• ইংল্যান্ডের ভারত সফর
  • " />

     

    ক্ষ্যাপাটে আহমেদাবাদে দুদিনেই ভারতের কাছে শেষ ইংল্যান্ড

    ক্ষ্যাপাটে আহমেদাবাদে দুদিনেই ভারতের কাছে শেষ ইংল্যান্ড    

    তৃতীয় টেস্ট (দিবা-রাত্রি), আহমেদাবাদ
    ইংল্যান্ড ১১২ (ক্রলি ৫৩, আক্সার ৬/৩৮, আশ্বিন ৩/৩৬) ও ৮১ (আক্সার ৫/৩২, আশ্বিন ৪/৪৮)
    ভারত ১৪৫ (রোহিত ৬৬, রুট ৫/৮, লিচ ৪/৫৪) ও ৪৯/০ 
    ভারত ১০ উইকেটে জয়ী


    আহমেদাবাদের এ টেস্টকে কী বলবেন? এই দিনটাকে? এই উইকেটকে? এক কথা বলা যায়-- ক্ষ্যাপাটে। 

    সব মিলিয়ে ১৭ উইকেট পড়েছে এ দিন, সবকটিই নিয়েছেন স্পিনাররা। আক্সার প্যাটেল দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫টি, ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে পেয়েছেন প্রথমবারের মতো ১০ উইকেট। রবি আশ্বিন চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে পূর্ণ করেছেন টেস্টে ৪০০ উইকেট, দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসেবে। জো রুট প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো নিয়েছেন ৫ উইকেট, তাও আবার মাত্র ৮ রানে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ক্ষ্যাপাটে উইকেটে দ্বিতীয় দিনই শেষ হয়ে গেছে ভারত-ইংল্যান্ডের তৃতীয় টেস্ট, যেখানে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতে সিরিজে এগিয়ে গেছে ভারত। 

    ৯৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করা ভারতের স্কোর একসময় ছিল ১১৫ রানে ৪ উইকেট, জ্যাক লিচের বলে এরপর এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন রোহিত শর্মা। এরপরই শুরু জো রুটের ঝলক। ঋষভ পান্টের কট-বিহাইন্ড দিয়ে শুরু, জাসপ্রিত বুমরাহর এলবিডব্লিউ দিয়ে শেষ! রুট ফিরিয়ে আনলেন যেন ২০০৪ সালে মুম্বাইয়ে মাইকেল ক্লার্কের স্মৃতি, যার তোপে পড়ে ১৮২ রানে ৪ উইকেট থেকে ২০৫ রানেই সেবার অল-আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। তবে সেবারও ক্লার্কের ঝলকেই শেষ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার সুখস্মৃতি, এবার ইংল্যান্ডেরও হলো তাই। 
     


    নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করা ইংল্যান্ড ১১২ রানে গুটিয়ে গিয়ে যেন শেষ দেখে ফেলেছিল প্রথম দিনই, রুটের সঙ্গে জ্যাক লিচ তাদেরকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন বেশ ভালভাবেই। মাত্র ৩২ রানের লিড নিতে পেরেছিল প্রথম ইনিংসে ভারত। তবে যে উইকেটে রুট ৫ উইকেট নেন, সেখানে ভারতের স্বীকৃত স্পিনাররা কেমন করবেন, সে শঙ্কা ইংল্যান্ডের নিশ্চয়ই ছিল। এরপর যা হলো, সেটি এক কথায় হুড়মুড় করে ধসে পড়া। 

    আক্সার প্যাটেল করতে এলেন প্রথম ওভার, প্রথম বলেই বোল্ড জ্যাক ক্রলি। এরপর জনি বেইরস্টো ঠিক পরের বলেই প্রায় ফিরে গিয়েছিলেন, টিভি আম্পায়ারের লম্বা সময় নিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি, তবে সে পর্যন্তই। ঠিক পরের বলেই বোল্ড হয়ে পেয়ার পেয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। এরপর আক্সারের শিকার হয়েছেন ডম সিবলি। 
     


    বেন স্টোকস একটু চড়াও হতে চেয়েছিলেন, আশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। একটু পর একই পরিণতি রুটেরও, বোলারটাই শুধু আলাদা। প্যাটেল ও আশ্বিন মিলে করেছেন ভারতের টানা ৩০ ওভার, এর মাঝেই শেষ ইংল্যান্ডের ৯ জন ব্যাটসম্যান। ওলি পোপকে বোল্ড করার পর জফরা আর্চারকে এলবিডব্লিউ করে ৪০০ উইকেট হয়ে গেছে আশ্বিনের। ৩১তম ওভারে প্রথমবারের মতো এসেছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর, জেমস অ্যান্ডারসনকে এজড করতে তার লেগেছে ৪ বল। 

    ৪৯ রানের লক্ষ্য, ভারতকে আটকাতে মিরাকলের চেয়েও বেশি কিছু প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। ডিনারের আগের দুই ওভারে তেমন কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। গোলাপি বল, ফ্লাডলাইট ভেবে তিন পেসার খেলানো ইংল্যান্ডের হয়ে বোলিং ওপেন করতে এসেছিলেন রুট, এই টেস্টের ক্ষ্যাপাটেপনার আরেকটি উদাহরণ হতে পারে সেটি। 

    ডিনারের পর রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল সময় নেননি বেশি, ৮ম ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে ভারত। আহমেদাবাদ হয়ে গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বলের হিসেবে সংক্ষিপ্ততম টেস্ট। 

    এই হারের পর আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দৌড় থেকেও ছিটকে গেছে ইংল্যান্ড। ৪ মার্চ থেকে একই ভেন্যুতে শুরু পরের টেস্টে অন্তত ড্র (সিরিজের ফল ২-১ বা ৩-১) করলে ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গী হবে ভারত। আর সেটি জিতে সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করতে পারলে ফাইনাল খেলবে অস্ট্রেলিয়া।