ২/১৫, তাইজুল ২/৩০) 
    গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৮৭-১, ১৩.৪ ওভার (লিটন ৫৩*, সৌম্য ২৬)
    চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে জয়ী 


    আগেরদিন বেক্সিমকো ঢাকা, এদিন জেমকন খুলনা। দুই দলের বিপক্ষে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের ফর্মুলা থাকলো একই-- আগে ৯০-এর নিচে গুটিয়ে দেওয়া, এরপর দুই ওপেনারের একজন ঝড় তুলবেন, আরেকজন তাকে সঙ্গ দিয়ে যাবেন, দুই ওপেনারের যার স্ট্রাইক রেট একটু কম, তিনি ফিরবেন, তবে চট্টগ্রাম ম্যাচ শেষ করবে আগেভাগেই। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ যে সময়ে শেষ করলো চট্টগ্রাম, (রান-রেটের হিসাব-নিকাশ ছাড়া) সময়ের বোনাস থাকলে তাদেরকে বাড়তি আরেকটি ম্যাচই খেলতে দেওয়া উচিত!

    ঢাকা করেছিল ৮৮, খুলনা করতে পারলো এদিন আরও ২ রান কম। ঢাকার হয়ে নাঈম শেখ একাই করেছিলেন ৪০, তবে খুলনা ব্যর্থ সম্মিলিতভাবেই। ইমরুল কায়েস ২১, জহুরুল ইসলাম ১৪, আরিফুল হক ১৫, শামিম হোসেন ১১-- চারজন দুই অঙ্ক ছুঁলেও ইনিংস বড় করা হয়নি কারোরই। এর মাঝে আরিফুল ব্যাটিং করেছেন ৫০ স্ট্রাইক রেটে, সেটিই হয়তো বলে দেয়, কী পরিমাণে ভুগেছে খুলনা। শেষদিকে মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিং ফিগার দাঁড়িয়েছিল এমন, ৩.৫-০-৫-৪! দুই স্পিনার নাহিদুল ইসলাম ও তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন দুটি করে উইকেট, খুলনার বাকি দুজন হয়েছেন রান-আউট।

    টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়া চট্টগ্রাম প্রথম ওভারেই পেয়েছিল ব্রেকথ্রু, ওপেনিংয়ে নামা সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান-আউট হয়েছিলেন এনামুল হক বিজয়। ইমরুল এরপর তিনটি বাউন্ডারি মেরেছেন, তবে একটু পরই ওপাশে নেমেছে ধস। নাহিদুলের বলে আলগা শটে ক্যাচ তুলেছেন সাকিব, ২ বল পর এলবিডব্লিউ মাহমুদউল্লাহ। পাওয়ারপ্লেতে খুলনা তুলেছে ৩১ রান। 
     


    মোস্তাফিজুর রহমান ৩.৫-০-৫-৪


    জহুরুল প্রথম ১০ বলে ৪ রান করার পর শেকল ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন, তাইজুলকে চার-ছয় মেরে। তবে সে ওভারেই স্টাম্পড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। তাইজুল পরের ওভারে এসে ফিরিয়েছেন্ন ইমরুলকেও, স্লগ করতে গিয়ে শুধু আকাশেই তুলতে পেরেছেন ইমরুল। এরপর তাইজুলকে চার-ছয় মেরে আগ্রাসন দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন শামিম হোসেন, তাকে ফিরতে হয়েছে মোস্তাফিজের বলে মিসটাইমিংয়ে ক্যাচ তুলে। শহিদুল ইসলাম এরপর ফিরেছেন রান-আউট হয়ে, প্রায় অর্ধেক ক্রিজে থাকতেই ব্যাটিং-প্রান্তে ভেঙেছে স্টাম্প। তবুও অন-ফিল্ড আম্পায়ারকে যেতে হয়ে টিভি আম্পায়ারের কাছে, কারণ, কে আউট হয়েছেন, সেটি যে নিশ্চিত নয়! 

    ৫ ওভার বাকি থাকতে ৪ উইকেট বাকি নিয়ে ৮০ রান, মোটামুটি একটা স্কোর দাঁড় করাতে এদিন আরিফুলকে করতে হতো প্রথম ম্যাচের মতো দুর্দান্ত কিছু। তবে মোস্তাফিজ সে সুযোগ দিলেন না। পরপর দুই ওভারে এসে নিলেন ৩ উইকেট, সেই ১১ বলে তিনি দিয়েছেন ২ রান। রিশাদের পর আরিফুল ও আল-আমিন-- তিনজনই দিয়েছেন ক্যাচ। 

    লিটন-সৌম্য এরপর ব্যাটিং করেছেন আগেরদিনের ফর্মুলাতেই, তবে তাদের ভূমিকাটাই শুধু বদলে গেছে। এদিন বেশি আগ্রাসী ছিলেন লিটন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হাসান মাহমুদকে টানা ৪টি চার মেরেছেন লিটন-- পুল করে মিডউইকেট দিয়ে, কাট করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে, এরপরেরটা ড্রাইভ করে পয়েন্ট দিয়ে, শেষটা কাভার দিয়ে। খুলনার যদি অলৌকিকের আশা থাকে, তাহলে বোধহয় সেটি শেষ ওখানেই। 

    ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও একপ্রান্তে ওপেনিংয়ে এসেছিলেন সাকিব, তবে লাভ হয়নি তাতে। তার প্রথম বলেই চার মেরে নিজের মনোভাবটা বুঝিয়েছিলেন লিটন। পাওয়ারপ্লেতে ৩৯ রান তোলার পরও রানতাড়ায় গতিটা একই রেখেছে চট্টগ্রাম, ১৪ রান বাকি থাকতে সৌম্যর উইকেটটাই যা হয়ে থেকেছে চাঁদের কলঙ্ক হিসেবে। মাহমুদউল্লাহকে কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি করেছেন ২৯ বলে ২৬, ৪টি চারে। 

    অন্যদিকে লিটন অবশ্য ঠিকই পেয়েছেন ফিফটি, ৪২ বলে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৬ বলে ৫৩ রানে, মেরেছেন ৯টি চার। ৮৭ রান করতে গাজী গ্রুপ ছয় মারেনি একটিও। 

    তবে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে ছয় দিয়ে কিইবা যায় আসে আর!